নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
Published: 29th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনার ক্ষেত্রে হস্তান্তর বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানাতে বলে আগামী মঙ্গলবার শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।
এক রিটের শুনানিতে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ তথ্য জানাতে বলেন।
নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন রিটে যুক্ত করা হয়।
রিটটি শুনানির জন্য গত ২৫ মে আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ‘অবকাশের পর’ শুনানির জন্য রাখেন।
৩ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি চলে। ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রপ্রক্রিয়া আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে করা এই রিটের বিষয়টি ২৩ জুন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেদিন আদালত রিটের ওপর শুনানির জন্য ২৯ জুন বেলা দুইটায় সময় নির্ধারণ করেন। সে অনুসারে আজ মধ্যাহ্ন বিরতির পর শুনানি হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবীর ভাষ্য, ২০১৯ সালে সমঝোতা স্মারকের মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়। টার্মিনাল অপারেটর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জিটুজির ভিত্তিতে প্রকল্প কাজ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করতে হয়। অথচ পিপিপি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেওয়া প্রজেক্ট প্রোফাইলে অনুমিত বিনিয়োগ হিসেবে ২০০ কোটি টাকা দেখা যায়, যা জিটুজি গাইডলাইন-২০১৭ সংশ্লিষ্ট বিধির পরিপন্থী।
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, দেশীয় অপারেটরদের অনুমতি না দিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে ২৬ এপ্রিল ২০২৫যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার জন্য দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে।
রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি১৭ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক র য় ন র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বগুড়ার আইনজীবী
মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বগুড়া জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান মন্ডল।
আগামী রবিবার (২৯ জুন) তিনি ফৌজদারি আদালতে মামলাটি করবেন। শুক্রবার (২৭ জুন) গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তিনি নিজেই এ কথা জানান।
আরো পড়ুন: হিরো আলমকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিলেন রিয়া মনি-মিথিলা
আরো পড়ুন:
ঘুমের ওষুধ সেবন করে গুরুতর অসুস্থ হিরো আলম
হিরো আলমকে হত্যাচেষ্টা: জামিন পেলেন রিয়া মনি ও কামরুল
অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান মন্ডল জানান, আত্মহত্যার চেষ্টা একটি ফৌজদারি অপরাধ। আত্মহত্যা প্রতিরোধে ৩০৯ ধারার একটি আইন আছে। এই আইনে মামলা হলে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ব্যক্তির এক বছরের জেল এবং অর্থদণ্ড হতে পারে। আত্মহত্যার চেষ্টা প্রতিরোধে এই উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।
আজ শুক্রবার সকালে হিরো আলমকে তার বন্ধুর বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে তাকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেল ৪টায় হিরো আলমের সাবেক স্ত্রী রিয়া মনি এবং কথিত স্ত্রী মিথিলা হাসপাতাল থেকে হিরো আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যান।
হিরো আলম যে বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন, তিনি বলেন, “গতকাল ৩টায় হিরো আলম আমার বাড়িতে এসে রিয়া মনিকে নিয়ে হতাশার কথা বলেন। তিনি যেখানে যান, সেখানে লোকজন তাকে বিরক্ত করেন, নানা প্রশ্ন করেন বলে জানান। একটু নিরিবিলি সময় কাটাতে তিনি আমার এখানে এসেছিলেন। আমার ধারণা, রিয়া মনিকে না পাওয়ার হতাশা থেকেই হিরো আলম এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
হিরো আলমকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটি উপ-পরিচালক। তিনি বলেন, “বিকেল ৪টার দিকে রিয়া মনি হিরো আলমকে ঢাকায় চিকিৎসা করানোর কথা বলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে নিয়ে গেছেন।”
দণ্ডবিধির ৩০৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করার উদ্যোগ নেয় বা আত্মহত্যার উদ্দেশে কোনো কাজ করে, সেই ব্যক্তির এক বছরের কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
ঢাকা/এনাম/মাসুদ