রূপগঞ্জে একাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে (১৭) অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে টাকা না পেয়ে গণধর্ষণের পর কলেজের পেছনে ঝোপঝাড়ে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। 

খবর পেয়ে বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে অজ্ঞান অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠায় থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অপহৃত ওই শিক্ষার্থীর মা বুধবার বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী (১৭) পরিক্ষা দেয়ার জন্য তার কলেজে আসে। দুপুর ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহৃত ওই শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন থেকে দফায় দফায় ফোন দিয়ে তার পরিবারের কাছে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। 

মুক্তিপনের টাকা না পাওয়ায় অপহরণের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে তারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করে কলেজের পেছনে ঝোপঝাড়ে ফেলে রেখে যায়। এদিকে, মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে থানা পুলিশের আশ্রয় নেয় অসহায় পরিবার। 

পরে, বুধবার (২৩ জুলাই) মুড়াপাড়া সরকারি কলেজ এর পিছনের ঝোপঝাড় থেকে অজ্ঞান অবস্থায় অপহৃত ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। 

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জানান, অপহরণকারীরা একাদশ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ ১ লাখ টাকা দাবি করে। পরে টাকা না পেয়ে ওই শিক্ষার্থীকে মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পেছনের ঝোপঝাড়ে ফেলে রেখে যায়। 

খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে ঝোপঝাড় থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ ওই শ ক ষ র থ ক র পগঞ জ থ ন কল জ র পর ব র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি

‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশ’–এর এক বছর পূর্তিতে প্রগতিশীল নারী সংগঠন, স্বতন্ত্র অধিকারকর্মী এবং নারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে স্মরণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখান থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সমাবেশের প্রতিপাদ্য ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম চলবেই।

গত বছরের ২৭ জুলাই কারফিউ ভেঙে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নারীরা পল্টন মোড়ে ‘হামার বেটাক মারলু ক্যানে’ শীর্ষক একটি সমাবেশ করেছিলেন।

সমাবেশে নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অবসান ঘটলেও এখনো ফ্যাসিবাদী কাঠামোর অবসান হয়নি। বরং দিন দিন নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটছে। যেখানে পাহাড়–সমতলের একের পর এক নারী নিপীড়ন, ধর্ষণ ও মব সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে নিপীড়ককে আশ্রয় ও দায়মুক্তি দিচ্ছে রাষ্ট্র।

তথ্য আপা রাজস্বকরণ আন্দোলনের প্রতিনিধি রোমানা ইসলাম বলেন, তথ্য আপারা দুই মাস ধরে প্রেসক্লাবে তাঁদের চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন, বসে আছেন। অথচ তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। তাঁদের ৭ বছর কর্মজীবনে বেতন থেকে কেটে নেওয়া ২০ কোটি টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।

হিল উইমেনস ফেডারেশনের সদস্য রুপসী চাকমা বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর কল্পনা চাকমার অপহরণ মামলার সুষ্ঠু বিচার হবে, তাই ভেবেছিল বাংলাদেশের নারী সমাজ। কিন্তু চিহ্নিত অপহরণকারী লেফটেন্যান্ট ফেরদৌস নিরাপদে ঘুরে বেড়ালেও কল্পনা চাকমার যে মামলাটি আওয়ামী সরকার খারিজ করেছে, তা একইভাবে বলবৎ আছে এবং মামলা পুনরায় শুরুর জন্য শুনানির তারিখ বারবার পেছাচ্ছে।

বম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লালরিথাং বম অভিযোগ করেন, আওয়ামী সরকার বম জাতির ওপর ‘কালেক্টিভ পানিশমেন্ট’–এর নামে যত্রতত্র থেকে নিরীহ বমদের আটক শুরু করেছিল। আজও কারাগারে বমরা আটকে আছে। তিনজন বম ব্যক্তিকে কারাগারে অত্যাচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

আজ সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো, দুই মাস ধরে আন্দোলনরত তথ্য আপাদের চাকরি রাজস্বভুক্ত করতে হবে; নিম্ন আদালতে কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করে পুনঃ তদন্ত ও চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের বিচারের আওতায় আনা এবং পাহাড় ও সমতলে নারী ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে এবং কারাগারে আটক সব বমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য মারজিয়া প্রভার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন শহীদ শেখ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলু মাখামিন শিল্পী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম প্রমুখ।

পাশাপাশি সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন অ্যাকটিভিস্ট ও কবি ফেরদৌস আরা রুমী, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য জাকিয়া শিশির, অ্যাকটিভিস্ট প্রাপ্তি তাপসী, চিকিৎসক সুরাইয়া ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।

সমাবেশে সূচনা ও সমাপনী সংগীত পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কারফিউ ভেঙে নারীদের সমাবেশের স্মরণে শাহবাগে সমাবেশ, ৩ দফা দাবি