Samakal:
2025-10-03@02:40:22 GMT

ভবনে ঢুকতেই ভয় মেলে না ওষুধও

Published: 26th, June 2025 GMT

ভবনে ঢুকতেই ভয় মেলে না ওষুধও

ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সরবরাহ নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর। এমন অবস্থায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রগুলোর সেবা কার্যক্রমে। উপজেলায় এমন কেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচটি। সবক’টি ভবনের দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। বেরিয়ে পড়েছে রড। যে কারণে স্বাস্থ্যসেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে কর্মীদের। 
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্র জানায়, কয়রায় পাঁচটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে মূলত অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সাধারণ চিকিৎসা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবাও পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি কেন্দ্রের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যা কমে গেছে। 
সম্প্রতি সরেজমিন মহারাজপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের দুটি ভবনকেই জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখা যায়। এগুলো ব্যবহারের পুরোপুরি অযোগ্য। ভবনগুলোর দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে গেছে বহু আগেই। দেখা যায় ভেতরের ইট। এ ছাড়া পিলার ও ছাদে বড় বড় ফাটল। জানালা-দরজা ভেঙে যাওয়ায় সরিয়ে ফেলা হয়েছে প্রয়োজনীয় মালপত্র ও আসবাব। এখন দুই কক্ষের একটি টিনের ঘরে দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে শুধু। ওষুধ না থাকায় রোগীদের ফিরতে হচ্ছে পরামর্শ নিয়ে।
সবুরন নেছা নামের একজন নারীকে পাওয়া যায় সেখানে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাঙাচুরা রুমের মধ্যি দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর ডাক্তারের মুখের কথা শুনে বাড়ি যাতি হচ্ছে। কোনো ওষুধপথ্য নেই।’ 
এ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) নিমাই চন্দ্র মণ্ডল। তাঁর ভাষ্য, এখানে দিনে গড়ে রোগী আসেন ৫০ জন। ভবন দুটি বেহাল হওয়ায় সাধারণ রোগী, মা ও শিশুদের সেবাদান বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রায় এক বছর ধরে টিনের দুটি কক্ষে তারা কষ্ট করে সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। 
নিমাই চন্দ্র মণ্ডলের ভাষ্য, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও ওষুধেরও সংকট আছে। কেবল পরামর্শ দিয়ে বিদায় করেন সেবাগ্রহীতাদের। এতে সেবাগ্রহীতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দিনে দিনে রোগী আসা কমছে।  
বাগালি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের কোয়ার্টারটি বসবাসের অযোগ্য। এই কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষের দেয়াল ও পিলারে ফাটল। এখানে-ওখানে ধসের চিহ্ন। কর্মীরা জানিয়েছেন, ভবনের ছাদে ফাটল থাকায় বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে। 
মহেশ্বরীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণকেন্দ্রে বছরখানেক আগে সংস্কার করা হয়। তবে এরই মধ্যে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মহেশ্বরীপুর কেন্দ্রের দোতলার ছাদে ফাটল দেখা গেছে। এসব কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা কয়েকজন নারী বলেন, ভবনের অবস্থা ভালো না হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। বেশিক্ষণ বসে থাকাও নিরাপদ মনে করেন না তারা। অনেকেই ভবনের চেহারা দেখে বাড়ি ফিরে যান। সেবা নেওয়া আর হয় না। 
তাদের কথার সত্যতা মেলে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক আমেনা খাতুন ও পারভীন আকতারের বক্তব্যে। আমেনা মহারাজপুর ও পারভীন বাগালি কেন্দ্রে কর্মরত। তারা জানিয়েছেন, ভবনগুলোর বেশির ভাগ কক্ষ ব্যবহার অনুপযোগী। এ কারণে সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সেখানকার টয়লেট ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। যে কারণে সেবাগ্রহীতা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

শুভ্র মনিয়ম বলেন, ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কর্মীরা ঝুঁকি জেনেও দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসেরও অবস্থা একই রকম। ভবনের প্রতিটি কক্ষের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল। দোতলার ছাদ চুইয়ে পড়া পানিতে আসবাব ও দাপ্তরিক কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। মাস দুয়েক ধরে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ। তাই সেবা দিতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। এসব বিষয় জানিয়ে কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব গ রহ ত অবস থ উপজ ল ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
  • রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন
  • বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি