‘‘আমার ছেলে জীবিত না মৃত— কেউ বলে না। গুম হয়ে গেছে ১১ বছর। আমি বিচার চাই। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মিনতি করছি, আমার সন্তানের খোঁজ এনে দিন।’’ — এই আর্তি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন গুমের শিকার ফেনীর যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনের মা রওশন আরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী সংহতি দিবসে ফেনী প্রেস ক্লাবে আয়োজিত মানববন্ধন ও মতবিনিময় সভায় এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ সাংবাদিক ও ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম আবদুর রহিম। সঞ্চালনা করেন অধিকার ফেনী ইউনিটের ফোকাল পার্সন সাংবাদিক নাজমুল হক শামীম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকারকর্মী শেখ আশিকুন্নবী সজিব।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রওশন আরা বলেন, “২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি আমার ছেলে যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমান রিপনকে র্যাব পরিচয়ে ধরে নিয়ে যায়। থানায় মামলা নিতে চায়নি। আজ ১১ বছর পরও আমি জানি না আমার ছেলে কোথায়, বেঁচে আছে কি-না।”
তিনি আরো বলেন, “আমি চাই, আর কোনো মা যেন আমার মতো সন্তানহারা না হয়। এই অন্তর্বর্তী সরকারকে বলছি, দয়া করে বিচার করুন, আমার ছেলে ফিরিয়ে দিন।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাপ্তাহিক আনন্দ তারকার সম্পাদক এম মামুনুর রশিদ, শিক্ষক নেতা মহিউদ্দিন খন্দকার ও লায়ন্স ক্লাব অব ফেনীর প্রেসিডেন্ট জাফর উল্লাহ।
সভায় আরো বক্তব্য দেন ফেনী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু তাহের ভূঁইয়া, সাংবাদিক ফিরোজ আলম, তারিকুল ইসলাম মজুমদার, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী নসু, শিক্ষক মোশারফ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মুহাইমিন তাজিম, শাহীন এবং গুম হওয়া রিপনের ভাই শিপু।
মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে নির্যাতনের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৮২ জন। চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় (৯ আগস্ট ২০২৪ থেকে ২০ জুন ২০২৫) এই সংখ্যা ১০ জন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী জাফর আহমেদ ভূঁইয়া, আমিনুল ইসলাম শাহীন, রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান, ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান মজুমদার, হোমিও চিকিৎসক আতিক উল্লাহ এবং বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ফেনী শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোস্তফা কামাল বুলবুল।
ঢাকা/সাহাব/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র ছ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রোমে আটকা বিমানের বোয়িং, ফ্ল্যাপের সমস্যা
ইতালির রোমে আটকা পড়েছে বিমানের একটি বোয়িং ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ। ফ্ল্যাপে সমস্যার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানিয়েছে।
ইতালির রোমের স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে বোয়িং ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি রোম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটি রোমের লেওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ডেড’ অবস্থায় রয়েছে।
ফ্ল্যাপ হলো বিমানের ডানার পেছনের দিকে থাকা একধরনের যন্ত্র, যা বিমানের ওড়া এবং অবতরণের সময় লিফট ও ড্র্যাগ বাড়াতে বা কমাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বিমানকে কম গতিতে উড়তে ও অবতরণে সহায়তা করে। টেক–অফ ও ল্যান্ডিংয়ের জন্যও এটি প্রয়োজনীয়।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম রওশন কবীর আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলত ফ্ল্যাপের ত্রুটির কারণেই উড়োজাহাজটির সমস্যা হয়েছে। এ কারণে রোম থেকে ঢাকার ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের হোটেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রোমে গ্রাউন্ডেড উড়োজাহাজটির মেরামতপ্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন রওশন কবীর। তিনি বলেন, ‘ফ্ল্যাপ মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ লন্ডন থেকে পাঠানো হচ্ছে। যন্ত্রাংশগুলো আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা নাগাদ রোমে পৌঁছাবে। এরপর ত্রুটি সারানোর কাজ করবেন প্রকৌশলীরা। একই ফ্লাইটে যাত্রীদের রোম থেকে দেশে ফেরানো হবে।
বিমানটিতে ২৬২ জন যাত্রী ছিলেন বলে বিমান সূত্র জানিয়েছে। এসব যাত্রীর জন্য বিকল্প কোনো ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। উড়োজাহাজটি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত যাত্রীরা বিমানের খরচে হোটেলেই থাকবেন।