দুইজন মানুষ একসঙ্গে সুখে, দুখে, আনন্দ, উদযাপনে একসঙ্গে পথ চলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দাম্পত্য সম্পর্ক শুরু করেন। কিন্তু দেখা যায় যে একজন তৃতীয় জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কেন হয় এমন? 

বার বার ক্ষমা করা: ‘কার সঙ্গে কথা বলছিলে’? এই প্রশ্নের উত্তর যদি হয় ‘তেমন কেউ না’, সেটিকে সম্পর্কের জন্য রেড ফ্ল্যাগ হিসেবে ধরুন। হতে পারে আপনার সঙ্গী প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই ঘটনা যদি বার বার ঘটতে থাকে আপনি হয়তো এক সময় জেনে যাবেন, আসলে কার সাথে কথা হয়। তখন তিনি হয়তো ক্ষমা চাইবেন। ক্ষমা করলেও- কাউকে নতুন করে বিশ্বাস করাটা খুবই কঠিন। এমনকি কখনো হয়তো অসম্ভবও। সঙ্গী যদি ক্ষমা চেয়ে একই ভুল করেন, আরেকজন যদি বার বার ক্ষমা করতেই থাকেন এ নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন বোধ না করেন তাহলে প্রতারণার বিষয়টি বার বার ঘটতে থাকে। সঙ্গী প্রতরণার আশ্রয় নিচ্ছে, এমনটা বুঝলে তাকে প্রশ্ন করা উচিত। তাকে প্রশ্ন করা উচিত যে, তোমার জায়গায় আমি হলে কী করতে?

সঙ্গীর কথা শোনার সময় না থাকা: আপনি যদি সঙ্গীর কথায় মনোযোগ না দেন, তিনি ভেতরে ভেতরে হাঁপিয়ে উঠবেন। নিজের কথা বলার জন্য অন্য কাউকে ঠিকই খুঁজে নেবেন। মানুষ যখন নিজের সুখ, দুখের কথা অকপটে কারও সঙ্গে শেয়ার করে তখন বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কখনও কখনও বন্ধুত্বের সম্পর্ক প্রেমেও গড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়। সুতরাং সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন।

আরো পড়ুন:

আপনার সামনে কেউ ধীরে হাঁটলেই রাগ হয়?

যে ধরনের প্রেমকে ‘পাপি- লাভ’ বলা হয়

যোগাযোগে ছন্দপতন হলে: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যোগাযোগ ছন্দপতন হলে সঙ্গী প্রতারণায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধরে নিতে পারেন। সঙ্গীর হয়তো অফিসে লাঞ্চ ব্রেকে নিয়মিত ফোনে কথা হতো। এখন আর হচ্ছে না। তিনি হয়তো বাসা থেকে আগে আগে বের হচ্ছেন, দেরি করে বাসায় ফিরছেন। অফিসের প্রয়োজন দেখিয়ে দূরে ভ্রমণ করছেন। এমন অবস্থা তৈরি হলে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমানোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত। 

মানসিক বিচ্ছিন্নতা: সঙ্গী যদি মনে করেন তিনি যথেষ্ট ভালবাসা পাচ্ছেন না, বা সঙ্গী তার দিকে ভালভাবে তাকান না, অথবা সঙ্গী সহানুভূতিশীল নন তখন তিনি তৃতীয়জনের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন। সঙ্গীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশে কৃপণতা থাকা উচিত নয়।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গর্ভবতী নারীদের প্যারাসিটামল না খাওয়ার পরামর্শ ট্রাম্পের, চিকিৎসকদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গর্ভবতী নারীদের জনপ্রিয় ব্যথানাশক ওষুধ টাইলেনল, যা প্যারাসিটামল নামেও পরিচিত, এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ওষুধটির সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক থাকতে পারে।

এদিকে, ট্রাম্পের এমন মন্তব্য চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে। কারণ প্যারাসিটামলের সঙ্গে অটিজমের সংযোগ এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণত নয়। 

আরো পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূস নিজের স্বার্থে পার্টিগুলোকে ব্যবহার করছেন, দাবি সামান্তার

নির্বাচনের জন্য দেশ প্রস্তুত: প্রধান উপদেষ্টা

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এফডিএ) সম্প্রতি ঘোষণা দেয় যে, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের প্যাকেজে এমন এক লেবেল যুক্ত করা হবে, যেখানে উল্লেখ থাকবে যে এই ওষুধ শিশুদের অটিজম ও অতি-চঞ্চলতা বা মনোযোগহীনতার (এডিএইচডি) ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

এই সতর্কবার্তার পরপরই ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “টাইলেনল খাবেন না। খাবেন না। যেভাবেই হোক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।” তবে তিনি আরো বলেন, “কখনো কখনো হয়তো এই ওষুধ খেতে হতে পারে। তখন সেটা নিয়ে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” 

ট্রাম্প শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন যে, হাম, মামস ও রুবেলার মতো টিকা একসঙ্গে না দিয়ে আলাদা আলাদা দেওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমার মতে, হাম, মামস ও রুবেলা- তিনটি টিকা আলাদাভাবে দেওয়া উচিত। এগুলো একসঙ্গে নিলে সমস্যা হতে পারে।”

এদিকে, ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস ও আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামলকে গর্ভাবস্থায় নারীদের জন্য নিরাপদ ওষুধ হিসেবে সুপারিশ করে আসছে।

বিশ্বজুড়ে প্রায় অর্ধেক গর্ভবতী নারী ব্যথা কমানো বা জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল সেবন করেন বলে ধারণা করা হয়।বিভিন্ন দেশে এই ওষুধ ডাইম্যান, প্যানাডল ও প্যানাম্যাক্সসহ নানা নামে বিক্রি হয়। গর্ভবতী নারী ও ভ্রূণ উভয়ের জন্যই জ্বর ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

আমেরিকান কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টসের প্রেসিডেন্ট স্টিভেন জে. ফ্লেইশম্যান ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় ওষুধ সেবনের সময় সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং তার পাশাপাশি উপকারিতা দুটোই বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। অসংখ্য গবেষণার ফলাফল বলছে, গর্ভবতী নারীদের সুস্থতায় অ্যাসিটামিনোফেন (প্যারাসিটামল) গুরুত্বপূর্ণ ও নিরাপদ ভূমিকা রাখে।”

যুক্তরাষ্ট্রে প্যারাসিটামল ‘অ্যাসিটামিনোফেন’ নামে পরিচিত। 

আল-জাজিরা জানিয়েছে, কিছু গবেষণায় প্যারাসিটামল ও অটিজমের মতো স্নায়বিক সমস্যার মধ্যে সম্পর্ক পাওয়া গেলেও, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় আকারের ও শক্তিশালী গবেষণাগুলোতে এ ধরনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

গত বছর দ্য জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে সুইডেনের গবেষকদের বড় আকারের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় ব্যথানাশক ওষুধের সংস্পর্শে আসা শিশুদের সঙ্গে ব্যথানাশক ওষুধের সংস্পর্শে না আসা তাদের ভাইবোনদের তুলনা করার সময় কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি।

 

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রসম্যান স্কুল অব মেডিসিনের বায়োএথিসিস্ট আর্থার ক্যাপলান ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপগুলোকে জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘অত্যন্ত নেতিবাচক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অটিজম নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল তথ্য, প্রমাণের অভাব, বাজে পরামর্শ ও একটি ভুয়া ব্যাখ্যা।’ তিনি আরো বলেন, “মূলধারার চিকিৎসাবিদ্যা ট্রাম্পের এই মন্তব্য উপেক্ষা করবে। এখন যুক্তরাষ্ট্রে রোগীরা ফেডারেল বিজ্ঞানকে ভরসা করতে পারছেন না, বরং অন্য নির্ভরযোগ্য উৎসে তাকাতে হচ্ছে।”

অটিজম বিশেষজ্ঞ ও লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক ক্যাথেরিন লর্ড বলেন, “আমি মনে করি চিকিৎসক সমাজ দৃঢ়ভাবে একমত হবে যে, গর্ভাবস্থায় টাইলেনল (প্যারাসিটামল) অটিজমের কারণ হয় না। তবে গর্ভবতী নারীদেরকে ওষুধের বিষয়ে সবসময়ই সতর্ক থাকা উচিত।”

তিনি আরো বলেন, “কিন্তু এটাও বুঝতে হবে, গর্ভবতী নারীর উচ্চ জ্বর বা ব্যথা থাকা ভ্রণের জন্যও ভালো নয়, তাই তাদের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।”

এদিকে সোমবার ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (এফডিএ) নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কিছু গবেষণায় প্যারাসিটামল ব্যবহার ও অটিজমের মধ্যে ‘সম্পর্ক’ পাওয়া গেছে, বিশেষ করে যখন গর্ভাবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে এটি সেবন করা হয়।

তবে এফডিএ স্পষ্ট করেছে যে, এর কারণ বা যোগসূত্র এখনো নিশ্চিত নয় এবং বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে এর বিপরীত ফলাফলও রয়েছে।

সংস্থাটি আরো বলেছে, ‘অ্যাসিটামিনোফেন (প্যারাসিটামল) গর্ভাবস্থায় জ্বর কমানোর জন্য অনুমোদিত একমাত্র ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ এবং গর্ভবতী নারীর উচ্চ জ্বর সন্তানের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।’

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস বলছে, অটিজমের কোনো একক কারণ জানা নেই। এটি জিনগত ও পরিবেশগত নানা উপাদানের মিলিত প্রভাবে ঘটে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘর বাঁচল পাখিগুলোর
  • গর্ভবতী নারীদের প্যারাসিটামল না খাওয়ার পরামর্শ ট্রাম্পের, চিকিৎসকদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
  • টিকার সঙ্গে আসলে কি অটিজমের সম্পর্ক আছে, কেন ট্রাম্প এমন বলছেন
  • চাঁদে কী ভূমিকম্প হয়?
  • ঢাকায় রাতভর বৃষ্টি, সকালেই সাঁঝের আবহ