ইরানে মার্কিন হামলা, বিশ্ববাজারে বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম
Published: 22nd, June 2025 GMT
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বিমান বাহিনী। শনিবার মধ্যরাতের ওই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত আরও গভীর ও বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। খবর গালফ নিউজের।
প্রায় দেড় সপ্তাহব্যাপী চলমান সংঘাতে বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতির দেশটি জড়িয়ে পড়ায় জ্বালানি তেলের বাজারে নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইতোমধ্যেই ১১ শতাংশ বেড়েছে। নতুন করে উত্তেজনা বাড়ায় আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম ৮০ থেকে ১০০ ডলারের ঘরে চলে যেতে পারে।
বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ হয় হরমুজ প্রণালী দিয়ে। বর্তমানে এই প্রণালীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ইতোমধ্যে জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জাহাজের জিপিএস সিগনাল জ্যাম হওয়ার ঘটনাও ঘটছে প্রতিদিন। এছাড়া সম্প্রতি দুটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়।
সর্বশেষ তথ্য বলছে, ইরান এখনো অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে। যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে আগের চেয়ে তারা কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টাও করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্র বা উপসাগরীয় তেল অবকাঠামোতে পাল্টা আঘাত হানে, তাহলে জ্বালানি তেল সরবরাহে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। ফলে উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে দামে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন সবকিছু নির্ভর করছে ইরানের প্রতিক্রিয়ার ওপর। কূটনৈতিক সমাধান না এলে, যুদ্ধ আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। আবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দাম কমতেও পারে।
প্রসঙ্গত, গত রাতে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে চালানো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এই আঘাত ছিল শক্তির প্রদর্শন। যদি ইরান শান্তি না চায়, তাহলে আরও বড় প্রতিশোধ আসবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।