গাজীপুরে ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় যুবলীগ নেতা
Published: 19th, June 2025 GMT
‘আমি এক অভাগা সন্তান। মাকে শেষ ডাকটাও দিতে পারলাম না।’ সাদা কাফনে মোড়ানো খাঁটিয়ার ওপর থাকা মায়ের নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম রিপন। তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া হাজারো মুসল্লি সামনে অঝোরে কাঁদতে থাকেন রিপন।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা গ্রামে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠন যুবলীগের মাওনা ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম রিপনের মা নূরুন্নাহারের (৫৬) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রিপন ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামের ছেলে। এর আগে বুধবার তিনি ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে মারা যান।
রিপনের আইনজীবী মো.
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, আবেদনের পর বন্দি রিপনের মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, আদেশ পাওয়ার পর তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মুক্ত থেকে ৩ ঘণ্টা পর পুলিশ আবার আসামি রিপনকে কারাগারে হস্তান্তর করে।
স্বজনরা জানান, রিপন তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে এক ঘণ্টা বাড়িতে অবস্থান করেন। পুলিশ পাহারায় রিপন বাড়িতে আসার পর সেখানে স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়।
জানা যায়, তরিকুল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার মাওনার নিজ বাড়ি থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। এর পর থেকেই গাজীপুর জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ল ইসল ম ল ইসল ম র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস