নতুন সরকার পেলেও নতুন রাষ্ট্র এখনো পাইনি: নাহিদ
Published: 26th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা বলেছিলাম গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পুরোনো ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা রয়েছে, শেখ হাসিনার সংবিধানসহ যে সরকারব্যবস্থা ছিল, এসব নিয়ম পাল্টিয়ে নতুন রাষ্ট্র, নতুন সরকার তৈরি করতে হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয়, আমরা নতুন সরকার পেলেও নতুন রাষ্ট্র এখনো পাইনি। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, গণ–অভ্যুত্থানের শহীদদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ, নতুন দেশ গড়া না পর্যন্ত আমাদের এই লড়াই চলমান থাকবে।’
আজ শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরান থানা এলাকায় এনসিপির পথসভায় এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আপনারা জানেন, বাংলাদেশে গণ–অভ্যুত্থান হয়েছিল তরুণদের নেতৃত্বে। এই তরুণদের ওপর আস্থা রেখে বাংলাদেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। আমরা আবারও বলছি, এই তরুণদের ওপর আস্থা রেখে আপনারা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে যোগদান করুন। জাতীয় নাগরিক পার্টি আপনাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের চুয়ান্ন বছরে যে দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা, যে মাফিয়াতান্ত্রিক, যে লুটেরা রাষ্ট্রব্যবস্থা, সেই রাষ্ট্রের পরিবর্তন ঘটাবে। তরুণেরা রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি। এই তারুণ্যের শক্তিকে যদি দেশ গড়ার কাজে না লাগানো যায়, তাহলে বাংলাদেশকে আর কখনো গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। আমরা তরুণদের শক্তিতে বিশ্বাসী। আমরা বিশ্বাস করি কিশোরগঞ্জ এনসিপির শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হবে।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘সংস্কার, বিচার এবং নতুন সংবিধানের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে। এই কিশোরগঞ্জে অনেক মামলার আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমার শহীদ পরিবারকে এখনো হুমকি দিচ্ছে। আহত ভাইদের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হুমকি দিচ্ছে। আমরা দেখতে চাই এসব সন্ত্রাসীকে কারা শেল্টার দিচ্ছে। যারা শেল্টার দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছিল। কিন্তু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার পায়নি। এই ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছিল। মানুষের মানবাধিকার, মানুষের গণতন্ত্র, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত হাওর এলাকায়, সদর এলাকায় স্কুল আছে, কিন্তু শিক্ষক নেই। হাসপাতাল আছে, কিন্তু ডাক্তার নেই। যুবসমাজ আছে, কিন্তু কর্মসংস্থান নেই। অনেক বাজেট আছে, কিন্তু রাস্তা নেই। রাষ্ট্রপতি আছে, কিন্তু মানুষের উন্নয়ন নেই। আমরা এই কিশোরগঞ্জের চেহারা পাল্টে দিতে চাই। আমরা জানি, কিশোরগঞ্জ হাওরবেষ্টিত এলাকা। হাওর এলাকার মানুষদের সংগ্রাম করে, কষ্ট করে জীবন যাপন করতে হয়। এই কিশোরগঞ্জে সুপেয় পানির সংকট তৈরি হয়েছে। কৃষকেরা তাদের কৃষিকাজ ঠিকমতো করতে পারছে না, তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। হাওর এলাকার শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। চিকিৎসার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা পায় না।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা যেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে প্রত্যেকটা মানুষ নাগরিকের মর্যাদা পাবে। এই কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে, কিন্তু তার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার পায়নি। আমরা সেই কিশোরগঞ্জ চাই, যেখানে হাওর এলাকার একটা ছোট শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারবে। যেখানে হাওর এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যে সুযোগ-সুবিধা পাবে। যুবসমাজ কর্মসংস্থান পাবে, কিশোরগঞ্জের মানুষ যাতায়াত ব্যবস্থার সুযোগ-সুবিধা পাবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীন, যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খান, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আকরাম হোসেন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক খায়রুল কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাত ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়াম থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এনসিপির নেতা–কর্মীরা পুরান থানা এলাকার সমাবেশস্থলে যান।
এনসিপির এই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে কিশোরগঞ্জ শহরে ছিল ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ক শ রগঞ জ র ই ক শ রগঞ জ র ষ ট রপত এনস প র ব যবস থ নত ন স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
মৌসুমি বায়ু এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে গতকাল বুধবার রাত থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকা বিভাগসহ দেশের চার বিভাগের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। এরই মধ্যে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার জন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল দেওয়া আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ বেশি আছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এর কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা ট্রলার ও মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে নাজমুল হক আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, মৌসুমি বায়ু অনেকটাই সক্রিয়। এর প্রভাবে আজ ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ স্থানে এবং রংপুর, রাজশাহী, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক স্থানে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় রাজধানীতে ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আজ খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু স্থানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টির পরিমাণ ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটারের মধ্যে হলে তাকে ভারী বৃষ্টি বলা হয়।
আগামী শনি বা রোববার থেকে ময়মনসিংহ, রংপুর, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন নাজমুল হক।