ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি ছাত্রী হলের ৫৮৩ জন ছাত্রীর জন্য প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে আপৎকালীন আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে পাবেন। এই টাকা তাঁদের ব্যাংক হিসাবে যাবে।

আজ মঙ্গলবার উপাচার্যের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রতীকীভাবে বিভিন্ন হলের ১০ জন ছাত্রীকে এই সহায়তার খাম তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, ছাত্রী প্রতিনিধি উমামা ফাতেমা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানেরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড.

নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘এই সহায়তা একটি আপৎকালীন ব্যবস্থা। আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৫৩ ভাগই ছাত্রী। অথচ তাদের জন্য মাত্র ৫টি আবাসিক হল রয়েছে। অনেক ছাত্রী প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসে। ঢাকায় তাদের আত্মীয়স্বজন থাকে না। শুরুতে টিউশনিও মেলে না। সব মিলিয়ে তাদের জন্য জীবন কঠিন। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তারপরও শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’

উপাচার্য আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। এর অর্জন যেমন সমাজকে আনন্দ দেয় তেমনি সীমাবদ্ধতাও সমাজকে জানাতে হবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫১ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি রয়েছে। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ভবিষ্যতে এই সহায়তা সব শিক্ষার্থীর জন্য বিস্তৃত হোক, এটাই চাওয়া। এ জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ সমাজের সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান উপাচার্য।

উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান জানান, চীনের অর্থায়নে একটি নতুন ছাত্রী হল নির্মাণের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই নির্মাণকাজ শুরু হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যেখানে চারটি নতুন ছাত্রী হল ও পাঁচটি ছাত্র হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন–সংকট অনেকটাই দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তবে কত দিন এই সহায়তা দেওয়া হবে, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এখনো সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন উপ চ র য র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ

জালিয়াতির একটি মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন; সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে ডিসির নাম বাদ দিতে এ জালিয়াতি হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে আসে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন।

দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর আগে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ৩ আগস্ট থেকে মামলার সাক্ষ্য শুরু হবে।

কাজী ছানোয়ার আহমদ আরও বলেন, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ২০১৭ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যান। পরে তিনি জামিনে বের হন। এর আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। অন্য তিন আসামি হলেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ। আজ শুনানির সময় আদালতের কাঠগড়ায় পাঁচ আসামি উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী এই দুর্নীতির ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদককে। তবে মামলার পরপরই তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো কাগজপত্র থেকে ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে তা পাঠান। বিষয়টি জানাজানির পর বাদী কায়সারুল একই আদালতে রুহুল আমিন, সাদিকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক রিয়াজউদ্দিন গত বছরের ১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী মামলার সব নথিপত্র আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদ আহমদের কাছে দাখিল করেন। পরদিন (২০ নভেম্বর) সকালে আদালতের কর্মচারী সৈয়দ আকবর নথিপত্র কক্সবাজার ডাকঘরে জমা দেওয়ার জন্য রওনা দিলে তাঁকে আবার আদালতে ফিরিয়ে এনে খামটি স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানো হয়। পরে নানা কৌশলে আবেদন থেকে জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দেওয়া হয়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, ফৌজদারি দরখাস্ত রেজিস্ট্রারে ২৮ জন আসামির নাম থাকলেও পরে ৩টি পৃষ্ঠা পাল্টে ১ নম্বর আসামি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমের নাম বসানো হয় এবং বাদীর স্বাক্ষর জাল করে ২৮ জনের জায়গায় ২৭ জনকে আসামি দেখিয়ে দুদকে নথি পাঠানো হয়। এই জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।

দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়িঘের বাবদ ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই অর্থের মধ্যে মনগড়া ২৫টি ঘের দেখিয়ে ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি তুলে আত্মসাৎ করা হয়। আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাৎ করা হয় টাকা। ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘শুরুতে লুট ২২ কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন মামলাটি দায়ের হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবুল মনসুর আহমদ স্মরণে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা
  • ফ্যাসিবাদ বন্ধে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন সর্বোত্তম: চরমোনাই পীর
  • বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাবির ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত 
  • নথি জালিয়াতির দুর্নীতি মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক জেলা জজ, ডিসিসহ ৫ জনের বিচার শুরু
  • কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ
  • সিলেটে করোনায় আক্রান্ত ৪
  • আহমদ ছফা: দেশ, জাতি ও সংস্কৃতি
  • রাজ্জাক-ছফার এক জীবন
  • যদি শতভাগ প্রস্তাবে একমত হতে বলেন, তাহলে আলোচনার জন্য ডাকা হলো কেন: সালাহউদ্দিন