পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে এসে অতিরিক্ত মদ্যপানে সাজিদুল ইসলাম (১৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার হোটেল থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তারই বন্ধু হাবিব। 

পরীক্ষা শেষে সাজিদুলের মৃত্যু নিশ্চিত করেন কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো.

রিয়াজ হোসেন।

নিহত সাজিদুল নেত্রকোনার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি খাবার হোটেলের কর্মচারী ছিলেন।

হোটেল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে ঢাকা থেকে বন্ধু হাবিবসহ কুয়াকাটায় ঘুরতে আসেন সাজিদুল। তারা এখানে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। দিনে ঘোরাঘুরি শেষে রাতে হোটেলে ফিরে মদ্যপান করেন সাজিদুল। সকালে ঘুম থেকে উঠে পেটে ব্যথা অনুভব করলে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান সাজিদুল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার করেন। তবে চিকিৎসা না নিয়ে হোটেলে ফিরে যান সাজিদুল। দুপুরের দিকে ফের পেটে ব্যথা বেড়ে গেলে বন্ধু হাবিব তাকে নিয়ে হাসপাতালে রওয়ানা দিলে পথে মারা যান সাজিদুল।

হাবিব বলেন, ‘আমরা ঢাকার ডেমরা এলাকায় থাকি। আমরা বন্ধু। দু’জনই কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছি। দিনে ঘোরাঘুরি শেষে রাতে হোটেলে অবস্থান করি। রাতে সাজিদুল নিচে নেমে একা মদ খেয়ে রুমে আসে। আমাকেও খেতে বলেছি, তখন আমি ওকে খেতে নিষেধ করি। কিন্তু ও মদ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ বোধ করলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।’

কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, ‘সকালে মদ্যপানে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় সাজিদুল ইসলাম নামের এক পর্যটক হাসপাতালে আসেন। আমরা চিকিৎসা দিয়ে রেফার করলেও তিনি চিকিৎসা নেননি। পরে আবার যখন নিয়ে আসা হয়, তখন পরীক্ষা করে তার মৃত্যু নিশ্চিত হই।’

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হবে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক

যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে হওয়া ব্লকেড ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ১ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে এ কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে যমুনা সেতু পশ্চিমে মহাসড়ক ব্লকেড করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। 

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয় তিস্তা সেতু উদ্বোধনের নতুন তারিখ ঘোষণা

উদ্বোধনের আগেই ঝুঁকিতে পড়ছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু

এর আগে, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী উভয় লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচীর কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ব্লকেড প্রত্যাহারের পর ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী উভয় লেনে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। এতে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া জিহাদ বলেন, “১১টা ৫০ মিনিটে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে শিক্ষার্থীরা বসে পড়েন। এতে উভয় লেনেই যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ১ ঘণ্টা মহাসড়কে বিক্ষোভ করার পরে সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আজকে রেল ও সড়ক পথ অবরোধের কথা ছিল। কিন্তু বুধবার (১৩ আগস্ট) উল্লাপাড়ায় রেলপথ অবরোধের কারণে সিডিউল বিপর্যয় ঘটে। জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা রেলপথ ছেড়ে দিয়েছি। তবে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে বিক্ষোভ করার পর মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি। শিগগিরই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

প্রতিষ্ঠার ৯ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের (ডিপিপি) অনুমোদন না হওয়ায় আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেয় শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে পূণরায় আন্দোলন শুরু হয়।

ঢাকা/রাসেল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ