Samakal:
2025-11-17@10:26:35 GMT

ভবনে ঢুকতেই ভয় মেলে না ওষুধও

Published: 26th, June 2025 GMT

ভবনে ঢুকতেই ভয় মেলে না ওষুধও

ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সরবরাহ নেই প্রয়োজনীয় ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর। এমন অবস্থায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রগুলোর সেবা কার্যক্রমে। উপজেলায় এমন কেন্দ্রের সংখ্যা পাঁচটি। সবক’টি ভবনের দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। বেরিয়ে পড়েছে রড। যে কারণে স্বাস্থ্যসেবা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে কর্মীদের। 
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্র জানায়, কয়রায় পাঁচটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে মূলত অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সাধারণ চিকিৎসা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবাও পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি কেন্দ্রের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ না থাকায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যা কমে গেছে। 
সম্প্রতি সরেজমিন মহারাজপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের দুটি ভবনকেই জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখা যায়। এগুলো ব্যবহারের পুরোপুরি অযোগ্য। ভবনগুলোর দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে গেছে বহু আগেই। দেখা যায় ভেতরের ইট। এ ছাড়া পিলার ও ছাদে বড় বড় ফাটল। জানালা-দরজা ভেঙে যাওয়ায় সরিয়ে ফেলা হয়েছে প্রয়োজনীয় মালপত্র ও আসবাব। এখন দুই কক্ষের একটি টিনের ঘরে দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে শুধু। ওষুধ না থাকায় রোগীদের ফিরতে হচ্ছে পরামর্শ নিয়ে।
সবুরন নেছা নামের একজন নারীকে পাওয়া যায় সেখানে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাঙাচুরা রুমের মধ্যি দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর ডাক্তারের মুখের কথা শুনে বাড়ি যাতি হচ্ছে। কোনো ওষুধপথ্য নেই।’ 
এ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) নিমাই চন্দ্র মণ্ডল। তাঁর ভাষ্য, এখানে দিনে গড়ে রোগী আসেন ৫০ জন। ভবন দুটি বেহাল হওয়ায় সাধারণ রোগী, মা ও শিশুদের সেবাদান বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রায় এক বছর ধরে টিনের দুটি কক্ষে তারা কষ্ট করে সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। 
নিমাই চন্দ্র মণ্ডলের ভাষ্য, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ও ওষুধেরও সংকট আছে। কেবল পরামর্শ দিয়ে বিদায় করেন সেবাগ্রহীতাদের। এতে সেবাগ্রহীতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দিনে দিনে রোগী আসা কমছে।  
বাগালি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের কোয়ার্টারটি বসবাসের অযোগ্য। এই কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষের দেয়াল ও পিলারে ফাটল। এখানে-ওখানে ধসের চিহ্ন। কর্মীরা জানিয়েছেন, ভবনের ছাদে ফাটল থাকায় বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে। 
মহেশ্বরীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কল্যাণকেন্দ্রে বছরখানেক আগে সংস্কার করা হয়। তবে এরই মধ্যে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মহেশ্বরীপুর কেন্দ্রের দোতলার ছাদে ফাটল দেখা গেছে। এসব কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা কয়েকজন নারী বলেন, ভবনের অবস্থা ভালো না হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। বেশিক্ষণ বসে থাকাও নিরাপদ মনে করেন না তারা। অনেকেই ভবনের চেহারা দেখে বাড়ি ফিরে যান। সেবা নেওয়া আর হয় না। 
তাদের কথার সত্যতা মেলে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক আমেনা খাতুন ও পারভীন আকতারের বক্তব্যে। আমেনা মহারাজপুর ও পারভীন বাগালি কেন্দ্রে কর্মরত। তারা জানিয়েছেন, ভবনগুলোর বেশির ভাগ কক্ষ ব্যবহার অনুপযোগী। এ কারণে সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। সেখানকার টয়লেট ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। যে কারণে সেবাগ্রহীতা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

শুভ্র মনিয়ম বলেন, ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কর্মীরা ঝুঁকি জেনেও দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসেরও অবস্থা একই রকম। ভবনের প্রতিটি কক্ষের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল। দোতলার ছাদ চুইয়ে পড়া পানিতে আসবাব ও দাপ্তরিক কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। মাস দুয়েক ধরে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ। তাই সেবা দিতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। এসব বিষয় জানিয়ে কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব গ রহ ত অবস থ উপজ ল ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%

এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের

থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।

থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এফএওর সূচক কমেছে

প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।

চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের

অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় সমাবেশ 
  • সরবরাহ বাড়ছে শীতের আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপির, কমছে দাম
  • গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানিতে সম্মত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
  • থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
  • ইউক্রেনের হামলা: নভোরো-সিয়েস্ক বন্দরের তেল রপ্তানি বন্ধ করল রাশিয়া
  • চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলার বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগ পাচ্ছে উষ্ণায়নে দায়ী দেশগুলো