আট বছর পর নতুন অ্যালবাম প্রকাশ করল ব্যান্ড চিরকুট। ‘ভালোবাসাসমগ্র’ নামের অ্যালবামটিতে রয়েছে নতুন ১০টি গান। গানগুলোর কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন ব্যান্ডের প্রধান ভোকাল শারমিন সুলতানা সুমি।
জানা গেছে, এখন থেকে স্পটিফাই, অ্যাপল মিউজিক, ইউটিউব, ফেসবুক মিউজিকসহ সব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অ্যালবামের গানগুলো শোনা যাবে। এরই মধ্যে প্রথম গান ‘দামি’র ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। শিগগিরই আরও দুটি গানের ভিডিও প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।
২০০২ সালে যাত্রা শুরু করে চিরকুট। লোকগান, রক, ফোক-ফিউশন, সুফি এবং আধুনিক ধারার সংগীতকে মিশিয়ে তারা গড়ে তুলেছে স্বতন্ত্র এক সংগীতভাষা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে কনসার্টে অংশ নিয়েছে তারা। ‘২৩ বছরের যাত্রায় আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি আমাদের শ্রোতা। তাঁরাই আমাদের পাশে ছিলেন, প্রতিকূল সময়েও এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। ‘ভালোবাসাসমগ্র’ অ্যালবাম সেই ভালোবাসারই উত্তর—একটি সামগ্রিক ভালোবাসার দলিল,’ বলেন ব্যান্ডের ভোকাল সুমি। তিনি আরও বলেন, ‘এই অ্যালবামে আমাদের ভাবনা ও কাজের নিখাদ প্রতিফলন রয়েছে। হৃদয়ের গভীর থেকে এসেছে প্রতিটি গান। যে কথাগুলো অন্তর থেকে উঠে এসেছে, যে সুর মনে বেজেছে, সেগুলোই গান হয়ে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, শ্রোতারা গানগুলো শুনেও তা অনুভব করতে পারবেন।’
এ অ্যালবামের অন্য একটি বিশেষ দিকও রয়েছে। এটি ব্যান্ডের বর্তমান চার সদস্য প্রান্ত, দিব্য, ইয়ার আর শুভ্রর জীবনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ স্টুডিও অ্যালবাম। ‘ওরা খুবই খুশি। ওদের আনন্দ আমাদেরও আনন্দ দেয়,’ বলেন সুমি। চিরকুটের উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলো হচ্ছে ‘চিরকুটনামা’, ‘যাদুর শহর’ ও ‘উধাও’। ‘কানামাছি’, ‘দুনিয়া’, ‘ঢাকার সান্নিধ্যে’, ‘এই শহর আমার’, ‘আহা রে জীবন’, ‘জাদুর শহর’ ইত্যাদি গান জনপ্রিয় হয়েছে। পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেও প্রশংসা কুড়িয়েছে চিরকুট। অমিতাভ রেজা পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার গান ‘না বুঝি দুনিয়া’ বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তান পালনে প্রচলিত পাঁচ ভুল
একটা সময় ছিল, যখন অভিভাবকের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা ছিল ভয়ের, বিশেষ করে বাবার সঙ্গে। তবে সেই সময় বেশির ভাগ শিশু বেড়ে উঠত এক বৃহৎ পারিবারিক পরিসরে। সময় বদলেছে। এ যুগের শিশু অনেকটাই ‘একা’। বাড়ির বাইরে শিশুকে স্বাধীনভাবে খেলতে দিতেও অনেক অভিভাবক অনিরাপদ বোধ করেন। শিশুর নিরাপদ আশ্রয় কেবল তার পরিবার। ভরসার জায়গা কেবল তার মা-বাবা আর নিকটাত্মীয়রাই।
সন্তানপালনে প্রচলিত কিছু ভুল এবং তা সংশোধন সম্পর্কে জানালেন শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ।
আপনার সন্তান নিঃসন্দেহেই আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার মানে এই নয় যে তাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আপনি নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলবেন। নিজের সুস্থতার প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। কিছুটা সময় রাখুন নিজের জন্যও।
২. কোনো বিষয় না জানলে স্বীকার করা যাবে নাএকটা মানুষ সব বিষয় জানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। শিশুর সামনে তা স্বীকার করাও দোষের নয়। এতে আপনি তার চোখে ‘ছোট’ হয়ে যাবেন, এমন ভাবনা ভুল। বরং আপনি কিছু না জানলে তাকে বলুন যে আপনি তা জেনে নিয়ে পরে জানাবেন। শিশুকেও বিষয়টি জানার চেষ্টা করতে বলতে পারেন। জানার পর সে যাতে আপনার সঙ্গে বিষয়টি ভাগ করে নেয়, সে ব্যাপারেও তাকে উৎসাহ দিন।
৩. সব সময় শিশুর প্রশংসা করা উচিতশিশুকে উৎসাহ দিতে প্রশংসা করতে হবে, এটা ঠিক। কিন্তু শিশুর ভুলগুলোও আপনাকেই ধরিয়ে দিতে হবে। নইলে সে অনেক কিছুই শিখতে পারবে না। ধরা যাক, শিশু ডাইনিংয়ে বাড়ির সবার সঙ্গে বসে খাচ্ছে। হয়তো সে খাবার ফেলে-ছড়িয়েই খাচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটা মেনে নেওয়াই ভালো। তবে একটা বয়সে গিয়ে তাকে খাবার টেবিলের আদবকেতাও শেখাতে হবে, বলতে হবে টেবিল গোছানোর মতো টুকটাক কাজে সাহায্য করতেও। এসব শেখানোর পরও যদি সে না করে, তখন কিন্তু আপনাকে তার ভুল ধরিয়ে দিতেই হবে।
আরও পড়ুনশিশুর কান্না ট্যানট্রাম নাকি মেল্টডাউন? দুটির পার্থক্য জেনে রাখা এত জরুরি কেন২৬ জুন ২০২৫৪. শিশুকে দুঃখ বুঝতে দেওয়া যাবে নাদুঃখ তো জীবনেরই অংশ। নশ্বর এই পৃথিবীতে সবদিক থেকে সুখী হওয়া প্রায় অসম্ভব। অভাব, দুঃখ, কষ্ট—জীবনের বাস্তবতা থেকে শিশুকে আড়ালে রাখার প্রয়োজন নেই সব সময়। শিশুর সব চাওয়া পূরণ না করলে কোনো ক্ষতি নেই। বরং বাস্তবতা বুঝেই বড় হোক সে। আর্থিক অসংগতি থাকলে শিশুর বয়স বুঝে তা জানানো যেতে পারে। তবে এ নিয়ে তাকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলবেন না। সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। এমনভাবে বলুন, যাতে নিজের পরিবারের কারণে সে নিজেকে দুর্ভাগা মনে না করে, অন্যদের হিংসাও না করে।
৫. শাস্তি না দিলে শোধরাবে নাএমনও অভিভাবক আছেন, যাঁরা ভাবেন, শাস্তি না দিলে সন্তানের ভুল শোধরাবে না। এই ভাবনাও ভুল। প্রয়োজন হলে শিশুকে আপনি অবশ্যই শাসন করবেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, তা করতে গিয়ে যেন আপনার সঙ্গে তার সম্পর্কের ভিতটা দুর্বল হয়ে না পড়ে। শিশুকে মারবেন না। কটু কথা বলবেন না। রেগে ভয়ংকরদর্শন একজন মানুষ হয়ে উঠবেন না। বরং শিশুর কোন কাজটা ভুল হয়েছে, কেন ভুল হয়েছে, তা বুঝিয়ে বলুন।
আরও পড়ুনসন্তান মানুষ করার চাপ যেভাবে সামলাবেন২১ মে ২০২৫