ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে হাইকোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী জামিন বহাল রয়েছে। ওই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক রোববার এ আদেশ দেন।

ওই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।

২০২২ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারাধীন আপিলে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ফারাবী। এর ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ জুলাই হাইকোর্ট তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেন। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা এদিন চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

সাইফুদ্দিন খালেদ। ফারাবীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহিনুর রহমান ও ওমর ফারুক।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। তার মানে হাইকোর্ট ফারাবীকে যে জামিন দিয়েছিলেন, তা বহাল। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলায় চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। ফারাবী প্ররোচনা দিয়েছেন—কোনো সাক্ষী তা বলেনি। এমনকি তাঁর সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়নি। ফারাবীর জামিনের পক্ষে এসব যুক্তি তুলে ধরা হয়।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

আরও পড়ুনব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবীর জামিন৩০ জুলাই ২০২৫

এই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে (শফিউর রহমান ফারাবী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা

খাগড়াছড়িতে অবরোধের ডাক দেওয়া সংগঠন ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর প্রতিনিধিত্ব করা ব্যক্তিরা পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। গতকাল সোমবার রাতে রাঙামাটি শহরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তিনি।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা নামে যে গ্রুপটা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আজ কথা বলেছি। ছয়জন এসেছিলেন তাঁরা, ছয়জনই ইউপিডিএফের। কারণ, খাগড়াছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ ছাড়া কোনো কিছু নাই। আমি একে একে তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছি, তাঁরা বলেছেন, আমরা ছয়জনই ইউপিডিএফ।’

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘কোনো অপরাধ নয় এটা, মতাদর্শ থাকতেই পারে। আমি ওদের বলেছিলাম, দেখুন গত কয়েক দিনে আপনারা যা যা করলেন, আমার মনে হয় না এটি ম্যাচিউরড ওয়েতে হয়েছে, ম্যাচিউরিটির কমতি এখানে আছে।’

আরও পড়ুনখাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন২ ঘণ্টা আগে

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, ‘তাঁরা (পাহাড়িরা) সব সময় স্লোগান দেন, সেনা হটাও। এই দুনিয়াতে কিছু বাস্তবতা আছে। যে বাস্তবতার বাইরে আমরা এত সহজে যেতে পারব না। এমনও দিন আসবে, আমরা তাঁদের জোর করে ধরে রাখলেও রাখতে পারব না।’

পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জুম্ম ছাত্র-জনতার হয়ে গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া ছয়জন হলেন—কৃপায়ন ত্রিপুরা, ছদক চাকমা, পিন্টু চাকমা, তোষিতা চাকমা, মানিক চাকমা ও বাগীশ চাকমা।

জানতে চাইলে জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র কৃপায়ন ত্রিপুরা বলেন, তাঁদের ছয়জনকে ইউপিডিএফ ট্যাগ লাগানো উদ্দেশ্যমূলক, অপমানজনক ও ভিত্তিহীন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এই বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে জুম্ম ছাত্র-জনতা আর কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না। জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে। ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক অংগ্য মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছয়জন আমাদের সদস্য বা কর্মী নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ
  • মাছ ধরতে গিয়ে ৫ জেলায় বজ্রপাতে ছয়জনের মৃত্যু, বসতবাড়িতে আগুন
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
  • একবার বন্ধ হয়েছিল, ১৩০ বছর ধরে চলছে মঙ্গলভবনের দুর্গোৎসব
  • জুম্ম ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ছয়জনই ইউপিডিএফের: পার্বত্য উপদেষ্টা