আবারও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে নেমে গেল বাংলাদেশ
Published: 11th, August 2025 GMT
আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে আবারও অবনমন ঘটেছে বাংলাদেশের। র্যাঙ্কিংয়ের ২০ দলের মধ্যে ৯ থেকে আবারও দশম স্থানে নেমে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। ১০ আগস্ট পর্যন্ত আইসিসির হালনাগাদ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের এমন অবস্থান উঠে এসেছে।
মাঝে দেড় যুগ ধরে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে এক অঙ্কের ঘরে ছিল বাংলাদেশের অবস্থান। ২০০৬ সালের অক্টোবরের পর ২০২৫ সালের মে মাসে আবার দশ নম্বরে নেমে যায় বাংলাদেশ। গত মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ওয়ানডে জেতার পর বাংলাদেশ নয় নম্বরে উঠেছিল।
হালনাগাদ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি অবনতি ঘটেছে পাকিস্তানেরও। ৪ থেকে ৫ নম্বরে নেমে গেছে সালমান আগার দল। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে এ দুটিই পরিবর্তন। ৯ নম্বরে বাংলাদেশের জায়গা নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ৪ নম্বরে পাকিস্তানের জায়গা নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বর্তমানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেটিং পয়েন্ট ৭৮, বাংলাদেশের ৭৭। আর ৪ ও ৫-এ থাকা শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের রেটিং যথাক্রমে ১০৩ ও ১০২। এই মুহূর্তে ১২৪ রেটিং নিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছে ভারত। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের রেটিং ১০৯।
আরও পড়ুন৬ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়৫ ঘণ্টা আগে২০২৭ সালে হতে যাওয়া পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করতে র্যাঙ্কিং গুরুত্বপূর্ণ। ১৪ দলের সেই আসরে স্বাগতিক হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত। বাকি ১২টি জায়গার আটটি পূর্ণ হবে র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে, চারটি বাছাইয়ের মাধ্যমে।
বাংলাদেশকে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করতে হলে ২০২৭ সালের ৩১ মার্চের র্যাঙ্কিংয়ে সেরা আটের মধ্যে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে হিসাব থেকে বাদ যাবে। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ ও জিম্বাবুয়ে ১১ নম্বরে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ দল এখন ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়েও দশ নম্বরে আছে। টেস্টে আছে ৯ নম্বরে।
আরও পড়ুন২০২৭ সালের পর ওয়ানডে ক্রিকেট কমিয়ে নিয়ে আসার সুপারিশ এমসিসির১২ জুলাই ২০২৩.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে রাশিয়া
যুদ্ধ–পরবর্তী গাজা নিরাপদ রাখতে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের জন্য নিজেদের প্রস্তাবে সমর্থন চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন প্রস্তাব দেয় ওয়াশিংটন। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন এক মাস ধরে কাতার, মিসর, সৌদি আরব, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতামত নিয়ে প্রস্তাবটি তৈরি করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে রাশিয়া, চীনসহ কয়েকটি আরব দেশ।
দেশগুলোর উদ্বেগের কারণ, অস্থায়ীভাবে গাজা শাসন করবে, এমন কোনো বোর্ড এখনো গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া গাজা শাসন প্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কোনো অন্তর্বর্তী ভূমিকাও রাখা হয়নি।
চীন ও রাশিয়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দুটি ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন দেশ। তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অধীনে থাকা বোর্ড অব পিস অংশটি পুরোপুরি প্রস্তাব থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তবে গত বুধবার রাতে প্রকাশিত সর্বশেষ খসড়ায়, যুক্তরাষ্ট্র ‘বোর্ড’ গঠনের বিষয়টি বহাল রেখেছে। তবে একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষে কিছু অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি যোগ করেছে।
রাশিয়ার পাল্টা প্রস্তাববার্তা সংস্থা রয়টার্স গত বৃহস্পতিবার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ করে জাতিসংঘে রাশিয়া নিজস্ব খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে। রাশিয়ার জাতিসংঘ মিশন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে নিজেদের প্রস্তাবে বলেছে, ‘আমাদের খসড়ার উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা পরিষদকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও অভিন্ন অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম করা, যাতে টেকসই যুদ্ধবিরতি অর্জন সম্ভব হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব অনুসারে, গাজা ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত দুই বছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক সংস্থা বা বোর্ড অব পিসের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এর নেতৃত্ব দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় ২০ হাজার সদস্যের একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী (আইএসএফ) নিরাপত্তা, জিম্মিদের মুক্তি এবং পুনর্গঠনের কাজ করবে। তবে এ বাহিনীতে কোনো মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে না। তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও মিসরের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে।
► যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে গাজা ২০২৭ সাল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক সংস্থা বা ‘বোর্ড অব পিস’–এর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ► জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর জন্য ধারণা দিতে বলা হয়েছে রাশিয়ার প্রস্তাবে।তবে রাশিয়ার খসড়ায় বোর্ড অব পিস ধারণাটিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এর বদলে জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর জন্য ধারণা দিতে বলা হয়েছে। এতে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির জন্য আরও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের গত সপ্তাহে করা প্রথম খসড়া ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে পাঠায়। তাতে ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত গাজায় নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনীকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলা হয়। এ বাহিনীকে বোর্ড অব পিসের সঙ্গে কাজ করার কথা বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে রাশিয়া, চীন ও আলজেরিয়া।
বিভাজন স্পষ্টজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ খসড়া নিয়ে এখন উত্তেজনার মুখোমুখি। এর মূল কারণ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিষয়টি অনিশ্চয়তায় ঝুলে আছে। নিরাপত্তা পরিষদের রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব গভীর বিভাজনকে স্পষ্ট করে তুলেছে। এদিকে গাজার যুদ্ধবিরতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে মানবিক দুর্ভোগও বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দুই দেশের প্রস্তাবেরই বাস্তব গুরুত্ব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলছে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে গাজায় আবারও শত্রুতা ও দুর্ভোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব নিয়ে ভোট এখনো বাকি। তবে যেকোনো একটি প্রস্তাবে ভেটো হলে বা জাতিসংঘের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের অভাব পরিস্থিতিকে বিপন্ন করতে পারে এবং শান্তি প্রচেষ্টাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।