রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের করা পৃথক রিট হাইকোর্টে আট সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনে ওই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রে স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে ইসির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে গত ১০ মার্চ ওই গণবিজ্ঞপ্তি দেয় নির্বাচন কমিশন। গণবিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম গত ১৬ মার্চ রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। ওই গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম রিট আবেদনকারীর দলের (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে ইসি আপিল বিভাগে আবেদন (লিভ টু আপিল) করে। আজ আবেদনটি চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ২২ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম।

পরে ইসির আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী প্রথম আলোকে বলেন, গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা রিট আবেদনকারীর (রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন) ক্ষেত্রে হাইকোর্ট স্থগিত করেছিলেন। হাইকোর্টের এই আদেশ চেম্বার আদালত স্থগিত করেছেন। একই সঙ্গে আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে দুটি মামলা (গণবিজ্ঞপ্তি ও নিবন্ধন নিয়ে পৃথক রিট) মেরিটে শুনে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য রাষ্ট্র সংস্কার ইসিতে আবেদন করে, যা ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ না মঞ্জুর হয়। এ নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ইসিতে রিভিউ আবেদন করে। এ আবেদন চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি খারিজ হয়। এই দুই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অপর রিটটি করেন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২০ মে হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আবেদন ও রিভিউ আবেদন খারিজের নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে নিবন্ধন দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম প্রথম আলোকে বলেন, ইসির গণবিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। এটা চ্যালেঞ্জ করে ইসি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করে। এর ওপর আজ শুনানি হয়। শুনানির সময় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নিবন্ধনের জন্য করা রিটের প্রসঙ্গও ওঠে। দুই পক্ষকে শুনে দুটি রিট একসঙ্গে আট সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে শুনানি করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র জন য আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ