চতুর্থ ইনিংসে ৩৭১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দিয়েও নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারছে না ভারতীয় শিবির। হেডিংলিতে যেন সময়টাই এখন ইংল্যান্ডের! ওপেনার বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রাউলির ব্যাটে এমন জমাট আক্রমণ শুরু হয়েছে, যেন ম্যাচের রাশ তাদের হাতেই।

ভারতের বোলিং আক্রমণের বিপরীতে কোনো ভয়ই যেন কাজ করছে না ইংলিশ উদ্বোধনী জুটির। উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ হয়েছে ১৮৭ রান। গড়েছেন দুর্দান্ত রেকর্ডও।

বেন ডাকেট নাম লেখালেন এক অনন্য কীর্তিতে। টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ইংল্যান্ডের পক্ষে সেঞ্চুরি করা ওপেনারদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ১৫ বছর পর। সর্বশেষ এমন কীর্তি গড়েছিলেন অ্যালিস্টার কুক, ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে। এবার হেডিংলিতে সেই ইতিহাস পুনরায় লিখলেন ডাকেট। ১২১ বলে ১৪ চারে সেঞ্চুরি করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

রাহুল-পন্তের জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় টার্গেট ছুঁড়ল ভারত

ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের একাদশ ঘোষণা

এটা তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। আর ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়। চাপের মুহূর্তে তার ব্যাটে এমন নির্ভার খেলা নিঃসন্দেহে ইংল্যান্ডকে এনে দিয়েছে সাহস আর ভারতকে ঠেলে দিয়েছে দুশ্চিন্তার মধ্যে। এ রিপোর্ট লেখার সময় তার সঙ্গে ক্রাউলি অপরাজিত আছেন ৬৫ রানে। ডাকেট ১০৬ রানে।

ভারত যখন মাঠের ভেতর ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের সামনে অসহায়, তখন মাঠের বাইরের সহায় হয়ে এসেছে প্রকৃতি। হঠাৎ বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। যার ফলে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল ভারত। তবে এই বিরতি সাময়িক। ইংল্যান্ড যদি এই ছন্দ ধরে রাখতে পারে তবে চতুর্থ ইনিংসে ৩৭১ রান তাড়া করার রেকর্ড গড়তেও আশ্চর্য হতো না। চাপটা এখন ভারতের কাঁধেই। বৃষ্টি যদি ম্যাচের বড় অংশ নষ্ট না করে, তাহলে সামনে এক উত্তেজনাপূর্ণ শেষ দিন অপেক্ষা করছে।

হেডিংলির এই টেস্ট যেন এক টানটান সাসপেন্সের গল্প—যেখানে প্রতিটি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। ভারত যেখানে ভাবছিল ম্যাচটা নিয়ন্ত্রণে, সেখানেই ডাকেট–ক্রাউলি দেখিয়ে দিলেন, ক্রিকেটের শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিত নয়। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, এই ম্যাচে শেষ হাসি কে হাসে; ইংল্যান্ড, ভারত নাকি বৃষ্টি?

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় প্রাইভেটকার ছিনতাই, জিপিএস ট্র্যাকিংয়ে যেভাবে টঙ্গি থেকে উদ্ধার

প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার বিকেলে আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানা থেকে তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে প্রাইভেটকারে ঢাকায় ফিরছিলেন চালক মনিরুল ইসলাম। বেড়িবাঁধের পঞ্চবটিতে যানবাহনের চাপে ধীরে ধীরে চলছিল গাড়ি। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। হঠাৎ প্রিমিও ব্রান্ডের প্রাইভেটকারের চালকের আসনের পাশ দিয়ে বাইরে থেকে রড ঢুকিয়ে দেয় এক দুর্বৃত্ত। এর পর গাড়ি সামনের দরজা খুলে আরও দু’জন চালককে মারধর করে বের করে আনেন। গাড়িতে থাকা বাকি তিন আরোহীকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে তারা। এরপর গাড়িটি ছিনতাই করে তারা পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনার সময় একই সড়কে একই কোম্পানির আরেকটি প্রাইভেটকার অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে আসছিলেন। সেই গাড়ির চালক রফিকুল ইসলাম ছিনতাইয়ের ঘটনাটি দেখতে পান। তখন নিজের প্রাইভেটকার রেখে দৌড়ে তিনি ছিনতাই হওয়া গাড়ির সামনের বনেটের ওপর লাফিয়ে উঠেন। তখন ছিনতাইকারী জোরে গাড়ি চালানোর পর বনেট থেকে তিনি ছিটকে পড়েন। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান শারমিন গ্রুপের প্রাইভেটকার ছিনতাইয়ের এমন ঘটনাটি ফোনে চালক ও হামলার শিকার অন্যরা জানান অফিসের অন্য কর্মকর্তাদের। এটি জানার পর কামরুজ্জামান ও সাজিদুল ইসলাম সম্রাট নামে দুই কর্মকর্তা গাড়ির জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করেন। তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান ছিলেন আশুলিয়ার কর্মস্থলে। আর সম্রাট উত্তরায় তার বাসার কাছাকাছি। 

সম্রাট সমকালকে জানান, ট্র্যাকিং সিস্টেমে দেখা যায়–গাড়িটি বেরিবাঁধ উত্তরার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে গাজীপুরের দিকে যাচ্ছিল। এরপর সম্রাট মোটরসাইকেলে গাড়ির পিছু নেন। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ কল করেন। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়। এর মধ্যে গ্রামীণ ফোনের সহায়তায় ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির ইঞ্জিন। তখন প্রাইভেটকারটি ছিল টঙ্গী কলেজ গেটের কাছাকাছি। ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার পর বিপাকে পড়েন ছিনতাইকারীরা। তারা রাস্তায় পাশে গাড়িটি রেখে পালিয়ে যান। এরপর শারমিন গ্রুপের লোকজন ও পুলিশ গিয়ে রাত সাড়ে ৯টায় গাড়িটি উদ্ধার করে।

শারমিন গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, কোম্পানির কয়েকজন একটি টিম হিসেবে কাজ করে। তারা গাড়ির গতিবিধির ওপর নজর রাখে, পরে তা উদ্ধার করা হয়েছে। গাজীপুরের পুলিশও সহযোগিতা করেছে। উদ্ধারের পর প্রাইভেটকারের মধ্যে চাপাতি, রডসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এর আগে প্রাইভেটকারে আমাদের প্রতিষ্ঠানের যে তিন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে তুরাগ থানায় জিডি করা হয়েছিল। গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার সব ধরনের সহযোগিতা করেন।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ