রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হকের জামিনের আবেদন, শুনানি মঙ্গলবার
Published: 22nd, June 2025 GMT
রংপুরে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হকের জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ (হাজীরহাট আমলি আদালত)–এর বিচারক সোয়েবুর রহমানের আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন করেন মাহমুদুল হকের আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন‘স্ট্রোক করে মৃত্যুর’ ১০ মাস পর হত্যা মামলা, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে২০ জুন ২০২৫আইনজীবী শামীম আল মামুন আদালতকে বলেন, মাহমুদুল হক নির্দোষ। যে হত্যা মামলায় মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। মাহমুদুল হক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। আবু সাঈদ হত্যার পর তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।
আইনজীবীদের বক্তব্য উপস্থাপনের পর আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির আদেশ দেন আদালত। পরে আদালত চত্বরে আইনজীবী শামীম আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, মাহমুদুল হকের জামিন শুনানির আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তাঁদের বক্তব্য শুনেছেন। ২৪ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুনজুলাই অভ্যুত্থানে প্রতিবাদী শিক্ষক কেন কারাগারে, প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের১৬ ঘণ্টা আগেএ সময় আদালতে উপস্থিত মাহমুদুল হকের স্ত্রী মাসুদা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, আজ তাঁকে সসম্মানে বাড়িতে নিয়ে যাব। কিন্তু হলো না। আমরা আদালতের কাছে ন্যায্যবিচার চাই। বিচার না পেলে আমরা কোথায় যাব, কার কাছে যাব?’
এদিকে মাহমুদুল হকের জামিন শুনানির খবর শুনে সকাল ১০টা থেকে আদালত চত্বরে জড়ো হন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘জুলাই নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘মাহমুদুল হকের নিঃশর্ত মুক্তি চাই’, ‘জুলাই নিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। জামিন শুনানির তারিখ দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আদালত চত্বর ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুনরোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গ্রেপ্তারের ঘটনায় সেই ওসির বদলি২ ঘণ্টা আগেগত বৃহস্পতিবার বিকেলে মাহমুদুল হককে রংপুর নগরের ধাপ ইঞ্জিনিয়ারপাড়া এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে হাজীরহাট থানা পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারে থাকা মাহমুদুল হক রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে ৩ জুন হাজীরহাট থানায় ৫৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নগরের রাধাকৃষ্ণপুর মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা আমেনা বেগম। মামলার ৫৪ নম্বর আসামি মাহমুদুল হক।
আরও পড়ুন‘বাচ্চা প্রশ্ন করছে—আমার বাবার কী অপরাধ, আমি কী বলব তাকে’২০ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় যুবলীগ নেতা
‘আমি এক অভাগা সন্তান। মাকে শেষ ডাকটাও দিতে পারলাম না।’ সাদা কাফনে মোড়ানো খাঁটিয়ার ওপর থাকা মায়ের নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম রিপন। তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়া হাজারো মুসল্লি সামনে অঝোরে কাঁদতে থাকেন রিপন।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা গ্রামে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠন যুবলীগের মাওনা ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম রিপনের মা নূরুন্নাহারের (৫৬) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রিপন ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামের ছেলে। এর আগে বুধবার তিনি ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে মারা যান।
রিপনের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মায়ের মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে পিটিশন দেওয়া হয়। পরে প্যারোলে তিনি মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার অনুমতি পান। অনুমতি পেয়ে পুলিশের কড়া পাহারায় তিনি জানাজার নামাজে অংশ নিয়েছেন। পরে তাকে আবার কারাগারে ফেরত নেওয়া হয়।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, আবেদনের পর বন্দি রিপনের মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, আদেশ পাওয়ার পর তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মুক্ত থেকে ৩ ঘণ্টা পর পুলিশ আবার আসামি রিপনকে কারাগারে হস্তান্তর করে।
স্বজনরা জানান, রিপন তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে এক ঘণ্টা বাড়িতে অবস্থান করেন। পুলিশ পাহারায় রিপন বাড়িতে আসার পর সেখানে স্বজনদের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়।
জানা যায়, তরিকুল ইসলাম রিপনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার মাওনার নিজ বাড়ি থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন। এর পর থেকেই গাজীপুর জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।