৬ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়
Published: 11th, August 2025 GMT
টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়খরা কাটাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাল রাতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সালমান আগাদের ডিএল মেথডে ৫ উইকেটে হারিয়েছে শাই হোপের দল। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতল ক্যারিবীয়রা। এর আগে দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ৮ বছরের জয়খরা কাটিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেটি ছিল বৃষ্টিবিঘ্নিত। প্রথমে ব্যাট করে ৩৫ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ রান করে পাকিস্তান। বৃষ্টি-বিলম্বের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৫ ওভারে ১৮১। রোস্টন চেজ ও শারফেন রাদারফোর্ডের সৌজন্যে ১০ বল আগেই জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকেরা।
রান তাড়ায় নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১২ রানের মধ্যেই হারিয়ে ফেলেছিল দুই ওপেনার ব্রান্ডন কিং ও এভিন লুইসকে। দুজনকেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান হাসান আলী। তিনে নামা কিসি কার্টিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, আবরার আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন দলীয় ৪৮ রানে।
এরপর রাদারফোর্ডকে নিয়ে ৫৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন অধিনায়ক হোপ। মোহাম্মদ নওয়াজের বলে হোপ স্টাম্পড হন তিনি ((৩৫ বলে ৩২)। নওয়াজ পরের ওভারে ফেরান রাদারফোর্ডকেও (৩৩ বলে ৪৫)। ১০৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাকি পথে আর বিপদে পড়তে দেননি চেজ ও গ্রিভস। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে ৭২ বলে ৭৭ রান যোগ করে ম্যাচের সমাপ্তি টানেন তাঁরা। চেজ ৪৭ বলে ৪৯ এবং গ্রিভস ৩১ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের হয়ে কেউই নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩০ বলে ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হাসান নওয়াজ। হুসাইন তালাত করেন ৩১ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেইডেন সিলস ২৩ রানে নেন ৩ উইকেট। দিন শেষে ম্যাচসেরা অবশ্য চেজই, যিনি ৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংসের আগে একটি উইকেটও নিয়েছেন।
২০১৯ বিশ্বকাপে নটিংহামে ৭ উইকেটে জয়ের পর গতকালের আগপর্যন্ত ৪ বার ওয়ানডেতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিততে পারেনি কোনেটিতেই। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও পাকিস্তান জিতেছিল ৫ উইকেট। তিন ম্যাচ সিরিজে এই মুহূর্তে ১-১ সমতা চলছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৩৫ ওভারে ১৭১/৭ (নওয়াজ ৩৬*, তালাত ৩১, শফিক ২৬; সিলস ৩/২৩)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৩.
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী (ডিএল মেথড)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রোস্টন চেজ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবীর জামিন বহাল
ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে হাইকোর্টের দেওয়া অন্তর্বর্তী জামিন বহাল রয়েছে। ওই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক রোববার এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।
২০২২ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারাধীন আপিলে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ফারাবী। এর ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ জুলাই হাইকোর্ট তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেন। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা এদিন চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুদ্দিন খালেদ। ফারাবীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহিনুর রহমান ও ওমর ফারুক।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। তার মানে হাইকোর্ট ফারাবীকে যে জামিন দিয়েছিলেন, তা বহাল। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলায় চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। ফারাবী প্ররোচনা দিয়েছেন—কোনো সাক্ষী তা বলেনি। এমনকি তাঁর সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়নি। ফারাবীর জামিনের পক্ষে এসব যুক্তি তুলে ধরা হয়।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
আরও পড়ুনব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবীর জামিন৩০ জুলাই ২০২৫এই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে (শফিউর রহমান ফারাবী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।