রপ্তানি বহুমুখীকরণের পরামর্শ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের
Published: 24th, June 2025 GMT
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে বাংলাদেশকে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক। এ ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের নির্বাহী পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ কথা বলেন সারাহ কুক। রাজধানীর গুলশানে আইসিসি বাংলাদেশের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা জানান।
সারাহ কুক জানান, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বাজার হিসেবে রয়ে গেছে। ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিমের (ডিসিটিএস) মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানিকে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্য। এই স্কিমের আওতায় বাংলাদেশ ২০২৯ সাল পর্যন্ত ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ পণ্য শূন্য শুল্কে যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করতে পারবে। আর ২০২৯ সালের পরও তৈরি পোশাকসহ ৯২ শতাংশ পণ্যে এই সুবিধা বজায় থাকবে বলে জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা, জলবায়ু অর্থায়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিমান পরিবহন খাতকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করেন সারাহ কুক। পাশাপাশি তিনি নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন ও যুক্তরাজ্যের বাজারে তাঁদের প্রবেশাধিকার বাড়াতে বিভিন্ন ব্রিটিশ উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
বৈঠকে আইসিসি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দক্ষতা উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষায় বৃত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। পাশাপাশি বাংলাদেশের আর্থিক সেবা, জ্বালানি ও শিক্ষা খাতেও ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সহসভাপতি এ কে আজাদ ও নাসের এজাজ বিজয়; নির্বাহী বোর্ড সদস্য আবদুল হাই সরকার, আফতাব উল ইসলাম, আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর জ য র আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।