স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মাদক নির্মূলে সবার আগে এর পেছনে থাকা গডফাদারদের ধরতে হবে। তাহলেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কর্মসূচি সাফল্য পাবে। শুধু মাদকের বাহকদের ধরে লাভ নেই।

‘মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে বুধবার (২৫ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ৩২টি বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আমাদের দুটি বড় শত্রু রয়েছে—এক নম্বর হচ্ছে দুর্নীতি এবং আরেকটি হলো মাদক৷ মাদক এখন সমাজের সর্বত্র ও সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে ছেয়ে গেছে। মাদক থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সচেতনতা। শুধু মাদক নিরাময়কেন্দ্রের মাধ্যমে এটি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, মাদক যেন বাহির থেকে দেশে ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। মাদক পাচারের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাদকাসক্তি নিরাময়ের খরচ এখন অনেক বেশি, উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, গরিবের পক্ষে এটা বহন করা অনেক কষ্টসাধ্য। 

মাদকসেবীদের সংখ্যা যেন ধীরে ধীরে কমে আসে, এ ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি জানান, গত একনেক সভায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ‘সাতটি বিভাগীয় শহরে সাতটি বিভাগীয় মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, যেভাবেই হোক, আমাদের সমাজ থেকে মাদককে উচ্ছেদ করতে হবে৷

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো.

খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে উপদেষ্টা ঢাকা মেট্রোপলিটন এরিয়াসহ ঢাকা বিভাগের ৩২টি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রকে ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ময়ক ন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের চেষ্টা থাকবে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রচুর সভা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই গত এক মাসে দুটি সভা করেছেন। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এই সংখ্যা আরও ৫০ হাজার বাড়তে পারে। সেনাবাহিনী ৬০ হাজার সদস্য দেবে বলেছে। সেখানে আরও বেশি সদস্য লাগতে পারে।

সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করেন শফিকুল আলম। সেখানে এক সাংবাদিক আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন চলছে জানতে চাইলে প্রেস সচিব এ কথা বলেন।

নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য কী জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। সরকারের চেষ্টা থাকবে সবচেয়ে ভালো একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনা। তিনি (হাসিনা) যাতে ন্যায়বিচার পান, সেটি নিশ্চিত করা হবে। আল–জাজিরা ও বিবিসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তিনি কী করেছেন। প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিশ্ববাসী এখন তা জানে। সরকার আশা করে যে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসবেন এবং বিচারের মুখোমুখি হবেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সাংবাদিক জানতে চান, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আগামীকাল (৮ আগস্ট)। এ সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য কী?

আরও পড়ুনদ্বিতীয় অধ্যায় শুরু আজ থেকে, প্রধান কাজ সুষ্ঠু নির্বাচন: প্রেস সচিব১ ঘণ্টা আগে

জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘আপনি যদি বিগত সময়ের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন, অপরাধ ও খুন কম হচ্ছে। একটা–দুইটা খুন হলেই বলা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। প্রতি মাসে অপরাধ ও খুনের চিত্র তুলে ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপনারা সেখান থেকে তথ্য নেন। দেখবেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী।’

আর প্রশাসন ভেঙে পড়লে গত এক বছরে এত অর্জন হতো কি না, পাল্টা প্রশ্ন রাখেন শফিকুল আলম। তিনি অর্জনের হিসাব দিতে গিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর সময় দেশে খাদ্যের মজুত ছিল ১৮ লাখ টন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ টনে। প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। রিজার্ভ বাড়ছে। এসব কারা করছে? আমলাতন্ত্র করেছে। আমলাতন্ত্র ভেঙে পড়লে ছয়টি বন্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হতো না।

এ সময় আরেক সাংবাদিক জানতে চান, পুলিশ যদি সক্রিয়ই হয়, তাহলে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামতে হলো কেন? তখন প্রেস সচিব বলেন, এ ধরনের অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
  • ২দিনে ৫ হত্যা, সরকার দায় এড়াতে পারে না: গণসংহতি আন্দোলন 
  • এক সপ্তাহে দেশজুড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ১৩১
  • শেখ হাসিনা একদিন বিচারের মুখোমুখি হবেন: প্রেস সচিব
  • সরকারের চেষ্টা থাকবে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া: প্রেস সচিব