ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন ঢাকার আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব শুনানি শেষে এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
কারাগারে বসে এই মামলার বাদীকে বিয়ে করার পাঁচ দিনের মাথায় জামিন পেলেন নোবেল।
এর আগে রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার আইনজীবী মো.
জামিন আবেদনে বলা হয়েছে, মামলার আসামি নোবেল গত ২০ মে হতে জেল হাজতে আটক আছেন। যেহেতু বাদী ও আসামির মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হওয়ায় বাদী মামলাটি দায়ের করেছেন। বাদী ও আসামির মধ্যে শরীয়ত মোতাবেক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি অঙ্গীকারনামা দ্বারা স্বীকার করেছেন। বাদীর জিম্মায় আসামি জামিন পেলে বাদী কোন আপত্তি নাই। আসামি জামিন পাওয়ার পর বিবাহ রেজিস্ট্রি করে নেবেন।
এর আগে ১৮ জুন উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে তাদের বিয়ে সম্পাদন করে আদালতকে অবগত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় কারা কর্তৃপক্ষকে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে নোবেলের আইনজীবী একটি আবেদন করেন।
এর আগে গত ১৯ মে রাত ২টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে নোবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থীকে বাসাবাড়িতে আটকে রেখে জোর করে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর ডেমরা থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। পরদিন ২০ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জামিনে পেলেন বেরোবির শিক্ষক মাহমুদুল হক
রংপুরে জুলাই আন্দোলন চলাকালে মুদি দোকানি ছমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় জামিন পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক।
রবিবার (২২ জুন) বিকেলে রংপুর মহানগর দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) মার্জিয়া ইসলাম তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাহমুদুল হকের আইনজীবীরা রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ (হাজীরহাট আমলী আদালত)-এর বিচারক মো. সোয়েবুর রহমানের আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আগামী মঙ্গলবার জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। মাহমুদুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার আইনজীবীরা গত বৃহস্পতিবার জামিন আবেদন নামঞ্জুরের বিরুদ্ধে রংপুর মহানগর দায়রা জজ আদালতে পুনরায় আবেদন করেন।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টার ব্যবধানে জোড়া খুন
‘মুক্তিপণ’ না পেয়ে শিশুকে হত্যা, খালে মিলল মরদেহ
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দায়রা জজ আদালতে সেই আবেদন উপস্থাপন করা হলে আদালত মানবিক বিবেচনায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাহমুদুল হক রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কারামুক্তির পর রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকের সামনে মাহমুদুল হকের আইনজীবী শামীম আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “মাহমুদুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। দুপুরে জামিন আবেদনের সময় আমরা তার অসুস্থতার বিষয়টি আদালতের কাছে তুলে ধরি। কারা কর্তৃপক্ষও আদালতকে এ বিষয়ে অবহিত করে। আদালত মানবিক বিবেচনায় তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। জামিনের পরপরই পরিবারের সদস্যরা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।”
এদিকে মাহমুদুল হকের জামিনের শুনানি ঘিরে আজ সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন হাতে অবস্থান নেন এবং ‘মাহমুদুল হকের মুক্তি চাই’, ‘গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ চলবে না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা মাহমুদুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান এবং এই মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দেন।
কারাগার থেকে প্রিয় শিক্ষক মুক্ত হলে আনন্দে ফেটে পড়েন সবাই। এসময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সাবেক সমন্বয়ক শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, “তিনদিন পর স্যারকে ফিরে পেয়ে আমরা আনন্দিত। যেভাবে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটি আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ছমেস উদ্দিন হত্যা মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ