নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আমরা কয়েকদিন আগে দেখলাম একজন ব্যক্তি (মাসুদুজ্জামান মাসুদ) যিনি ৪ থেকে ৫ হাজার লোকের আপ্যায়ন করাইছে। কিছু মিডিয়া হয়তো বলেন ১৫ হাজার লোকের আপ্যায়ন করাইছে। তবে সেই লোকগুলো বেশির ভাগই তার গার্মেন্টসের। 

তারপরও আমি তার আমলনামাটা একটু আপনাদের সামনে তুলে ধরি। যেটা হলো গত ১৫ বছর তিনি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সেলিম ওসমানের প্রধান দোসর ছিলেন। সেটার প্রমাণে নারায়ণগঞ্জ না সারা বাংলাদেশের মানুষ জানেন। 

আপনারা হয়তোবা দেখেছেন আওয়ামী লীগের আমলে বাংলাদেশ একটি নতুন ব্যাংক হয়েছে সিটিজেন ব্যাংক। আওয়ামী লীগের আমলে ব্যাংকের অনুমতি কারা পায় যারা আওয়ামী লীগের দোসর তারাই পায়।  আজকে যিনি ঐদিন চার-পাঁচ হাজার মানুষকে খাওয়ালেন উনি তো সিটিজেন ব্যাংকের মালিক। 

তার সাথে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন লোকজন সেই ব্যাংকের শেয়ার। মূল মালিক হলো কে যারা আমাদের ছাত্র-জনতা কে হত্যা করেছে জজদের বলে আমাদেরকে জেল খাটি হয়েছে সেই শেখ হাসিনার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক হলো তার ব্যবসায়িক পার্টনা।

যে ব্যক্তি আনিসুল হকের পার্টনার সে ব্যক্তি কি আপনাদের স্বার্থ দেখবে। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন ঘুরবি এই গরিবের দুঃখ বুঝে। আমরা গরীব আমরা আপনাদের দুঃখ বুঝবো যারা সুসময়ে এসে পদ ভাঙ্গিয়ে নিবেন তাদের বাড়িতে গিয়েও আপনাদের সাক্ষাৎ করা সম্ভব হবে না। 

মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও খাবার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন । শনিবার (২১ জুন) দুপুরে ধামগড় ইউনিয়নের আমুর বটতলায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমরা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করি নাই। আমরা কিন্তু আপনাদের পাশেই ছিলাম আর আপনারও আমাদের পাশে ছিলেন। আপনারা আমাদের সাথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন বলে আমরা শক্তিশালী ছিলাম। রাজপথে হরতাল, মিছিল ও আন্দোলন সংগ্রাম করতে পেরেছি। 

আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছে জনগণ হলো সকল ক্ষমতার উৎস।  জনগণকে আমরা প্রথমে অগ্ৰধিকার দিতে চাই । আমরা জনগণের আশা অক্ষাকার প্রতিফলন ঘটাতে চাই। কিন্তু যারা দুঃসময় ছিল না তারা এখন সুসময়ে এসেছে হালুয়া রুটি খাওয়ার জন্য।

গত ১৫ বছর তারা পালিয়ে ছিলেন নিজের রক্ষা করেছেন আর  সরকারের হালুয়া রুটি খেয়েছেন তারা এখন আসছে যে একটা পদ নিয়ে একটা এমপি হয়ে আবারো কিছু লুটেপুটে খাওয়ার জন্য। তাদের স্থান বিএনপিতে তথা নারায়ণগঞ্জের মাটিতে হবে না ইনশাল্লাহ। 

তিনি বলেন, বিএনপি থেকে যারা এমপি মনোনয়ন পাবে তাদেরকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ক্যাটাগরি হলো যারা বিগত ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামী ছিল। জেল জুলুম অন্যায় অত্যাচার সহ্য করেছি। দুই নাম্বার ক্যাটাগরি হল যারা ক্লিন ইমেজের অধিকারী।

এলাকায় যাদের ক্লিন ইমেজ ও জনসমর্থন রয়েছে। আর তিন নাম্বার ক্যাটাগরি হল দলের নেতাকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক ও তাদের কমিটমেন্ট রক্ষা করা। ও তাদের সকল প্রকার সমস্যা সমাধান ও পাশে থাকা। 

আজকে যারা ব্যবসায়ীরা বিএনপির মনোনয়ন নিতে চান তারা কি এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়েন। আর আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন নমিনেশনের পরীক্ষা গতই ৫ই আগস্টে মধ্যেই সমাপ্ত। গত ৫ই আগস্টের পূর্বে যারা যে পরীক্ষা দিছে সেটার উপর নির্ভর করে নমিনেশন হবে। আমাদের সাথে কেন্দ্র নেতৃবৃন্দদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।

তাদের একই কথা যারা মাঠে ছিল, ইমেজ ভালো নেতাকর্মীদের সাথে সুখ সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকেই মনোনয়ন দিয়ে দলের পক্ষ থেকে পার্টি করা হবে। যারা জনগণকে ভুল বুঝিয়ে নিজেদেরকে জাহির করার চেষ্টা করছেন তাদেরকে বলে দিতে চাই আপনারা ভুল করছেন।

বিএনপিতে তিন ক্যাটাগরী রয়েছে সেই ক্যাটাগরিতে তারা পড়ে না। সুতরাং তাদের নির্বাচন করার কোন অধিকার নেই তাদের বিষয়ে আমাদের চিন্তা করার কোন লাভ নাই। 

তিনি বলেন, আমরা চাই সুন্দর নারায়ণগঞ্জ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের মধ্য দিয়ে আমরা সেই সুন্দর নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই। বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। গত ১৫ বছরে ওই সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানরা নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের জনপথ হিসাবে গড়ে তুলেছিল।

এই বন্দরের মানুষের জায়গা সম্পত্তি দখল করা হয়েছিল। কারা দখল করেছিল তা আপনারা কিন্তু সবাই জানেন আমরা এই ধরনের নারায়ণগঞ্জ আর চাই না। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জের ও বন্দরের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। 

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ কোন মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ,সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যু বিএনপিতে স্থান দেয়া হবে না। যারা বিএনপিতে আছেন তাদের প্রতি সতর্কবার্তা দিলাম। যদি এমন কেউ থাকেন যারা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজিও মানুষের উপর জুলুম করেন তাহলে আজ থেকে ভালো হয়ে যান। না হলে আপনাদের জায়গা হবে জেল আর আপনারা বিএনপি করতে পারবেন না। 

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে তাৎক্ষণিক সময় যারা ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশের বিপদের ওই সময় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আবির্ভাব ঘটেছিল। আর আপনারা জানেন ২৫ মাস কাল রাতে যখন পশ্চিমা কুষ্টিয়া এদেশে নীরব বাঙ্গালীর উপর বিচারের গুলি চালিয়েছিল সেই সময় শেখ মুজিব পাকিস্তানিদের হাতে ধরা দিয়ে কেনে নিরাপদ আশ্রয় চলে যায়।

আর আওয়ামী লীগের অনেক নেতারে পালিয়ে গিয়ে ভারতে নিজেদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। সেই সময় বিপদগ্রস্ত বাঙালি যখন কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছিল না সে সময় সেনাবাহিনীর অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিল কিন্তু কেউ এগিয়ে আসে নাই। ওই সময় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একদম মধ্যম সারির মেজর ছিলেন।

তিনি মধ্যম সাড়ির হলে কি হবে তার বুক ভরা ছিল দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সাহস। দেশের মানুষ ও দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকে তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করে এবং তার পরিবারের প্রতিও মায়া না করে সেদিন তিনি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে গিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেই তিনি ক্ষান্ত হননি তিনি যুদ্ধ করেছিলেন পালিয়ে যাননি।

তিনি জেড ফোর্স গঠন করেছিলেন এবং একটি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন। স্বাধীন করেও তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি তিনি কিন্তু ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন। আর ১৯৭৫ সালে দেশী ও বিদেশি চক্রান্তর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূখণ্ড যখন ধ্বংসের পথে তখনই তিনি সিপাহী জনতা বিপ্লব করে জিয়াউর রহমানের হাতে দেশের ক্ষমতার ভার দিয়েছিলেন।

তিনি কিন্তু সরাসরি ক্ষমতা নিতে চাননি সিপাহী দেয় তার হাতে ক্ষমতা দিয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসে দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশের রূপান্তরিত করেছিলেন। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি এদেশের মানুষ ততদিন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। 

ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.

মহসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিন আহমেদ, হুমায়ূন কবির,বন্দর থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান রিপন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর খান চঞ্চল, বন্দর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, বন্দর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাওলাদ মাহমুদ, বন্দর উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অদুদ ভূঁইয়া সাগর, সম্রাট হাসান সুজন, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, সহ- সভাপতি কবির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান আপন, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন ভূঁইয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহজাহান ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ রহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনিক আহমেদ, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, ধামগড় ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানা, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম রেজা, বন্দর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আল আমিন, বন্দর উপজেলা আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক পানা উল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজল মন্ডল প্রমুখ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ল ম ওসম ন ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ন ব এনপ র স ত র ক রহম ন র ব এনপ র কর ছ ল ন র রহম ন রহম ন র আপন দ র ব এনপ ত ম ওসম ন দর থ ন আম দ র ই সময় গঠন ক আপন র ক ষমত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে রথযাত্রা সফল করতে পূজা পরিষদের মতবিনিময় সভা

আগামী ২৭জুন অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। নারায়ণগঞ্জে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২০ জুন) বিকেল পাঁচটায় শহরের চাষাড়াস্থ শ্রী শ্রী গোপাল জিউর বিগ্রহ মন্দির প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মতবিনিময় সভায় আগামী ২৭ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন স্থানে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে নেতৃবৃন্দরা দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শংকর কুমার দে'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ূন কবির।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমরা চাই সুন্দর নারায়ণগঞ্জ। এই সুন্দর নারায়ণগঞ্জে এখানে সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দ থাকবে না। আর আমরা চাইও না বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দ থাকুক।

বাংলাদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশী। এখানে আমরা ধর্মের মাধ্যমে কোনো ভেদাভেদ করতে চাই না। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদেরকে একটি নির্দেশনা দিয়েছে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের মন জয় করতে হবে। আমরা সেই নির্দেশনা মেনে কিন্তু আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো। 

তিনি বলেন, আপনারা জানেন কত ১৬ সালের নির্বাচনে আমি মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলাম সেই নির্বাচনে একটি ইশতেহার মধ্যে বলেছিলাম  আপনাদের হিন্দু সম্পদের ভাই-বোনদের জন্য।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরের পাশাপাশি সেখানে হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার এবং শহরের দেওভোগের জিউস পুকুর সংস্কার করে সেখানে ধর্মীয় যেন সকলে ব্যবহার করে সেই উপযোগী করে তোলার জন্য। কোন ব্যক্তি যদি ধর্ম শিক্ষা পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারে তাহলে সে কোন খারাপ কাজে লিপ্ত থাকতে পারবে না। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি কথা প্রচলন আছে যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখল করেছে অনেকই। কিন্তু আমি বলতে চাই বিএনপির কয়জন লোক হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে আপনারা দেখবেন এমন বিচার করবেন আর আওয়ামী লীগের লোকেরা জন্য সম্পত্তি দখল করেছে তা আপনারা কিন্তু দেখেছেন।

আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছে শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয় সকল সম্প্রদায় যদি আমাদেরকে ভোট দেয় আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাহলে বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে একটি হিসাবে গড়ে তুলা হবে। সকল সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। এই স্লোগান শুধু ব্যানারে লিখলেই হবে না, সবাইকে মানতে হবে। কারণ এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে।

সকলের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই এদেশে কোনো ধর্মীয় বিভক্তি থাকতে পারে না। আমরা সকল ধর্মের মানুষ মিলে মিশে এই দেশে বসবাস করবো। যারা বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা করবেন, আমরা মনে করবো তারা ফ্যাসিস্টের দোসর।

তিনি বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে, হিন্দুদের নির্যাতন করেছে কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা আপনাদের পাশে আছি।

৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমাদের অভিভাবক তারেক রহমান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমরা জোরালো ভবে বলতে চাই, সে সময়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আপনাদের প্রতিটি মন্দির, বাড়ি-ঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পাহারা দিয়েছে। আপনাদের যে কোনো সমস্যার কথা শুনলে দৌড়ে ছুটে গিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, আপনারা নিশ্চিন্তে আপনাদের সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন। আগামী ২৭ জুন অনুষ্ঠিতব্য জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা অনুষ্ঠানও জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করুন। আপনারা রবিবারে জেলা প্রশাসকের কাছে আসুন, আমরাও থাকবো।

পুরো অনুষ্ঠানের একটা রোড ম্যাপ তৈরি করা হবে। সে অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতাকর্মীরা আপনাদের পাশে থেকে অনুষ্ঠানকে সফল করতে সহায়তা করবে।

মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন উপস্থিত রথযাত্রা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্দিরের প্রতিনিধিগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শ্রী শ্রী জগন্নাথ রথযাত্রা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের সবকটি রথ যেন একই সময়ে বের করা হয় যাতে করে সুশৃংখলভাবে সুন্দর এবং উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা যায়।

একেক স্থান থেকে একেক সময় বের করা হলে শহরে যানজটসহ নানাবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিকেল তিনটায় সবাই একসাথে রথ বের করবেন এবং বিকেল পাঁচটার মধ্যে শেষ করবেন।

তিনি আরো বলেন, অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে, পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষের উদ্যোগে নিজস্ব ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হবে। বরাবরের ঐতিহ্য ধরে রেখে আবারো একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠার আয়োজনে আপনাদের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী পূর্ণ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট সাবেক ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কর্মকার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সঞ্জিব কর্মকার জয়, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণপদক সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল কুমার দাস, সহ- সভাপতি সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, জেলা কমিটির সহ- সভাপতি তিলোত্তমা দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে,  মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য সহ জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্দির প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৪নং ওয়ার্ড জুড়ে ফ্যাসিস্টের দোসর জানে আলমের পোস্টার, ক্ষোভ 
  • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র জরুরি সভা অনুষ্ঠিত 
  • ১৫নং ওয়ার্ডে নগর ভাবনার পরিচ্ছন্নতা অভিযান
  • তারেক রহমান মাঠের কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন : টিপু 
  • জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ধামগড় বিএনপির দোয়া মাহফিল 
  •  ২৮ জুনের মহাসমাবেশ সফল করতে শহর শাখা উত্তরের প্রস্তুতি সভা
  • নারায়ণগঞ্জে সংখ্যালঘু বলতে কোন শব্দ থাকবে না : সাখাওয়াত
  • নারায়ণগঞ্জে রথযাত্রা সফল করতে পূজা পরিষদের মতবিনিময় সভা
  • ফের রিমান্ডে সালমান এফ রহমান, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আনিসুল হক