সিলেটে পাথর কোয়ারি ইজারা না দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বহাল রাখার দাবি
Published: 26th, June 2025 GMT
আদালতের রায় ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাথর উত্তোলন এবং পাথর উত্তোলনের দাবির নামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন আদালত অবমাননার অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাথর ভাঙার মেশিন পরিচালনা রোধে গঠিত কৌশলগত জোটের প্রতিনিধিরা।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় জোটের প্রতিনিধিরা এ কথাগুলো বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের উদ্যোগে এ জোট গঠিত হয়। জোটে পরিবেশবাদী সমমনা ব্যক্তি, সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা আছেন।
সভায় সিলেটে পাথর ভাঙার মেশিনের ব্যবহার ও পাথর উত্তোলনের বিষয়ে গৃহীত সরকারি সিদ্ধান্তসহ বিভিন্ন তথ্য মাল্টিমিডিয়ায় উপস্থাপন করেন বেলার সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা আখতার। এ সময় বলা হয়, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জায়গা হচ্ছে আদালতে। এর বাইরে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো কর্মসূচি দেওয়া আইনের লঙ্ঘন। সভায় পরিবেশ, শব্দ ও বায়ুদূষণ বন্ধে পাথর আমদানির ওপর গুরুত্ব দেওয়ারও দাবি জানানো হয়।
জোটের সভায় বেলার প্রতিনিধিসহ ১২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম এবং খনি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো.
অন্যান্যের মধ্যে সভায় পাত্র সম্প্রদায় কল্যাণ পরিষদের নির্বাহী পরিচালক গৌরাঙ্গ পাত্র, জৈন্তা ছিন্নমূল সংস্থার (জেসিস) নির্বাহী পরিচালক এ টি এম বদরুল ইসলাম, ব্লাস্ট সিলেটের সমন্বয়ক সত্যজিত কুমার দাস, এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি নোংপকলৈ সিনহা, আইনজীবী ইরফানুজ্জামান চৌধুরী ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সভা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ, জাফলংয়ে ইসিএ বাস্তবায়ন ও পাথর ভাঙার যন্ত্রের অপরিকল্পিত ও অবৈধ ব্যবহার রোধ করে সিলেটের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া সিলেটে পাথর কোয়ারি ইজারা না দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত বহাল রাখার দাবি জানানো হয়।
এর আগে ১৪ জুন সকালে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরে দুই উপদেষ্টা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না বলে জানান।
অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙা যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। এরপরই স্থানীয় পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পাথর কোয়ারির ইজারা দিয়ে আবার পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। দাবি মানা না হলে তাঁরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট পর ব শ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস