ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভয় ও আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ২৫শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের কেউই আগুনে দগ্ধ হয়নি বলে জানা গেছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এদিকে, আহতদের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির রোহান নামে এক শিক্ষার্থী শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি শিক্ষার্থীদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ৯ শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন।

আরো পড়ুন:

ঘরে ৭টি লাশ, পাশে শুয়ে বৃদ্ধ বাবা

এক পরিবারে একই দিনে সাত কবরের শোক

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে পাঠদান শুরুর পর সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আসন্ন বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষে একটি প্রজেক্ট প্রস্তুত করতে বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের ভবনের তৃতীয় তলায় বিজ্ঞানাগারে যান। মাল্টিপ্লাগের সাহায্যে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে সপ্তম শ্রেণির ১৫-২০শিক্ষার্থী বিজ্ঞানাগারের ভেতরে প্রজেক্ট তৈরির কাজ করছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই মাল্টিপ্লাগে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুনে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বের হয়ে দুই ভবনের দুইটি সিঁড়ি দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিচে নামতে শুরু করেন। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এগিয়ে গিয়ে পানি ঢেলে বিজ্ঞানাগারের আগুন নেভান। মুহূর্তেই বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন।

এদিকে, আতঙ্কিত হয়ে নামতে গিয়ে অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আহতদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার সায়েমুল হুদা অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন। তবে আঘাত বেশি হওয়ায় নয় শিক্ষার্থীকে হাসপাতালের কার্ডিওলজি ও সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

পরে দুপুরে সিভিল সার্জন মো.

নোমান মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার, সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জহিরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং আহত শিক্ষার্থীদের সান্তনা দেন।  

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সহিদুল ইসলাম বলেন, “সামনে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞান মেলার একটি প্রজেক্টে কাজ করছিল সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। সেখানে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে যায়। আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে অনেকে আহত হয়েছে।” 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার ঢালী বলেন, “আমাদের এখানে ২৫ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে সাতজন ভর্তি আছে। কেউ অগ্নিদগ্ধ হয়নি। আমাদের চিকিৎসকরা সবসময় প্রস্তুত।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, “আমরা হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিয়েছি। তারা এখন অনেকটাই ভালো আছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।”

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন আগ ন ব র হ মণব ড় য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইন্দোনেশিয়ায় মসজিদে বিস্ফোরণ, আহত ৫৪

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি স্কুলের মসজিদে বিস্ফোরণে ৫৪ জন আহত হয়েছে। জুমার নামাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে জাকার্তা পোস্ট। 

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, কেলাপা গাদিংয়ের নৌবাহিনীর একটি কম্পাউন্ডের মধ্যে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। ওই সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা শুক্রবারের নামাজে অংশ নিচ্ছিলেন। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ২০ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পরে পুলিশ নিশ্চিত করে যে আহতদের সংখ্যা ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে, তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

জাকার্তা পুলিশের প্রধান মহাপরিদর্শক আসেপ এদি সুহেরি জানান, আহতদের বেশিরভাগই ছাত্র এবং স্কুল কর্মী। তারা কাঁচের টুকরো এবং বিস্ফোরণের চাপে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি  জানান, বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তকারীরা এখনো বিস্ফোরণের সাথে সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্রের প্রমাণ পাননি। 

ডিটাচমেন্ট ৮৮ এর মুখপাত্র মায়ন্দ্রা একা ওয়ারধানা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণের জন্য অভিজাত সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, “আমাদের দল কোনো সন্ত্রাসী উদ্দেশ্য বা নেটওয়ার্ক জড়িত কিনা তা মূল্যায়ন করছে।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় মসজিদে বিস্ফোরণ, আহত ৫৪