পাকিস্তানের টেস্ট দলের নতুন কোচ আজহার মেহমুদ
Published: 30th, June 2025 GMT
পাকিস্তান ক্রিকেটের পদগুলো এখন যেন ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’। কেউ তাঁর পদে বেশি দিন টিকতে পারেন না। বারবার বদলের এই খেলা চলছে কোচদের ক্ষেত্রেও। এবার যেমন দলটির নতুন টেস্ট কোচ হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক অলরাউন্ডার আজহার মেহমুদ।
আজহারকে আজ লাল বলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ৫০ বছর বয়সী আজহার অনেক দিন ধরেই পাকিস্তান দলের সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর আগে ছিলেন বোলিং কোচ, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য টি-টোয়েন্টি দলের প্রধান কোচও ছিলেন।
এক বিবৃতিতে পিসিবি জানিয়েছে, ‘অভিজ্ঞ ক্রিকেট-মস্তিষ্ক আজহার মেহমুদের এই (কোচের) ভূমিকায় অসাধারণ দক্ষতা আছে। জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালনের পর আজহার দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনার মূল অংশ ছিলেন। খেলার ওপর তার গভীর জ্ঞান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে পাওয়া সাফল্য তাঁকে এই পদের জন্য আলাদাভাবে উপযুক্ত করে তুলেছে।’
পিসিবি আরও জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিদের লাল বলে কোচিং করাবেন আজহার। তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের এপ্রিলে।
আজহার মেহমুদকে নিয়ে গত সাত মাসে পাকিস্তান টেস্ট দল তৃতীয় প্রধান কোচ পেল। পিসিবির বিরুদ্ধে ক্ষমতা খর্ব করার অভিযোগ এনে গত ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন জেসন গিলেস্পি। এরপর সব সংস্করণে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্ব পান ’৯২ বিশ্বকাপজয়ী পেসার আকিব জাভেদ। এই আকিবই নাকি গিলেস্পিকে সরিয়ে কোচের পদ বাগিয়ে নিতে আড়ালে কলকাঠি নেড়েছেন।
তবে আকিবের কোচিংয়ে সর্বশেষ পাঁচ সিরিজের একটিও জিততে পারেনি পাকিস্তান। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তো ভরাডুবি হয়েছে। গত মে মাসে তাঁকে সরিয়ে মাইক হেসনকে সাদা বলের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয় পিসিবি। হেসন প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই সফল হয়েছেন। সম্প্রতি নিজেদের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করেছে পাকিস্তান।
কিন্তু আকিব জাভেদকে সরানোর পর লাল বলের কোচের পদটা ফাঁকা পড়ে ছিল। আজহার মেহমুদকে দিয়ে সেই শূন্যতা পূরণ হলো।
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম তিন চক্রে ফাইনালে ওঠা দূরে থাক, শীর্ষ পাঁচেও থাকতে পারেনি পাকিস্তান। সর্বশেষ ২০২৩-২৫ চক্রে তো তারা ৯ দলের মধ্যে পয়েন্ট তালিকায় সবার শেষে ছিল। নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের কাছে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাইও হয়েছিল।
এবার আজহার মেহমুদের কোচিংয়ে পাকিস্তান দল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ কিছু করবে—এমনটাই আশা পিসিবি। ২০২৫-২৭ চক্রে পাকিস্তানের প্রথম সিরিজ আগামী অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এবার ধবলধোলাই করতে চায় নেপাল
দিনটা যে বিশেষ, সেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে ১৪ ওভার পরই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন নেপালের সমর্থকেরা। নেপালের ১৭৩ রান তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ তখন ৭ উইকেটে ৭৪। ৩৬ বলে দরকার ১০০ রান। শারজায় নেপালের সমর্থকদের উৎসব-উল্লাস আরও গাঢ় হতে শুরু করে তখন থেকেই।
শেষ পর্যন্ত তা রূপ নেয় ঐতিহাসিক উৎসবেও। গতকাল রাতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯০ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে নেপাল। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে এটাই তাদের প্রথম সিরিজ জয়। প্রথম ম্যাচে ১৯ রানে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচও জেতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন ধবলধোলাইয়ের স্বপ্ন দেখছে নেপাল।
দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৭ বলে অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নেপালের ওপেনার আসিফ শেখ জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। আমরা ৩-০ তে শেষ করতে চাই। নেপালে ক্রিকেট উৎসবের মতো...নেপালের সব সমর্থককে ধন্যবাদ। তাঁরা অনেক দূরদূরান্ত থেকে এসে আমাদের সমর্থন দেন। কৃতিত্বটা তাই তাঁদেরও।’
আশ্চর্যের বিষয় হলো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়েই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে তাদের মুখোমুখি হলো নেপাল। দুবারের সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এই সিরিজ নেপালের জন্য কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সিরিজও। আর সেখানেই কিনা ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে রোহিত পৌড়েলের দল!
সেই পথে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করেছে ১৭.১ ওভারে ৮৩ রানে। টি-টোয়েন্টিতে আইসিসির সহযোগী কোনো দলের বিপক্ষে টেস্ট খেলুড়ে দলের এটাই সর্বনিম্ন সংগ্রহ। নেপালের ৯০ রানের জয়টি টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষ সহযোগী দেশের সর্বোচ্চ রানে জয়ের নজিরও। নেপালের জন্য বিষয়টি আরেকটি দিক বিবেচনায় ভালো হলো। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব আগামী মাসেই শুরু করবে নেপাল। তার আগে এই সিরিজ জয় কাজ করবে তাদের প্রেরণা হিসেবে।
আরও পড়ুনওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেপালের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়১১ ঘণ্টা আগেনেপালের অধিনায়ক রোহিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ভালো লাগছে। টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে জয় অনেক কঠিন। (প্রথম ম্যাচের) দুই দিন পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয় দারুণ ব্যাপার...বিশ্বকে নিজেদের খেলা ও প্রতিভা দেখাতে এই সিরিজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গত দুই–তিন বছর ধরে আমরা যেভাবে খেলছি, তাতে অনেকেরই মনোযোগ কাড়তে পেরেছি। আমরা এভাবেই চালিয়ে যেতে চাই এবং টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে বেশি বেশি খেলতে চাই। সিরিজটা আরও ভালোভাবে শেষ করতে চাই, সব কটি (ম্যাচ) জয়ের প্রেরণা আছে। তবে সে জন্য নতুন করে শুরু করতে হবে।’
শারজায় আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে নেপাল।