মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহতের বিষয়টি নির্ভর করবে যুদ্ধ কত দিন চলে তার ওপর। স্বল্প মেয়াদে জ্বালানির ব্যবস্থা করা আছে। আপাতত বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম এখন বাড়বে না। বিপিসির মুনাফা থেকে সমন্বয় করা হবে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ভর্তুকিও বাড়বে না, জ্বালানি তেলের দামও বাড়ানো হবে না। এ ছাড়া আমদানিতে নিয়মিত সাশ্রয় করা হচ্ছে। গত সপ্তাহেও একটি দরপত্রে ২১ কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে।

এর আগে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে অনেক ভর্তুকি, এটা আর বাড়ানো যাবে না। তাই খরচ কমাতে হবে। ইতিমধ্যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, বেসরকারি খাত দীর্ঘ সময় ধরে নানা চ‍্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। সারা বিশ্বে এখন সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমছে। তবে বিদ‍্যমান বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ছে। তাই যাঁরা এ দেশে আছেন, তাঁদের আরও বিনিয়োগে উৎসাহী করতে হবে। এর পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারীদের উৎসাহী করার চেষ্টা করে যেতে হবে।

লাফার্জহোলসিমের সঙ্গে গ্যাস বিক্রয় চুক্তি করেছে সিলেটের গ্যাস বিতরণ সংস্থা জালালাবাদ গ্যাস পিএলসি। এ চুক্তির অধীনে সুনামগঞ্জের ছাতকে তাদের সিমেন্ট কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করবে জালালাবাদ। চুক্তি অনুসারে বিইআরসির নির্ধারিত হারে গ্যাসের দাম পরিশোধ করবে লাফার্জ। চুক্তিতে সই করেন লাফার্জহোলসিম পিলসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল চৌধুরী ও জালালাবাদের মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিবালয়) জিতেন্দ্র কুমার দাস।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মেট্রোরেলে আরও সহজ হচ্ছে টিকিট কাটা ও ভাড়া পরিশোধ

মেট্রোরেলের যাত্রীদের ভাড়া পরিশোধ আরও সহজ ও বিস্তৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন ব্যবস্থায় ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার (পাঞ্চ) করেও ভাড়া দেওয়া যাবে। এ ছাড়া একক যাত্রায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের সুযোগ থাকবে। নতুন এ ব্যবস্থার নাম ইউনিভার্সেল টিকেটিং সিস্টেম (ইউটিএস)। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এটি চালু করতে অন্তত ছয় মাস লাগবে। অবশ্য বর্তমানে চালু থাকা র‍্যাপিড ও এমআরটি পাস এবং একক যাত্রার কার্ডও কার্যকর থাকবে।

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটির একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন টিকিট–ব্যবস্থা ইউটিএস চালুর জন্য এরই মধ্যে প্রাথমিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ৩০টির মতো প্রতিষ্ঠান এতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এখন তাদের কাছ থেকে কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব চাওয়া হবে।

নতুন ব্যবস্থায় ভাড়া আদায়ের জন্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলোয় নতুন কিছু যন্ত্র বসানো হবে। সেগুলোতে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড পাঞ্চ করে ভাড়া দেওয়া যাবে।

ঠিকাদার নিয়োগ, যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে গ্রাহককে এ সেবা দিতে ছয় মাস লাগতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ব্যবস্থাটি চালু করতে ডিএমটিসিএল বিনিয়োগ করবে না। যন্ত্রপাতি বসানো, সফটওয়্যার স্থাপন ও লেনদেন সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। টিকিট বেচার অর্থ থেকে একটা অংশ ঠিকাদারকে দেওয়া হবে। তা কত হবে এখনো ঠিক হয়নি। ঠিকাদারদের কাছ থেকে পাওয়া দরপ্রস্তাবের ওপর এটি নির্ভর করবে।

ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে মেট্রোরেলের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে সেটি ‘ক্লোজ লুপ’। এটি শুধু জাপানের সনি কোম্পানির কার্ড পড়তে (রিডিং) পারে। ফলে ডেবিট–ক্রেডিট কার্ড বা অন্য ব্যবস্থা কাজ করে না। নতুন ব্যবস্থায় ভাড়া আদায়ের জন্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলোয় নতুন কিছু যন্ত্র বসানো হবে। সেগুলোতে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড পাঞ্চ করে ভাড়া দেওয়া যাবে।

বর্তমানে একক যাত্রার কার্ড স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনার পর পাঞ্চ করে ট্রেনে উঠতে হয়। যাত্রা শেষে স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় সেটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে আসতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে একক যাত্রার কার্ড কিনতে পারবেন। বিকাশ, রকেটসহ মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাপের মাধ্যমে যেভাবে বিভিন্ন পণ্য কেনা হয়, সেভাবে টিকিট কেনা যাবে। নির্দিষ্ট দূরত্বে ভ্রমণের টাকা পরিশোধ করলে গ্রাহক একটা কিউআর কোড তাঁর মোবাইল ফোনে পাবেন। সেটি স্টেশনে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় যন্ত্রে ধরতে (স্ক্যান) হবে।

যাত্রীর চাহিদা মতো কার্ড বা টিকিট সরবরাহ করা আমাদের দায়িত্ব। ভাড়া পরিশোধ যত সহজ হবে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য তত বাড়বে।ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ

বর্তমানে এমআরটি বা র‍্যাপিড পাসে যাতায়াত করলে ১০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়। ডিএমটিসিএলের তথ্য বলছে, মেট্রোরেলের ৫৫ শতাংশ যাত্রী র‍্যাপিড বা এমআরটি কার্ডে যাতায়াত করেন। বাকি ৪৫ শতাংশ ব্যবহার করেন একক যাত্রার কার্ড। দীর্ঘদিন ধরেই এমআরটি ও র‍্যাপিড কার্ডের সংকট চলছে। এ ছাড়া বর্তমান ব্যবস্থায় স্থায়ী কার্ডে টাকা শেষ হয়ে গেলে গ্রাহককে সাধারণত স্টেশনে গিয়ে রিচার্জ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডে টাকা থাকলে অনায়াসে যাতায়াত করা যাবে। এ ছাড়া একক যাত্রার কার্ডের জন্যও লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়াতে হবে না। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টিকিট কিনতে পারবেন যাত্রীরা।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাত্রীর চাহিদা মতো কার্ড বা টিকিট সরবরাহ করা আমাদের দায়িত্ব। ভাড়া পরিশোধ যত সহজ হবে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য তত বাড়বে।’ ভারত, সিঙ্গাপুর, হংকংসহ অনেক দেশে এ ব্যবস্থা চালু আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাত্রীসংখ্যা বাড়ানো এবং যাত্রীদের সহজে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।

মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা যতটা বিস্তৃত করা যায় ততটাই ভালো। মানুষ কার্ড চাইছে আর কর্তৃপক্ষ বিক্রি করতে পারছে না—এর মতো বাজে দৃষ্টান্ত তো হতে পারে না। কর্তৃপক্ষ নতুন যে ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে, তা সফল হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।বুয়েট পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ সামছুল হকদুর্ভোগ কমবে যাত্রীদের

শুরু থেকেই মেট্রোরেলের কার্ড সরবরাহ করছে জাপানের নিপ্পন সিগন্যাল কোম্পানি। প্রথম দিকে তারা একক যাত্রার কার্ড সরবরাহ করে ৩ লাখ ১৩ হাজার। এমআরটি কার্ড সরবরাহ করে ৭ লাখ ২৮ হাজারের মতো। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরোদমে মেট্রোরেল চালুর পরই এমআরটি ও একক যাত্রার সব কার্ড দ্রুত ফুরিয়ে যায়।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, এমআরটি পাস মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা আর কিনছে না। এর বদলে সরকারের আরেক সংস্থা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) র‍্যাপিড পাস কিনছে। তবে চাহিদা অনুসারে তারা কার্ড সরবরাহ করতে না পারার কারণে সংকট দেখা দেয়। অন্যদিকে একক যাত্রার অনেক কার্ড যাত্রীদের হাতে থাকা অবস্থায় বিকল হয়ে পড়েছে। কিছু কার্ড যাত্রীরা জমা না দিয়ে সঙ্গে নিয়ে গেছেন বলেও জানা গেছে। এ অবস্থায় একক যাত্রার কার্ডও পাওয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ নতুন করে চার লাখ একক যাত্রার কার্ড কেনার ফরমাশ দেয়। এর মধ্যে দুই লাখের মতো কার্ড এসেছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মেট্রোরেলের ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা যতটা বিস্তৃত করা যায় ততটাই ভালো। মানুষ কার্ড চাইছে আর কর্তৃপক্ষ বিক্রি করতে পারছে না—এর মতো বাজে দৃষ্টান্ত তো হতে পারে না। কর্তৃপক্ষ নতুন যে ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে, তা সফল হলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেট্রোরেলে আরও সহজ হচ্ছে টিকিট কাটা ও ভাড়া পরিশোধ
  • তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়াতে পারে
  • মোবাইল অ্যাপে জানা যাবে সারাদেশের বাজারদর
  • কোরবানির সময় ট্যানারিতে আসা ৯৮ শতাংশ কাঁচা চামড়া দাগযুক্ত ছিল: সিপিডির গবেষণা
  • ইসরায়েলে ৮ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান, বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত
  • চাঁদপুরে এক ইলিশ বিক্রি হলো ১৩ হাজার টাকায়
  • রাজধানীতে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে লোডশেডিং পরিস্থিতি
  • ইরানে মার্কিন হামলা, বিশ্ববাজারে বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের দাম
  • গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ কষ্টে আছে