জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিতে (বায়রা) প্রশাসক নিয়োগ দিতে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বহাল রয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বায়রার করা পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর তথ্যমতে, বায়রার নির্বাহী কমিটির (২০২২–২৪) মেয়াদ বাড়ানো, নির্বাচনের তফসিল ও পুনঃ তফসিল নিয়ে এবং প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে বায়রায় নির্বাচন চেয়ে গত বছর পৃথক চারটি রিট করেন বায়রার কয়েকজন সদস্য ও রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ অন্তবর্তী আদেশ দেন। পরে চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে গত বছরের ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।
হাইকোর্ট ওই আইনের ১৭ বিধি অনুসারে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে বাণিজ্যসচিবকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বিধানটি (১৭ বিধি) চার সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের বাণিজ্য সংগঠন আইনের ১৭ বিধিতে নির্বাহী কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ও প্রশাসক নিয়োগ বিষয়ে বলা রয়েছে।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে বায়রা চলতি বছর পৃথক লিভ টু আপিল করে, যার ওপর আজ শুনানি হয়। আদালতে রিট আবেদনকারীদের (রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া। লিভ টু আপিলকারীপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
পরে রিট আবেদনকারীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগ বায়রার করা পৃথক চারটি লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে বায়রায় চার সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ দিতে বাণিজ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা বহাল রইল। দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রশাসকের কাজ হচ্ছে নির্বাচন আয়োজন করা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এ–সংক্রান্ত মেমো স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২০২০ সালের ১৯ জুলাই এক মেমোতে জানায়, সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গ্রহণের কারণে সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন সরকার মঞ্জুর করেছে। এর বৈধতা নিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পক্ষে চলতি মাসে রিটটি করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আলম মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারণামূলক উদ্দেশ্য থেকে সাইফুল আলম (এস আলম) ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন; যাতে দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া টাকা দিতে না হয় এবং ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে সুরক্ষা পেতে পারেন। নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে দাবি করে তিনি আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে গিয়েছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে মেমো দিয়ে মঞ্জুর করেছিল, তা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বহাল থাকছেন।
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরও বলেন, ২০২০ সালে নাগরিকত্ব ত্যাগ করলেও বিভিন্ন ঋণসংক্রান্ত নথি–তথ্যাদিতে এস আলম নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দাবি করছেন দেখা যাচ্ছে। আবার সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে আন্তজাতিক সালিসি আদালতে গিয়ে বাংলাদেশে তাঁর বিনিয়োগের সুরক্ষা চাচ্ছেন। তাঁর কাছে ইসলামী ব্যাংকের পাওনা এক হাজার কোটির বেশি টাকা।
সিঙ্গাপুর থেকে সাইফুল আলমকে কূটনৈতিক মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি এবং গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম।