বগুড়ার প্রকৌশলী মো. মাহমুদুন্নবী বিপ্লব করোনা মহামারির সময় তৈরি করেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। বগুড়া থেকে বিধিনিষেধের সময়ে রাত জেগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেন তিনি। দেশি প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নিজের মেধা দিয়ে এক মাসেই বহনযোগ্য অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি করেন মো. মাহমুদুন্নবী। এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মাধ্যমে ঘরের বাতাস থেকেই প্রতি ঘণ্টায় ৩০০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন তৈরি করা যায়। এটি ব্যবহারও বেশ সহজ। একটি রেগুলেটরের মাধ্যমে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে যন্ত্রটি। ৩০ কেজি ওজনের কম এই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর যেকোনো হাসপাতালে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। খরচ পড়েছে ৭০ হাজার টাকা।

১৯৯৬ সালে বগুড়া পলিটেকনিকে শিক্ষকতার পাশাপাশি মো.

মাহমুদুন্নবী রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ওয়ার্কশপ গড়ে তোলেন। তার ওয়ার্কশপেই তিনি বন্যা-পূর্ব সতর্কতার একটি বিশেষ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। মাত্র পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই যন্ত্র ব্যাটারি ও সৌর প্যানেলে চলে। মাহমুদুন্নবীর বন্যা-পূর্ব সতর্কীকরণ যন্ত্র ২০১৮ সালে বগুড়ায় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কার পায়। মাহমুদুন্নবীর অন্যান্য উদ্ভাবনের মধ্যে বেবি ইউরিন অ্যালার্ম বেড, রোগীর শরীরে পুশ করার স্যালাইন অ্যালার্ম সিস্টেম, জলজ প্রাণীর জন্য পানিতে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য ওয়াটার অ্যারোয়েটর, করোনা প্রতিরোধে অটোমেটিক স্যানিটাইজিং মেশিন, প্যারালাইজড রোগীর ব্যবহারের জন্য অটোমেটিক হ্যান্ড এক্সারসাইজ, ডিজিটাল ডোর লক, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমের জন্য লক রিং টুলস অন্যতম। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা ওয়ার্ডে (আইসিইউ) ব্যবহারের জন্য ভেন্টিলেটর মেশিন প্রস্তুত করছেন তিনি।

ধীরে ধীরে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় ওয়ার্কশপ হিসেবে গড়ে তুলেছেন কাঁকন রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ওয়ার্কশপকে। মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘এখন উত্তরবঙ্গে অনেক বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সমস্যা ও ত্রুটি মেরামতের জন্য বিদেশ থেকেও প্রকৌশলী আনা হতো। সেই সমস্যা সমাধানে আমরা স্থানীয় প্রকৌশলীরা কাজ করছি।’ আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২৩–এ মো. মাহমুদুন্নবী সম্মানজনক স্বীকৃতি পেয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হ‌জের তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। সর্ব‌নিম্ন হজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা সাশ্রয়ী হজ প‌্যা‌কে‌জে অন্তর্ভূক্ত। 

গতবা‌রের চে‌য়ে এবার বিমান ভাড়া ক‌মি‌য়ে সবগু‌লো হজ প‌্যা‌কেজ নির্ধারণ করা হ‌য়ে‌ছে। গতবছর দু‌টি হজ পা‌কেজ থাক‌লেও এবার সরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনার মতো বেসরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনায়ও তিন‌টি হজ প‌্যা‌কেজ ঘোষণা করা হ‌য়ে‌ছে। 

আরো পড়ুন:

শাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী বহিষ্কার

সরকা‌রিভা‌বে খরচ ক‌মি‌য়ে হ‌জের তিন প‌্যা‌কেজ ঘোষণা

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নয়াপল্টনে একটি হোটেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এসব হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

এ সময় সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ারও উপস্থিত ছিলেন।

ফ‌রিদ আহ‌মেদ জানান, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য তিনটি হজ প্যাকেজ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য খাওয়া ও কোরবানিসহ বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাধারণ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে ব্যয় হবে সর্বমোট ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সাশ্রয়ী হজ প‌্যা‌কে‌জের মূল‌্য ধরা হ‌য়ে‌ছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের খাবার খরচ প্যাকেজের বাইরে থাকলেও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত সার্ভিসের জন্য খাবারের মূল্য প্রতিটি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত ব‌লেও জানান তি‌নি।

প্রতি সৌদি রিয়াল ৩২ টাকা ৮৫ পয়সা ধরে প্যাকেজের খরচ হিসাব করা হয়েছে জানিয়ে ফ‌রিদ আহ‌মেদ জানান, পরবর্তী সময়ে এ রেটে কোন পরিবর্তন আসলে তা প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

হজ এজেন্সিগুলোর জন্য সাধারণ হজ প্যাকেজ ও সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বিশেষ প্যাকেজ থেকে কম-বেশি করে তারা নিজস্ব প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন হাব মহাসচিব।

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজের সব টাকা প‌রি‌শোধ কর‌তে হ‌বে জা‌নি‌য়ে ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, “বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। হজ প্যাকেজের বাকি অর্থ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে জমা করে বা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে মানি রিসিট গ্রহণ ও সংরক্ষণ করবেন। কোনোক্রমেই মধ্যস্বত্বভোগীদের কছে কোনো প্রকার লেনদেন করবেন না।” 

কোনো এয়ারলাইন্স এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া শিডিউল ফ্লাইটে কোনো হজযাত্রী বহন করতে পারবে না জানিয়ে মহাসচিব বলেন, “প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার কোনো খাতে খরচ বাড়ালে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।”

হাব মহাসচিব বলেন, “গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এবার ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। বিমান ভাড়া আরও কমানো হলো প্যাকেজের মূল্য কমানো হবে।”

তিনি বলেন, “এর আগে গত দুই বছর অন্যায়ভাবে ২ লাখ টাকা করে হজযাত্রীদের কাছ থেকে বিমান ভাড়া আদায় করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, যেটি হজযাত্রীদের প্রতি জুলুম ছিল, অন্যায় ছিল। হজযাত্রীদের কাছ থেকে এ টাকা লুট করা হয়েছিল বলে আমরা মনে করি। কারণ তখন এক ডলারের দাম ছিল ১০০ টাকা। এখন এক ডলারের বিপরীতে টাকা ১২২ টাকা ৫০ পয়সা, কিন্তু এবার বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। হজযাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল।” 

বিশেষ হজ প্যাকেজ : হাব মহাসচিব জানান, বিশেষ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৭০০ মিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকায় আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ।

এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; এটাচড্ বাথ সহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৫ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।

সাধারণ হজ প্যাকেজ: হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে।

মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত। অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।

সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ: এ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব হবে ৬/৭ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন হবে। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম থেকে খাবার সরবরাহ করা হবে এ প্যাকেজে।

এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে সাশ্রয়ী প্যাকেজে।

গতবছর খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনায় সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা নির্ধারণ ক‌রে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা।

এবার খরচ ক‌মি‌য়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সরকারি ব্যবস্থাপনার ঘোষণা করেন।

প্যাকেজ–১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা। এছাড়া, হজ প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা ও হজ প্যাকেজ-৩ এ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।

‘বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ’ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এ প্যাকেজ নিয়ে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
  • রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন
  • বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা