অবকাঠামো অপ্রতুল, ঝুঁকিতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা
Published: 24th, June 2025 GMT
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাতের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়ছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল। বাংলাদেশেও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ দেশের জ্বালানি চাহিদার প্রায় পুরোটা আমদানিনির্ভর। অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি সংরক্ষণ অবকাঠামো পর্যাপ্ত হলে যুদ্ধের মতো আপৎকালে দাম ও সরবরাহ-সংক্রান্ত সংকট মোকাবিলা করা সহজ হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জ্বালানি অবকাঠামো খুবই অপ্রতুল। জ্বালানি তেল মজুতের সক্ষমতা রয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ দিনের। আর এলএনজি মজুতের সক্ষমতা মাত্র দুই থেকে তিন দিনের। ফলে বৈশ্বিকভাবে কোনো সংকট হাজির হলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
বাংলাদেশে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত মিলে বছরে প্রায় ৯০ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত তেল এবং আটটি দেশ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পরিশোধিত তেল আমদানি করে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাহিদা অনুসারে ফার্নেস অয়েল আমদানি করে। দেশের মোট গ্যাস সরবরাহের ৩০ শতাংশ এলএনজি থেকে আসে। অধিকাংশ এলএনজি কাতার ও ওমান থেকে; রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজিও আমদানি করা হয়।
জানা যায়, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত মিলে ১৪ লাখ টন জ্বালানি তেল মজুত করার সক্ষমতা রয়েছে বাংলাদেশের, যা দিয়ে মাত্র ৪০-৪৫ দিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। অন্যদিকে সাগরে অবস্থিত দুই এলএনজি টার্মনালের প্রতিটির মজুতের সক্ষমতা ২ লাখ ৩৮ হাজার ঘনফুট। নিয়মিত এলএনজি কার্গো না এলে এক-দুই দিনেই সরবরাহ কমে গ্যাস সংকট চরম আকার নেয়।
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহতের বিষয় নির্ভর করবে যুদ্ধের মাত্রার ওপর। স্বল্প মেয়াদে জ্বালানির ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের। তবে সংঘাত দীর্ঘ হলে আমদানি বাধাগ্রস্ত হবে, যা দেশের অর্থনীতি ও জ্বালানি খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির আলোকে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বাড়ানো, বিকল্প উৎস নিশ্চিত ও দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে মনোযোগী হতে হবে। অন্যথায়, আপৎকালীন পরিস্থিতি দেশের জ্বালানি ব্যবস্থাপনাকে অচল করে দিতে পারে।
জানতে চাইলে বিপিসির এক কর্মকর্তা জানান, জ্বালানি তেলের মজুত সক্ষমতা বাড়াতে ১৩ হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প চলমান। যদিও প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ হয়নি। এগুলো শেষ হলে আরও ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮০০ টন জ্বালানি তেলের মজুত সক্ষমতা বাড়বে। এটি দিয়ে ৬০ দিন পর্যন্ত চলা সম্ভব হবে, যেটি আন্তর্জাতিক মানের।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, সমুদ্রে ভাসমান নতুন একটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে সরকার কাজ করছে। পাশাপাশি স্থলভাগে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ রয়েছে। মাতারবাড়িতে এক লাখ টনের এলপিজি কারখানা তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর শ ধ ত অবক ঠ ম সরবর হ সরক র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বৃহস্পতিবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তর কাজের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার (৬ আগস্ট) তিতাস কর্তৃপক্ষ এক বার্তায় এ তথ্য জানায়।
বার্তায় বলা হয়, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জ এলাকার সাইনবোর্ড-পাসপোর্ট অফিস-মৌচাক বাসস্ট্যান্ড ও বউ বাজার ব্রিজ-গোদনাইল-এনায়েতনগর-সিদ্ধিরগঞ্জ- নারায়ণগঞ্জ অংশে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট ৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ, চিটাগাং রোড, মিজমিজি, চৌধুরী বাড়ি, বাতেন পাড়া, মৌচাক, পাসপোর্ট অফিস, লাকি বাজার, বউ বাজার, হাজিগঞ্জ থেকে ওয়াবদারপুল ও চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধের কথা তিতাসের বার্তায় বলা হয়। সেই সঙ্গে এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ