‘মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার বড় মাধ্যম ফটোকার্ড’
Published: 28th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজগুলো মনে করে ফ্যাক্টচেক এর পেছনে টাকা খরচ অতিরিক্ত, যেটা তারা চান না। অথচ মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার একটি বড় মাধ্যম হলো ফটোকার্ড। ভাইরাল ঘটনার খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার হয়। ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। শনিবার রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব, মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন–উর–রশীদ, সভাপ্রধান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আমাদের মিডিয়া হাউজগুলো মনে করে ফ্যাক্টচেক এর পেছনে টাকা খরচ অতিরিক্ত, যেটা তারা চান না। বাংলাদেশের কোনো পত্রিকারই এই ইনভেস্টমেন্ট নাই। ফেইক ভিডিও, স্ক্রিপটেড ভিডিও এসব কিছুই ছড়ায়, ছড়াবেও কিন্তু পত্রিকাগুলো এ ধরনের কাজগুলো রুখে দিতে চায় কিনা, পেইড টুলসগুলো কিনে প্রতিটাই রুখে দিতে পারে কিনা, তা দেখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হয়। ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য আছে বলে সেটা করা হচ্ছে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হওয়া না গেলে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ সূচনা বক্তব্যে গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্র নিজে মিথ্যার কারখানায় পরিণত হয়েছিল এবং সংবাদমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফেরিওয়ালা।
গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমের ঘটনা ঘটানোর জন্য শিকারি সাংবাদিকতা করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, সাংবাদিকরা গত ১৫ বছর পেশাগতভাবে হুমকিতে ছিলেন। তারা রাজনৈতিকভাবে কোনো অবস্থান নিতে পারেন না। মূলধারার গণমাধ্যম এখনও সত্য প্রকাশে দ্বিধান্বিত। মূলধারার গণমাধ্যমে কী ধরনের অপতথ্য ছড়ানো হয় এবং তা কীভাবে রুখে দেওয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ হওয়া দরকার। অপতথ্যকে বা গুজবকে শুধু ফ্যাক্টচেক দিয়ে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।
মামুন-উর-রশীদ বলেন, মিডিয়া হাউজ যদি আস্থা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সেটা পুরো সোসাইটির জন্য হুমকিস্বরূপ।
৫ আগস্টের পর বিভিন্ন হাউজের সংবাদ প্রকাশের ডেটাসহ বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের অপতথ্য ছড়ানোর হার নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করে তিনি বলেন, মেইনস্ট্রিম মিডিয়া আমাদের দেশে সরব। আর বাংলাদেশে মিস ইনফরমেশন শেয়ার করার একটি বড় মাধ্যম ফটোকার্ড।
সেমিনারে প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। এতে বক্তব্য রাখেন- প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক প্রমুখ।
সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন তারা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প আইব শ য় র কর অপতথ য প রক শ প আইব
এছাড়াও পড়ুন:
একই দিনে নির্বাচন-গণভোট সঠিক পদক্ষেপ: হাফিজ উদ্দিন আহমদ
কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভোলা–৩ আসনের (লালমোহন–তজুমদ্দিন) দলের মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, গণভোটের জন্য আলাদা দিন নির্ধারণ করলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হবে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণ মনে করে, একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হলে দেশের সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হবে।
রোববার বিকেলে ভোলার তজুমদ্দিনের শশীগঞ্জ উত্তর বাজারে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণভোট নিয়ে এ কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন। তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এ গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন বলেন, এমনিতেই দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। সামনের দিনগুলোতে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকটে দেশে আরও চাপ সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন–গণভোট একই দিনে আয়োজনের সিদ্ধান্ত সঠিক পদক্ষেপ।
সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে সঠিক রায় দেবে। সংবিধান সংশোধনের অধিকার একমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। আমরা জুলাই সনদে যেখানে স্বাক্ষর করেছি, তা মেনে চলব। যেখানে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছি, সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তা নির্ধারণ করবে আগামী নির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা আগামীকাল সোমবার। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের মানুষ আশা করে খুন, গুম, মানি লন্ডারিংসহ নানা গুরুতর অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি দেবে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা (মিন্টু)। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওমর আসাদ (রিন্টু)। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান মাকসুদুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি জাকির হোসেন হাওলাদারসহ স্থানীয় নেতারা।