জ্বালানি তেলের দাম এখন বাড়বে না: জ্বালানি উপদেষ্টা
Published: 24th, June 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহতের বিষয়টি নির্ভর করবে যুদ্ধ কত দিন চলে তার ওপর। স্বল্প মেয়াদে জ্বালানির ব্যবস্থা করা আছে। আপাতত বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম এখন বাড়বে না। বিপিসির মুনাফা থেকে সমন্বয় করা হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ভর্তুকিও বাড়বে না, জ্বালানি তেলের দামও বাড়ানো হবে না। এ ছাড়া আমদানিতে নিয়মিত সাশ্রয় করা হচ্ছে। গত সপ্তাহেও একটি দরপত্রে ২১ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।
এর আগে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে অনেক ভর্তুকি, এটা আর বাড়ানো যাবে না। তাই খরচ কমাতে হবে। ইতিমধ্যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বেসরকারি খাত দীর্ঘ সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। সারা বিশ্বে এখন সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমছে। তবে বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ছে। তাই যাঁরা এ দেশে আছেন, তাঁদের আরও বিনিয়োগে উৎসাহী করতে হবে। এর পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারীদের উৎসাহী করার চেষ্টা করে যেতে হবে।
লাফার্জহোলসিমের সঙ্গে গ্যাস বিক্রয় চুক্তি করেছে সিলেটের গ্যাস বিতরণ সংস্থা জালালাবাদ গ্যাস পিএলসি। এ চুক্তির অধীনে সুনামগঞ্জের ছাতকে তাদের সিমেন্ট কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করবে জালালাবাদ। চুক্তি অনুসারে বিইআরসির নির্ধারিত হারে গ্যাসের দাম পরিশোধ করবে লাফার্জ। চুক্তিতে সই করেন লাফার্জহোলসিম পিলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল চৌধুরী ও জালালাবাদের মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিবালয়) জিতেন্দ্র কুমার দাস।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।