Samakal:
2025-10-03@02:39:25 GMT

২৩ ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ

Published: 30th, June 2025 GMT

২৩ ধরনের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ

রাজশাহীর চারঘাটে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে ২৩ ধরনের ওষুধ সরবরাহ একেবারে বন্ধ রয়েছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর। ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এতে অপ্রত্যাশিত ও কম বয়সে বিবাহিত মেয়েদের গর্ভধারণের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্টরা এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
সদর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশাপাশি পাঁচটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র ও ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে নিয়মিত সেবা নেন উপজেলার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সেবাপ্রত্যাশী দম্পতিদের জন্য প্রতি মাসে ১৫ হাজার সেট সুখী তৃতীয় প্রজন্মের খাওয়ার বড়ির চাহিদা রয়েছে। চলতি মাসে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ১৫৪ সেট। ২৫ হাজার কনডমের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া গেছে ১৩ হাজার ৯০৫ পিস। জন্মনিয়ন্ত্রণের আইইউডি, ইমপ্লান্ট, ডিডিএস কিট এক পিসও সরবরাহ নেই। নেই আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফলিক এসিড ট্যাবলেট। এতে অন্তঃসত্ত্বা মা ও কিশোরীরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মোট ২৩ রকমের ওষুধ ছয় মাস ধরে সরবরাহ নেই।
সরেজমিন শলুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে গেলে দেখা গেছে, শুধু ওষুধ নয়; জনবল ও চিকিৎসাসামগ্রী সংকটেও রোগীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নামতে বসেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ 
গত ডিসেম্বরে ২৩ রকমের ওষুধ এসেছে এ কেন্দ্রে। এর পর থেকে সরবরাহ বন্ধ। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর চরম সংকট রয়েছে। 
কথা হয় সেবা নিতে আসা ভ্যানচালক রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর অনেক দাম। তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতি মাসে কনডম সংগ্রহ করি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে চাহিদার চেয়ে অনেক কম পাচ্ছি। অনেক সময় পাওয়াই যায় না। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। 
এ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি অফিসার নাসিম আহমেদ বলেন, ওষুধের সরবরাহ নেই। আমরা শুধু পরামর্শ দিচ্ছি। রোগীরা বিরক্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আগে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগী আসতেন। কিন্তু এখন আসছেন ১০-১২ জন। 

একই অবস্থা দেখা গেছে ভায়ালক্ষ্মীপুর ও নিমপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে। ভায়ালক্ষ্মীপুর কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা মেহেরুন নেসা বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে মাঝেমধ্যেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকে। আবার কখনও খোলা থাকলেও জ্বর-সর্দির ওষুধও থাকে না। কয়েক মাস ধরে সেবা নিতে এসে কেউই ওষুধ পায়নি। শুধু প্রেসার আর ওজন মেপে বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। 
নিমপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট মোস্তাকিন হোসেন বলেন, ওষুধ সরবরাহ একেবারে বন্ধ। এ কারণে রোগী তেমন আসছেন না। কনডম, খাবার বড়িসহ জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীও সরবরাহ কম। দম্পতিদের চাহিদার চেয়ে অনেক কম পরিমাণে দেওয়া হচ্ছে। 
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উপজেলার সহসভাপতি আঞ্জুমান আরা বলেন, স্থানীয় সক্ষম লোকজন সাধারণত বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সেবা নেন। সেখান থেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সংগ্রহ করেন। সরকারের কাছ থেকে ওষুধসেবা বা জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী নেন মূলত সমাজের দরিদ্র শ্রেণি। সরবরাহ ঠিক না থাকলে সমস্যায় পড়েন তারা। এতে বাড়তি খরচের পাশাপাশি ভুল চিকিৎসার মুখোমুখি হতে হয় তাদের। 

চারঘাট উপজেলায় স্বাস্থ্য কার্যক্রম নিয়ে কাজ করে ডাসকো ফাউন্ডেশন। এ সংস্থার উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ফারজানা ববি বলেন, ২৩ প্রকারের ওষুধ সরবরাহ না থাকায় অসহায় ও গরিব নারী-পুরুষ ও কিশোরীর স্বাস্থ্যগত সমস্যার জন্য স্থানীয় ওষুধের দোকানগুলোতে গিয়ে বাড়তি খরচের পাশাপাশি ভুল চিকিৎসার মুখোমুখি হচ্ছেন। এ ছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে এ অঞ্চলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ এবং জনসংখ্যার হার বেড়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফয়সাল ফেরদৌস বলেন, ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী না পেয়ে রোগীদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতি আগ্রহ কমেছে। জেলা কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, আগামী কয়েক মাসের 
মধ্যে পর্যায়ক্রমে ওষুধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরবর হ ন ই উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
  • রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন
  • বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি