নেই দুটি হাত, মুখ দিয়ে লিখেই প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অদম্য শিক্ষার্থী বাহার উদ্দিন রায়হান।

বুধবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিত পঞ্চম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েশনের সনদ গ্রহণ করেছেন তিনি। সমাবর্তনের গাউন-টুপি পরে উচ্ছ্বসিত রায়হান। তার দুর্দান্ত ইচ্ছাশক্তিতে মুগ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

বাহার উদ্দিন রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মৃত বশির উদ্দিনের একমাত্র সন্তান। গত বছরে বিয়ের পিঁড়িতেও বসেছেন তিনি। মা এবং স্ত্রী মিলেই এখন তার পরিবার। বর্তমানে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রজেক্টে কর্মরত তিনি।

আরো পড়ুন:

গল্প-আড্ডা-স্লোগানে ৪ দফায় অনঢ় জবি শিক্ষার্থীরা

সাম্য হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

২০০৪ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে থাকাবস্থায় ট্রান্সফরমারের বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে ঝলসে যায় রায়হানের দুই হাত। পাঁচদিনের মাথায় তার এক হাত এবং আরেক হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। তবে তিনি থেমে যাননি।

দুর্ঘটনার পর মুখ দিয়ে লেখা আয়ত্ত করেন। আত্মবিশ্বাসী রায়হান ২০০৮ সাল থেকে নতুন করে শুরু করেন পড়াশোনা। হাত হারিয়ে দমে না যাওয়া সেই অদম্য মানুষটি চবি থেকে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বিষয়টি সবার মধ্যে উচ্ছ্বাস বয়ে এনেছে। রায়হান যেন হয়ে উঠছেন সবার অনুপ্রেরণার বাতিঘর।

২০২৩ সালের ১৫ মে অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখে রায়হানকে চাকরি দেয় আইসিটি মন্ত্রণালয়। আইসিটি বিভাগের এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই) প্রকল্পের সমন্বয়ক পদে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে মাত্র সাত মাসের মাথায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গড়িমসিতে চাকরি হারান তিনি।
 
রাইজিংবিডি ডটকমকে রায়হান বলেন, “ছোটবেলায় আকস্মিক দুর্ঘটনায় আমি ভেঙে পড়িনি। দ্রুতই মুখ দিয়ে লেখার অভ্যাস আয়ত্ত করে নেই। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কঠিন সংগ্রামময় সময় পার করেছি। পরীক্ষায় বেশিরভাগ মুখ দিয়ে লিখেছি, কখনো কখনো শ্রুতিলেখকের সাহায্য নিয়েছি।”

তিনি বলেন, “যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে মনোবল চাঙ্গা রাখতে হবে, ভেঙে পড়া যাবে না। আমার মতো মানুষ যদি মনোবল অটুট রাখতে পারি, তবে অন্যরা কেন পারবে না? নিজের জীবনকে সাজানোর জন্য সবাইকে মনোবল ধরে রাখতে হবে।”

সরকারের কাছে কোনো আবেদন করেছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোনো আবেদন নেই। এখন মোটামুটি ভালোই চলছি। সামনে একটা এনজিওতে যাওয়ার ইচ্ছা করছি। আমি নিজ যোগ্যতায় আমার অবস্থান নিশ্চিত করতে চাই।”

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ম‌্যাক্সওয়েলের অবিশ্বাস‌্য ব‌্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয়

কেয়ার্নসে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ নির্ধারণী টি-টোয়েন্টি ম‌্যাচে আগে ব‌্যাটিংয়ে নেমে করে ৭ উইকেটে ১৭২ রান। ওই রান তাড়া করতে নেমে ব‌্যাটিংয়ে ভুগেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে গ্লেন ম‌্যাক্সওয়েল তাদের লড়াইয়েও রেখেছিল। 

শেষ ১২ বলে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন‌্য প্রয়োজন ছিল ১২ রান। পেসার কোরবিন বোস ১৯তম ওভারে কোনো রান তো দেন-ই নি উল্টো আদায় করে নেন ২ উইকেট। ২ রান যোগ হয় লেগবাই থেকে। ক্রিজের অপরপ্রান্তে সব চেয়ে চেয়ে দেখেছেন ম‌্যাক্সওয়েল। তখন তার রান ৩১ বলে ৫২।

শেষ ওভারে বোলিংয়ে লুঙ্গি এনগিডি। ৬ বলে প্রয়োজন ১০ রান। প্রবল চাপে থাকা ম‌্যাক্সওয়েল নিজের স্নায়ু স্থির রাখলেন। হিসেবে কষে খেললেন এনগিডির বল। তাতে সফলও হলেন। প্রথম বল ডিপ মিড উইকেটে পাঠিয়ে নেন ২ রান। পরের বল কাভার সুইপার দিয়ে চার। তৃতীয় ও চতুর্থ বল ডট। সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ থাকলেও নেননি। 

নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছিলেন। ১টি বাউন্ডারি হলেও হয়ে যাবে। পঞ্চম বলে তেমন কিছুই হলো। এনগিডির ফুলটস বল রিভার্স সুইপ করে ৪ রান পেয়ে যান ম‌্যাক্সওয়েল। যে ম‌্যাচটা অস্ট্রেলিয়ায় হারের শঙ্কায় ভুগছিল সেই ম‌্যাচটা তারা জিতে যায় ১ বল আগে, ২ উইকেট হাতে রেখে। 

জয়ের নায়ক ম‌্যাক্সওয়েল ৩৬ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রানের অবিশ্বাস‌্য ইনিংস খেলেন। এই জয়ে ২-১ ব‌্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের হয়ে ইনিংসের শুরুটা ভালো করেছিলেন মিচেল মার্শ। ৩৭ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৪ রান করেন মার্শ। কিন্তু তার ফেরার পর ইনিংসের মধ‌্যভাগে কেউ হাল ধরতে পারেননি। শেষ দিকে বাকিদের ব‌্যর্থতা আড়াল করে দেন ম‌্যাক্সওয়েল। 

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন ডেয়াল্ড ব্রেভিস। ২৬ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান ব্রেভিস। ৩৮ রান করেন রাইসি ভন ডার ডুসেন। ট্রিটাস স্টাবস ২৫ ও ২৪ রান করেন ড্রি প্রিটোরিয়াস। 

বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নাথান এলিস নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন জস হ‌্যাজেলউড ও অ‌্যাডাম জাম্পা। 

ম‌্যাচ সেরা হন ম‌্যাক্সওয়েল। সিরিজ সেরা টিম ডেভিড। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ