রাজধানীসহ দেশের শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ধুলাদূষণ কমাতে শীতের আগেই কাঁচা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সংস্কার করা হবে। এ ছাড়া জিরো সয়েল নীতি বাস্তবায়ন, রাস্তার মাটি ঢেকে রাখা এবং পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কথা জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার সচিবালয়ে চীনের বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। বৈঠকে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত ও নীতিগত সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।

উপদেষ্টা বলেন, শহরে বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ পুরোনো ও উচ্চমাত্রার ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহন। এ সমস্যা মোকাবিলায় সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরোনো যান অপসারণ এবং নতুন ২৫০টি পরিবেশবান্ধব যানবাহন যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। একই সঙ্গে নির্গমন মান নিয়ন্ত্রণে ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীনা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে, যারা যৌথভাবে বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়নে কাজ করবে। উপদেষ্টা বলেন, সঠিক তথ্য ও বিশ্লেষণ ছাড়া কার্যকর নীতিমালা তৈরি সম্ভব নয়। সে জন্য উন্নত বায়ু নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, বৈশ্বিক মানের নির্গমন মান নির্ধারণ, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল এবং বর্জ্য ইনসিনারেশন প্লান্ট চালু ও রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

চীনা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউটের উপ-ডিন অধ্যাপক হাইকুন ওয়াং এবং বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক টেংইউ লিউ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।

বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।

সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।

আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ