বাংলাদেশে আইনিভাবে কারা অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে—এই প্রশ্নে বিতর্ক দিন দিন বাড়ছে। ব্যক্তিগতভাবে ভারত থেকে কোয়ালিফাই করা একজন সনদধারী হিসাববিদ বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) ও কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএমএ) হিসেবে আমি উভয় পেশার গুরুত্ব ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টরা প্রতিষ্ঠানের খরচ নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা এবং কার্যক্রম (পারফরম্যান্স) বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে নিরীক্ষা বা অডিট পরিচালনার জন্য প্রয়োজন একটা সুনির্দিষ্ট আইনি অধিকার, কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা, যা কেবল পেশাদার হিসাববিদদের পক্ষেই সম্ভব।

সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা হচ্ছে এমন একটি নিরীক্ষা, যা কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে আইন অনুসারে বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়। বাংলাদেশের কোম্পানি (সংশোধিত) আইন, ২০২০, আয়কর আইন ২০২৩, এনজিও নীতিমালা, সোসাইটি নিবন্ধন আইন, ট্রাস্ট ও ক্লাবের উপধারা, ব্যাংক ও যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) প্রথা, সবকিছুতেই পেশাদার হিসাববিদদের মাধ্যমে কোম্পানির নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক হিসেবে নির্ধারিত। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অর্ডার ১৯৭৩ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে, কেবল দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ বা আইসিএবির সদস্যরা এই দায়িত্ব পালনের আইনগত অধিকার রাখেন।

এটি আন্তর্জাতিক রীতিনীতিরও প্রতিফলন। যেমন, ভারতে শুধু সনদধারী হিসাববিদেরাই সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা করতে পারেন। যুক্তরাজ্যে চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস বা সিআইএমএ সদস্যদের নিরীক্ষা স্বাক্ষরের অনুমতি নেই। আর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস বা সিপিও ছাড়া কেউ নিরীক্ষা করতে পারেন না।

বাংলাদেশে আইসিএবির তিন বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণের পর আরও দুই বছর বাস্তব অভিজ্ঞতা লাগে পেশাদার হিসেবে কার্যক্রম শুরুর সনদ পেতে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) আন্তর্জাতিক শিক্ষা মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ও নিরীক্ষা তত্ত্বাবধানকারী বা সুপারভাইজারের অধীনে এই বাস্তব অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে হয়। কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস পেশাজীবীদের ব্যাপক হিসাবরক্ষণ ও খরচ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কখনো নিরীক্ষাসংক্রান্ত হাতে-কলমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিকল্প হতে পারে না।

বাংলাদেশে আইসিএবির ব্যাপক প্রশিক্ষণ কাঠামোর কঠোরতা অন্যান্য কিছু পেশার সঙ্গেও আমরা তুলনা করতে পারি। যেমন চিকিৎসকদের এক বছরের ইন্টার্নশিপ ও আইনজীবীদের দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া উচ্চ আদালতে মামলায় আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করা যায় না।

আইসিএবি বাংলাদেশে  ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের একমাত্র সদস্য প্রতিষ্ঠান, যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিরীক্ষা সনদ প্রদান ও বাতিল করতে পারে। সনদধারী হিসাববিদ বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ছাড়া অন্য কোনো পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি নয় এমন প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব আইনিভাবে ভিত্তিহীন এবং আন্তর্জাতিক মানের পরিপন্থী।

অনেকে দাবি করেন, দুর্বল নিরীক্ষা মান বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমিয়ে দিচ্ছে বা অর্থ পাচার বাড়াচ্ছে। বাস্তবে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বৈশ্বিক গণমাধ্যম কখনো নিরীক্ষা মানকে বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করেনি। এনরন কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে বিগ ফোর ফার্মগুলোর ওপর সাম্প্রতিক নজরদারিও প্রমাণ করে, এ ধরনের ব্যর্থতা উন্নত দেশেও ঘটে। তবে এগুলো ব্যতিক্রম ঘটনা, যা নিয়মিত ঘটে না। আর অর্থ পাচার প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব নিরীক্ষকদের নয়, বরং এই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের। তাই এক-দুটি ব্যতিক্রম ঘটনার দুর্বলতা তুলে ধরে সনদধারী হিসাববিদ ছাড়া অন্যদের নিরীক্ষার অধিকার দেওয়া যুক্তিসংগত নয়। এমন অনুমতি দিলে প্রশিক্ষণ, আইনি কাঠামো ও মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, যা সামগ্রিকভাবে নিরীক্ষার গুণগত মান ক্ষুণ্ন করবে।

তবে সাম্প্রতিককালে শীর্ষস্থানীয় কিছু প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা ঘিরে বিতর্ক প্রমাণ করে, আমাদের এখন জরুরি ভিত্তিতে নিরীক্ষার মান ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী তদারকি সংস্থার প্রয়োজন। বাংলাদেশের দরকার এখন পেশাগত দ্বন্দ্ব নয়, বরং ভারতের ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি বা এনএফআরএ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক কোম্পানি অ্যাকাউন্টিং ওভারসাইট বোর্ড বা পিসিএওবির আদলে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল বা এফআরসিকে শক্তিশালী করা। আইসিএবি ও আইসিএমএবি যৌথভাবে নিরীক্ষার মানোন্নয়ন, এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল ও গভর্ন্যান্স বা ইএসজি রিপোর্টিং, ডিজিটাল ফাইন্যান্স ও পাবলিক খাত সংস্কারে সহযোগিতা করতে পারে। আইসিএবি এরই মধ্যে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টসদের জন্য সনদধারী হিসাববিদ হওয়ার পথ উন্মুক্ত করেছে। যেখানে কিছু কোর্সে ছাড় থাকলেও নিরীক্ষা প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক।

সবশেষে আমাদের মনে রাখতে হবে, নিরীক্ষা কোনো পেশাগত মর্যাদার লড়াই নয়, এটি একটি আইনি ও পেশাগত কাঠামোর বিষয়। যার মূল লক্ষ্য হলো আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। তাই সংস্কার হবে আইন, আন্তর্জাতিক মান ও আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে। অযাচিত চাপ প্রয়োগ, লবিং কিংবা আবেগের ভিত্তিতে নয়।

লেখক: দেশি-বিদেশি বেশ কিছু কোম্পানির পরিচালকের দায়িত্ব রয়েছেন।

মাসুদ খান, চেয়ারম্যান, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার

লেখার মতামত লেখকের নিজস্ব অবস্থান

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ র ট র ড অ য ক উন ট য ন ট হ স বব দ সনদধ র

এছাড়াও পড়ুন:

আইনি কাঠামো ও আন্তর্জাতিক মানই হতে হবে চূড়ান্ত নির্ধারক

বাংলাদেশে আইনিভাবে কারা অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে—এই প্রশ্নে বিতর্ক দিন দিন বাড়ছে। ব্যক্তিগতভাবে ভারত থেকে কোয়ালিফাই করা একজন সনদধারী হিসাববিদ বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) ও কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএমএ) হিসেবে আমি উভয় পেশার গুরুত্ব ও অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টরা প্রতিষ্ঠানের খরচ নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা এবং কার্যক্রম (পারফরম্যান্স) বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তবে নিরীক্ষা বা অডিট পরিচালনার জন্য প্রয়োজন একটা সুনির্দিষ্ট আইনি অধিকার, কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা, যা কেবল পেশাদার হিসাববিদদের পক্ষেই সম্ভব।

সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা হচ্ছে এমন একটি নিরীক্ষা, যা কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে আইন অনুসারে বাধ্যতামূলকভাবে করতে হয়। বাংলাদেশের কোম্পানি (সংশোধিত) আইন, ২০২০, আয়কর আইন ২০২৩, এনজিও নীতিমালা, সোসাইটি নিবন্ধন আইন, ট্রাস্ট ও ক্লাবের উপধারা, ব্যাংক ও যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) প্রথা, সবকিছুতেই পেশাদার হিসাববিদদের মাধ্যমে কোম্পানির নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক হিসেবে নির্ধারিত। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অর্ডার ১৯৭৩ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে, কেবল দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ বা আইসিএবির সদস্যরা এই দায়িত্ব পালনের আইনগত অধিকার রাখেন।

এটি আন্তর্জাতিক রীতিনীতিরও প্রতিফলন। যেমন, ভারতে শুধু সনদধারী হিসাববিদেরাই সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষা করতে পারেন। যুক্তরাজ্যে চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস বা সিআইএমএ সদস্যদের নিরীক্ষা স্বাক্ষরের অনুমতি নেই। আর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস বা সিপিও ছাড়া কেউ নিরীক্ষা করতে পারেন না।

বাংলাদেশে আইসিএবির তিন বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণের পর আরও দুই বছর বাস্তব অভিজ্ঞতা লাগে পেশাদার হিসেবে কার্যক্রম শুরুর সনদ পেতে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) আন্তর্জাতিক শিক্ষা মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ও নিরীক্ষা তত্ত্বাবধানকারী বা সুপারভাইজারের অধীনে এই বাস্তব অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে হয়। কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস পেশাজীবীদের ব্যাপক হিসাবরক্ষণ ও খরচ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কখনো নিরীক্ষাসংক্রান্ত হাতে-কলমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিকল্প হতে পারে না।

বাংলাদেশে আইসিএবির ব্যাপক প্রশিক্ষণ কাঠামোর কঠোরতা অন্যান্য কিছু পেশার সঙ্গেও আমরা তুলনা করতে পারি। যেমন চিকিৎসকদের এক বছরের ইন্টার্নশিপ ও আইনজীবীদের দুই বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া উচ্চ আদালতে মামলায় আইনজীবী হিসেবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করা যায় না।

আইসিএবি বাংলাদেশে  ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের একমাত্র সদস্য প্রতিষ্ঠান, যা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিরীক্ষা সনদ প্রদান ও বাতিল করতে পারে। সনদধারী হিসাববিদ বা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ছাড়া অন্য কোনো পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানকে কোম্পানি নয় এমন প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাব আইনিভাবে ভিত্তিহীন এবং আন্তর্জাতিক মানের পরিপন্থী।

অনেকে দাবি করেন, দুর্বল নিরীক্ষা মান বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমিয়ে দিচ্ছে বা অর্থ পাচার বাড়াচ্ছে। বাস্তবে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বৈশ্বিক গণমাধ্যম কখনো নিরীক্ষা মানকে বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত করেনি। এনরন কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে বিগ ফোর ফার্মগুলোর ওপর সাম্প্রতিক নজরদারিও প্রমাণ করে, এ ধরনের ব্যর্থতা উন্নত দেশেও ঘটে। তবে এগুলো ব্যতিক্রম ঘটনা, যা নিয়মিত ঘটে না। আর অর্থ পাচার প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব নিরীক্ষকদের নয়, বরং এই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের। তাই এক-দুটি ব্যতিক্রম ঘটনার দুর্বলতা তুলে ধরে সনদধারী হিসাববিদ ছাড়া অন্যদের নিরীক্ষার অধিকার দেওয়া যুক্তিসংগত নয়। এমন অনুমতি দিলে প্রশিক্ষণ, আইনি কাঠামো ও মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, যা সামগ্রিকভাবে নিরীক্ষার গুণগত মান ক্ষুণ্ন করবে।

তবে সাম্প্রতিককালে শীর্ষস্থানীয় কিছু প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা ঘিরে বিতর্ক প্রমাণ করে, আমাদের এখন জরুরি ভিত্তিতে নিরীক্ষার মান ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী তদারকি সংস্থার প্রয়োজন। বাংলাদেশের দরকার এখন পেশাগত দ্বন্দ্ব নয়, বরং ভারতের ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অথরিটি বা এনএফআরএ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক কোম্পানি অ্যাকাউন্টিং ওভারসাইট বোর্ড বা পিসিএওবির আদলে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল বা এফআরসিকে শক্তিশালী করা। আইসিএবি ও আইসিএমএবি যৌথভাবে নিরীক্ষার মানোন্নয়ন, এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল ও গভর্ন্যান্স বা ইএসজি রিপোর্টিং, ডিজিটাল ফাইন্যান্স ও পাবলিক খাত সংস্কারে সহযোগিতা করতে পারে। আইসিএবি এরই মধ্যে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টসদের জন্য সনদধারী হিসাববিদ হওয়ার পথ উন্মুক্ত করেছে। যেখানে কিছু কোর্সে ছাড় থাকলেও নিরীক্ষা প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক।

সবশেষে আমাদের মনে রাখতে হবে, নিরীক্ষা কোনো পেশাগত মর্যাদার লড়াই নয়, এটি একটি আইনি ও পেশাগত কাঠামোর বিষয়। যার মূল লক্ষ্য হলো আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশ ও জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। তাই সংস্কার হবে আইন, আন্তর্জাতিক মান ও আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে। অযাচিত চাপ প্রয়োগ, লবিং কিংবা আবেগের ভিত্তিতে নয়।

লেখক: দেশি-বিদেশি বেশ কিছু কোম্পানির পরিচালকের দায়িত্ব রয়েছেন।

মাসুদ খান, চেয়ারম্যান, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার

লেখার মতামত লেখকের নিজস্ব অবস্থান

সম্পর্কিত নিবন্ধ