নূরুল হুদাকে হেনস্তা: স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতার জামিন
Published: 25th, June 2025 GMT
মব সৃষ্টি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরানোসহ মারধরের মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন জনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন-ঢাকা মহানগর উত্তরের স্বেচ্ছাসেবক দলের মোজাম্মেল হক ঢালী, উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ এবং একই থানার যুগ্ম আহ্বায়ক মো.
বুধবার (২৫ জুন) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহ শুনানি শেষে তাদের জামিনের আদেশ দেন।
গত রবিবার রাজধানীর উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনে। জুতার মালা পরিয়ে তাকে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করেন। জুতা দিয়ে নূরুল হুদাকে আঘাত ও ডিম নিক্ষেপ করে। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সজীব হাসান মঙ্গলবার মামলা করেন।
মামলার আগে সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল হানিফকে উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। হানিফের পক্ষে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে জামিন শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন।
এদিকে এদিন মোজাম্মেল হক ঢালী এবং কাইয়ুম আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এনামুল হক।
হানিফের পক্ষে তার আবদুল ফারুক জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিনযোগ্য ধারায় অপরাধের অভিযোগ থাকায় আগামী ধার্য তারিখ ২৮ জুলাই পর্যন্ত ৫০০ টাকা মুচলেকায় তাদের জামিনের আদেশ দেন।
ঢাকা/এম/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত
কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু ও উখিয়া—এই তিন উপজেলার সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চল এবং সন্নিকটে অবস্থিত নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ওই বন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত ইজারাগ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি এবং বালু উত্তোলনের ফলে বনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত মাসে রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল হচ্ছে চকরিয়ার খুটাখালী মৌজার খুটাখালী-১; রামুর ধোলিরছড়া মৌজার ধলিরছড়া এবং পানিরছড়া খাল; উখিয়ার উখিয়া ঘাট মৌজার বালুখালী-১, উয়ালাপালং এবং রাজাপালং মৌজার দোছড়ি বালুমহাল, পালংখালী মৌজার পালংখালী; রাজাপালং মৌজার হিজলিয়া, ধোয়াংগারচর ও কুমারিয়ারছড়া।
আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।
বেলা জানায়, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ২৭টি বালুমহালের তালিকা প্রস্তুত করে ২০২৫-২৬ (১৪৩২ বঙ্গাব্দ) সালের জন্য ইজারার উদ্দেশ্যে গত ১১ মার্চ দরপত্র আহবান করেন। ২৭টি বালুমহালের মধ্যে ওই ৯টি বালুমহাল সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনের মধ্যে এবং কাছাকাছি। তাই সংশ্লিষ্ট বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনা করে ওই বালুমহালগুলো ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এই অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চলমান। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বন রক্ষায় রিটটি করে।
নয়টি বালুমহাল ইজারার জন্য তালিকাভুক্ত করা সংবিধান ও অন্যান্য আইনের পরিপন্থী বলে কেন তা বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান বেলার অন্যতম আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই বালুমহালগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা এবং ইজারাযোগ্য বালুমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বালু উত্তোলনের ক্ষতি নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।