জামিন চেয়ে বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত কক্ষে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি
Published: 11th, August 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুলের করা আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত কক্ষে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।
ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত ও জামিন চেয়ে সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক ৭ আগস্ট আবেদনটি করেন। বিচারপতি মো.
আদালতে খায়রুল হকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, মনসুরুল হক চৌধুরী, মহসিন রশীদ, জেড আই খান পান্না ও কামরুল হক সিদ্দিকীসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ ও মো. এমরান খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসেন ও জসিম উদ্দিন।
তিনটার পর বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান। এ সময় এক সপ্তাহ সময়ের আরজি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় শুনানিতে অংশ নেবেন।
খায়রুল হকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান বলেন, বিচারপতি খায়রুল হক বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি। একটি হত্যা মামলায় গত ২৪ জুলাই বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়, এক বছর আগের ঘটনা দেখিয়ে চলতি বছরের ৬ জুলাই মামলাটি দায়ের করা হয়। তাকে পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় নিম্ন আদালতে হাজির করা হয়, অথচ বিচার বিভাগ—এ বিষয়ে নীরব। আবেদনের শুনানি গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু করতে পারি, এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রেপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবেন।’ এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ চলতি সপ্তাহে শুনানি না করার জন্য আরজি জানান। এ নিয়ে এক পর্যায়ে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।
আদালত বারবার সবাইকে শান্ত হতে বলেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে আদালত বলেন, আগামী রোববার সকাল ১১টায় আবেদন শুনানির জন্য রাখা হলো। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং আইনজীবীরা আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল এক সপ্তাহ সময় নেওয়ার জন্য। আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি, অ্যাটর্নি জেনারেলের জন্য সময় চেয়েছিলাম। উনারা (খায়রুল হকের পক্ষের আইনজীবী) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের কথা শুনতে চাচ্ছিল না। জোর করে সাবমিশন রাখতে চেয়েছিল। পেছন থেকে অনেকে হই–হুল্লোড় শুরু করে যে কেন শুনানি হবে না।’
আর খায়রুল হকের আইনজীবী এম কে রহমান বলেন, ‘আড়াইটার পরে মোশন (আবেদন) যখন ধরলো তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) তখন সময় চাইলো। আদালত তিনটা পর্যন্ত সময় দেন। তিনটার সময় যখন শুনানির জন্য আমি দাঁড়াই, তখন তাঁরা আবার বললো অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চেয়েছেন। ১০ মিনিট অপেক্ষার পর বললেন যে অ্যাটর্নি জেনারেল নট দিস উইক (চলতি সপ্তাহে নয়) নিতে বলেছেন। আইন কর্মকর্তারা বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের ক্ষোভ (খায়রুল হক অতীতে কী করেছেন সে বিষয়ে) প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী রোববার ১১টার শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ন র ল র স ল আহম ম দ শ ন ন র জন য র ষ ট রপক ষ ব চ রপত আইনজ ব রহম ন র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস