বিজিএমইএর সেবা-মাশুল কমল ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত
Published: 30th, June 2025 GMT
বিজিএমইএর নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের সেবার মাশুল বা চার্জ ৫০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিয়েছেন। আগামী ১ জুলাই থেকে নগদ প্রণোদনা ও ইউডি-সংক্রান্ত সেবা-মাশুলের নতুন হার কার্যকর হবে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যদের উদ্দেশে গতকাল রোববার এক চিঠিতে সেবা-মাশুল কমানোর বিষয়টি জানান সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্পের ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে সঙিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষভাবে উচ্চ ব্যাংক সুদ, মজুরি বৃদ্ধি এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘন ঘন মূল্যবৃদ্ধির চাপের মধ্যে ও উদ্যোক্তারা নিরন্তর পরিশ্রম করে কারখানাগুলো সচল রেখেছেন। আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল, আমরা নির্বাচিত হলেই সদস্যদের স্বস্তি দিতে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা-মাশুল কমাব।’
গত মাসে অনুষ্ঠিত বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে মাহমুদ হাসান খাতের নেতৃত্বাধীন ফোরামের প্যানেল প্যানেল ৩৫ পদের ৩১টিতে জয়ী হয়। ১৬ জুন দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে মাহমুদ হাসান খান বলেন, বিজিএমইএর সদস্যদের যাবতীয় সেবা-মাশুল পয়লা জুলাই থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হবে। নির্বাচনের আগে সেবা-মাশুল কমানোসহ বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জানা যায়, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা ২৩ জুন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্যদের সেবা-মাশুল কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগদ প্রণোদনা ও ইউডি-সংক্রান্ত সেবা-মাশুল পুনর্নির্ধারণ করা হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিকল্প নগদ সহায়তার সনদের মাশুল ১ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে।
এ ছাড়া তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে দশমিক ৩০ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তার সনদের মাশুল রপ্তানির মূল্য ভেদে ৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত কমানো হয়েছে। নতুন বাজার সম্প্রসারণ সহায়তা প্রাপ্তির সনদের মাশুল কমেছে ২৫০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এসএমই সনদের মাশুল ৫০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমছে।
অন্যদিকে সাধারণ ইউডির মাশুল ৬৩০ থেকে কমিয়ে ৪৭৫ টাকা এবং জরুরি ইইডির মাশুল ৯৩০ থেকে কমিয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউডি সংশোধন ও সার্ভিস চার্জ কমানো হয়েছে। রপ্তানি অনুমোদন ফি সাধারণ ক্ষেত্রে ৩০০ থেকে কমিয়ে ২২৫ টাকা এবং জরুরি ক্ষেত্রে মাশুল ৫০০ থেকে কমিয়ে ৩৭৫ টাকা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সনদ র ম শ ল ব জ এমইএর ম শ ল কম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে সমন্বিত তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব বিজিএমইএর
চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে নগরটিতে একটি সমন্বিত তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
এ জন্য বিজিএমইএর সভাপতি সংগঠনের অনুকূলে প্রতীকী মূল্যে একখণ্ড জমি বরাদ্দ দিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনীতি অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনকে (আশিক চৌধুরী) অনুরোধ করেন।
আজ সোমবার বিডার কার্যালয়ে আশিক চৌধুরীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুরোধ করেন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিডার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি এক সপ্তাহের মধ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা পেশ করবে।
বৈঠকে বিজিএমইএর প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক সামিহা আজিম। এ ছাড়া বিডার নির্বাহী সদস্য মো. মোখলেসুর রহমান ও বেজার নির্বাহী সদস্য সালেহ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএ ও বিডার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়। বিজিএমইএর নেতারা তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডকে ছয় মাসে উন্নীত করার অনুরোধ জানান। তাঁরা বলেন, অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা নির্দিষ্ট সময়ে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ঋণখেলাপি হন।
বিজিএমইএর সহসভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালা পুনর্বিবেচনা সময়ের দাবি, যাতে প্রকৃত উদ্যোক্তারা ব্যবসায় ফিরতে পারেন। আমরা চাই, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বিষয়টি গভর্নরের কাছে তুলে ধরবেন।’
এ ছাড়া বিজিএমইএর নেতারা বলেন, বন্ড নিরীক্ষা প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণ ও হয়রানির কারণে রপ্তানি বাণিজ্যের দৈনন্দিন কার্যক্রমে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বন্ড নিরীক্ষার জন্য ২০টি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করার বিষয়ে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেন বিজিএমইএর নেতারা।
বৈঠকে তৈরি পোশাকশিল্পে গ্যাস সরবরাহ, এলএনজি আমদানির মূল্য, বিদ্যুৎ–সুবিধা, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বল্পসুদের ব্যাংকঋণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় টেকসই পোশাক খাত গড়তে ভ্যাট-করের কাঠামো সহজীকরণের ওপরও জোর দেওয়া হয়।