আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে বসছে মোট ১৯টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ৯টি হাট বসানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আরো কিছু হাটের দরপত্র আহ্বান করা হলেও আইনি জটিলতা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থার কারণে সেগুলো অনিশ্চিত।

ঢাকা দক্ষিণে ৯ হাট চূড়ান্ত, আন্দোলনের কারণে ঝুলে আছে কার্যাদেশ
ডিএসসিসি এলাকায় শুরুতে ১১টি অস্থায়ী হাট বসানোর পরিকল্পনা থাকলেও আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক কারণে আফতাবনগর ও মেরাদিয়া হাট স্থগিত করা হয়েছে। নয়টি হাট চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হাটে সর্বোচ্চ দর পাওয়া গেলেও আন্দোলনের কারণে কার্যাদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

ঢাকা দক্ষিণের ৯ হাট হলো:
১.

উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গা।
২. পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিম পাশের নদীপাড়
৩. রহমতগঞ্জ ক্লাব-সংলগ্ন খালি জায়গা।
৪. হাজারীবাগ ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির পূর্ব পাশ।
৫. আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশ।
৬.. সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশ।
৭. কমলাপুর সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টার-সংলগ্ন খালি জায়গা।
৮. শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ড-সংলগ্ন খালি জায়গা।
৯. মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পাশের খালপাড়।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লার হাটে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু 

অভয়নগরে বিক্রির জন্য প্রস্তুত সেরা ফ্রিজিয়ান ষাড় ‘ঠাণ্ডা ভোলা’ 

ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা হাসিবা খান জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ দর পাওয়া হাটগুলোতে কার্যাদেশ দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু, আন্দোলনে নগর ভবন তালাবদ্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। অন্য চারটি হাটের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে পাঁচটি হাটের ইজারা সম্পন্ন করেছি। বাকি চারটি ঈদের আগেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।

ঢাকা উত্তরে প্রস্তুত ১০ হাট
ডিএনসিসি এলাকায় ১০টি হাটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। হাটগুলোর মধ্যে অধিকাংশের ইজারা চূড়ান্ত হয়েছে। কয়েকটি হাটে এখনো আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া চলমান।

ডিএনসিসির হাটগুলো হলো:

১. ভাটারা সুতিভোলা খাল-সংলগ্ন খালি জায়গা।
২. উত্তরা দিয়াবাড়ী ১৬ ও ১৮ নম্বর সেক্টর-সংলগ্ন বউবাজার এলাকা। 
৩. বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর।
৪. মিরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইস্টার্ন হাউজিং।
৫. মোহাম্মদপুর বছিলা ৪০ ফুট রাস্তার পাশে।
৬. ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন খালি জায়গা।
৭. খিলক্ষেত থানাধীন মস্তুল চেকপোস্ট-সংলগ্ন মাঠ।
৮ ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে রানাভোলা স্লুইসগেট পর্যন্ত খালি জায়গা।
৯. মিরপুর কালশী বালুর মাঠ।
১০. কাঁচকুড়া বাজার-সংলগ্ন খালি জায়গা।

ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, নগরবাসীর চাহিদা ও সুবিধার কথা মাথায় রেখেই আমরা ১০টি হাট নির্ধারণ করেছি। দ্রুতই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

স্থায়ী হাট
অস্থায়ী হাট ছাড়াও ডিএনসিসির গাবতলী ও ডিএসসিসির সারুলিয়া হাটে পশু বিক্রি হবে। এসব হাটে অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে শেড নির্মাণ ও অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ডিএসসিসির এক কর্মকর্তা বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইনি জটিলতার মধ্যেও ঢাকায় এবার মোট ১৯টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানো হচ্ছে। উত্তরের হাটগুলো বেশিরভাগ প্রস্তুত থাকলেও দক্ষিণে আন্দোলনের কারণে কিছু হাটের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। 

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ড এসস স র প রস ত ত ড এনস স এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলের হামলায় ৭০ জনের বেশি নিহত

গাজায় তীব্র খাদ্যসংকটের মধ্যে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। গতকাল বুধবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এ উপত্যকার হাসপাতালগুলো দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে আরও ৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।

গাজার গণমাধ্যম কার্যালয়ের তথ্যমতে, গতকাল উত্তর গাজায় ঢুকতে থাকা ট্রাকগুলো থেকে ত্রাণ নেওয়ার জন্য জিকিম পয়েন্টের দিকে যাচ্ছিলেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময় সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। এ ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। আহত হন ৬৪৮ জনের বেশি।

এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে তথাকথিত মোরাগ করিডর এলাকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে আরও ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স।

চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে গাজায় ত্রাণসহায়তা বিতরণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ কার্যক্রম শুরু করে। বিতর্কিত এ ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রগুলো থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

পর্যাপ্ত ত্রাণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশের চরম নিরাপত্তাহীনতার কারণে ফাউন্ডেশনটি জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।

আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল২৯ জুলাই ২০২৫

গাজায় এমন সময় এসব হামলা হচ্ছে, যখন ত্রাণ সংস্থা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেখানে ব্যাপক হারে খাদ্যসংকট বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছেন। বিশেষ করে গাজার শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অনাহারে রয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ উপত্যকায় অপুষ্টিতে এ পর্যন্ত ১৫৪ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে ৮৯টি শিশু। তাদের অধিকাংশই গত কয়েক সপ্তাহে মারা গেছে। গত মঙ্গলবার একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।

গাজায় যাঁরা বেঁচে থাকার লড়াই করছেন, তাঁদের একজন জিহান আল-কুরআন। তিনি তাঁর ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে আল–জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন। মেয়ের দিকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘ওর পেটের দিকে তাকান! কোনো মাংস নেই, শুধু হাড়-খাবারের অভাবে। এক মাস ধরে এক টুকরা রুটিও জোটেনি।’

আরও পড়ুনগাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ২৯ জুলাই ২০২৫

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএয়ের মুখপাত্র আদনান আবু হাসনা আল–জাজিরাকে বলেন, গাজায় ঢুকতে দেওয়া অতি সামান্য ত্রাণের বেশির ভাগই মানুষের পৌঁছায় না।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় মানুষের খাদ্যের মৌলিক চাহিদা পূরণে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রয়োজন। অথচ গত চার দিনে সেখানে মাত্র ২৬৯টি ট্রাক প্রবেশ করেছে।

আরও পড়ুনএবার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা কানাডার৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ