বুড়িয়ে গেলে অনেকেই ফুরিয়ে যান। কিন্তু ফাফ ডু প্লেসিকে দেখে কেউ বলতে পারবেন না তিনি ফুরিয়ে যাওয়ার পথে। বরং দিন যতই গড়াচ্ছে, ততই তাঁর পারফরম্যান্সের ঔজ্জ্বল্য বাড়ছে।

সপ্তাহ দুয়েক পরেই ৪১তম জন্মদিনের কেক কাটবেন ডু প্লেসি। এর আগে আজ এক সেঞ্চুরিতেই গড়েছেন তিন রেকর্ড; এর মধ্যে দুটি আবার বিশ্ব রেকর্ড!

যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি) আজ এমআই নিউইয়র্কের বিপক্ষে ৫ চার ও ৯ ছক্কায় ৫৩ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন টেক্সাস সুপার কিংস অধিনায়ক ডু প্লেসি। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে তাঁর এই ইনিংসের সুবাদে নিউইয়র্ককে ৩৯ রানে হারিয়ে আসরের প্লে-অফ পর্বে জায়গা করে নিয়েছে টেক্সাস।

ইনিংসটির মধ্য দিয়ে ডু প্লেসি হয়ে গেছেন টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান, ৪০ বছর পেরিয়ে যাঁর একাধিক সেঞ্চুরি আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই অধিনায়কের বর্তমান বয়স ৪০ বছর ৩৫২ দিন। আগের সেঞ্চুরিটা তিনি করেছিলেন এমএলসিতেই, গত ২০ জুন একই ভেন্যুতে সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নসের বিপক্ষে। তখন তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর ৩৪৩ দিন।

ডু প্লেসি এর আগের সেঞ্চুরিও করেছেন এমএলসিতে। তবে সেটি গত বছর ৮ জুলাই মরিসভিলে ওয়াশিংটন ফ্রিডমের বিপক্ষে, ৪০তম জন্মদিনের মাত্র ৪ দিন আগে। সেঞ্চুরিটা আরও কয়েক দিন পর পেলেও ৪০ পেরিয়ে তিনটি সেঞ্চুরি হয়ে যেত তাঁর।

বয়স ৪০ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি আছে মাত্র পাঁচজন ব্যাটসম্যানের। ডু প্লেসি ছাড়া অন্য চারজন ইংল্যান্ডের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক পল কলিংউড, তাঁর স্বদেশি গ্রায়েম হিক, আফগানিস্তানের ইমরান জানাত ও পাকিস্তানের জুবাইর আহমেদ। ৪০ পেরিয়ে এই চারজন একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন।

ডু প্লেসি অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিরও বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে আজ ২০০তম বারের মতো ব্যাটিংয়ে নেমে তিনি অষ্টমবারের মতো তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ভেঙেছেন অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লিঙ্গার ও পাকিস্তানের বাবর আজমের রেকর্ড।

ক্লিঙ্গার-বাবর দুজনেরই টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হিসেবে সাতটি করে সেঞ্চুরি আছে। মজার ব্যাপার হলো, ডু প্লেসি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিই করেছেন আটটি, যার মানে সব কটি সেঞ্চুরিই করেছেন দলকে নেতৃত্ব দিতে নেমে।

এখানেই শেষ নয়। ডু প্লেসি এখন এককভাবে এমএলসি ইতিহাসের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান। যুক্তরাষ্ট্রের এই লিগে আজকের সেঞ্চুরিটা তাঁর তৃতীয়। দুটি সেঞ্চুরি আছে এমআই নিউইয়র্ক অধিনায়ক নিকোলাস পুরান ও সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নস ওপেনার ফিন অ্যালেনের। তবে প্রথম সেঞ্চুরিটা করেছিলেন ২০২৩ সালে প্রথম আসরে। সেই সময় এমএলসির টি-টোয়েন্টি স্বীকৃতি ছিল না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড কর ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন মোদি, ট্রাম্পের সঙ্গে কি বৈঠক হবে

আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অবসরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে নরেন্দ্র মোদি নিউইয়র্ক গেলে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সফর ঘিরে অনেক ‘যদি’ ও ‘কিন্তু’ রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এই সফর নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করেনি। সরকারি সূত্রের বরাতে সফর সম্ভাবনার খবর করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও সরকারি ওয়াকিবহাল সূত্র মারফত পাওয়া খবরে জানিয়েছে, সরকারিভাবে এই বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রতিবছর সাধারণ পরিষদের বিতর্কে প্রতিটি দেশই তাদের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের জন্য সময় আগে থেকে নির্দিষ্ট করে রাখে। সেই অনুযায়ী এবার ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ নির্ধারিত করা রয়েছে। সম্মেলন ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।

অনেক সময় পরিস্থিতির বিচারে বক্তা তালিকায় পরিবর্তন করা হয়। সূত্রের কথায়, প্রধানমন্ত্রী মোদি নিউইয়র্ক যাবেন কি না, তা ঠিক করার সময় এখনো আসেনি।

ভারতীয় রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল। পরে রাশিয়া থেকে তেল কেনার অপরাধে ‘জরিমানা’ হিসেবে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়। অর্থাৎ মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ। বন্ধু ট্রাম্পের কাছ থেকে এটা ভারত প্রত্যাশা করেনি। ২৭ আগস্ট থেকে ওই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা।

যুক্তরাষ্ট্র অনড় থাকলে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি সম্মানজনক না হলে সম্পর্কের হাল কী হতে পারে, সেই জল্পনায় ভারতের নীতিনির্ধারকেরা এখনই প্রস্তুত নন। এটুকু বোঝা যাচ্ছে, সফর হবে কি না, তা নির্ভর করবে এই সময়ের অন্যান্য ঘটনার ওপর।

মোদি এই মাসের শেষের দিকে জাপান যাচ্ছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বুধবার গণমাধ্যমকে তা জানিয়েও দিয়েছেন। জাপান থেকে মোদি যাবেন চীনের তিয়ানজিন শহরে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে মোদির আলাদাভাবে বৈঠক হবে।

চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতির ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে নিউইয়র্কে মোদি–ট্রাম্প বৈঠকের সম্ভাবনা। তিয়ানজিনে এসসিও শীর্ষ সম্মেলন বসছে ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর।

ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেই সফরে তাঁকে পাশে বসিয়ে ট্রাম্প ভারতকে ‘ট্যারিফ কিং’ বললেও সম্পর্ক জোরদারের একাধিক বার্তাও দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে ট্রাম্পের কারণে ভারতকে প্রবলভাবে আশাহত হতে হয়।

ভূরাজনৈতিক সমীকরণের দিকে দৃষ্টি রেখে ভারতও তাই এখন রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের পথে এগোচ্ছে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা। ট্রাম্পের হুমকি অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে ভারত তেল কেনা অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা মধুর থাকবে, বলা কঠিন।

আপাতত সবার নজর আলাস্কায়। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সেখানে ১৫ আগস্ট ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে রুশ–ভারত সম্পর্ক এবং ভারতের তেল কেনার সিদ্ধান্ত অবশ্যই বিবেচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আট বছর পর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন বৈশ্বিক উদ্যোগ
  • বীরকে নিয়ে মিকি মাউসের খোঁজে শাকিব খান
  • জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারেন মোদি, ট্রাম্পের সঙ্গে কি বৈঠক হবে