জুলাই আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুলের করা আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত কক্ষে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।

ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত ও জামিন চেয়ে সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক ৭ আগস্ট আবেদনটি করেন। বিচারপতি মো.

জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের আজ সোমবারের কার্যতালিকায় আবেদনটি ১৮ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। বিকেল তিনটার পর খায়রুল হকের পক্ষে আবেদন শুনানি করতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন জানানো হয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। আদালত শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন রেখেছেন।

আদালতে খায়রুল হকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান, মনসুরুল হক চৌধুরী, মহসিন রশীদ, জেড আই খান পান্না ও কামরুল হক সিদ্দিকীসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ ও মো. এমরান খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসেন ও জসিম উদ্দিন।

তিনটার পর বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান। এ সময় এক সপ্তাহ সময়ের আরজি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলায় শুনানিতে অংশ নেবেন।

খায়রুল হকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান বলেন, বিচারপতি খায়রুল হক বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি। একটি হত্যা মামলায় গত ২৪ জুলাই বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়, এক বছর আগের ঘটনা দেখিয়ে চলতি বছরের ৬ জুলাই মামলাটি দায়ের করা হয়। তাকে পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় নিম্ন আদালতে হাজির করা হয়, অথচ বিচার বিভাগ—এ বিষয়ে নীরব। আবেদনের শুনানি গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু করতে পারি, এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রেপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবেন।’ এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ চলতি সপ্তাহে শুনানি না করার জন্য আরজি জানান। এ নিয়ে এক পর্যায়ে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।

আদালত বারবার সবাইকে শান্ত হতে বলেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে আদালত বলেন, আগামী রোববার সকাল ১১টায় আবেদন শুনানির জন্য রাখা হলো। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং আইনজীবীরা আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল এক সপ্তাহ সময় নেওয়ার জন্য। আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি, অ্যাটর্নি জেনারেলের জন্য সময় চেয়েছিলাম। উনারা (খায়রুল হকের পক্ষের আইনজীবী) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের কথা শুনতে চাচ্ছিল না। জোর করে সাবমিশন রাখতে চেয়েছিল। পেছন থেকে অনেকে হই–হুল্লোড় শুরু করে যে কেন শুনানি হবে না।’

আর খায়রুল হকের আইনজীবী এম কে রহমান বলেন, ‘আড়াইটার পরে মোশন (আবেদন) যখন ধরলো তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) তখন সময় চাইলো। আদালত তিনটা পর্যন্ত সময় দেন। তিনটার সময় যখন শুনানির জন্য আমি দাঁড়াই, তখন তাঁরা আবার বললো অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চেয়েছেন। ১০ মিনিট অপেক্ষার পর বললেন যে অ্যাটর্নি জেনারেল নট দিস উইক (চলতি সপ্তাহে নয়) নিতে বলেছেন। আইন কর্মকর্তারা বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের ক্ষোভ (খায়রুল হক অতীতে কী করেছেন সে বিষয়ে) প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী রোববার ১১টার শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ন র ল র স ল আহম ম দ শ ন ন র জন য র ষ ট রপক ষ ব চ রপত আইনজ ব রহম ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম

রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির করা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান আজ শনিবার এই আদেশ দেন।

বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা থেকে হিরো আলমকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাঁকে সিএমএম আদালতের ৯তলার এজলাসে নেওয়া হয়।

হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ২০০ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে হিরো আলমের মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার বাদী রিয়া মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়েছে, তারও জেলে থাকা উচিত।’

এর আগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তাঁর সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসার কথা বলে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। ওই সময়ে হিরো আলমসহ ১০ থেকে ১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তাঁরা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। এতে বাদীর শরীরে জখম হয়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুনরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্ব দেখছে শেখ হাসিনার বিচার
  • হৃদয় থেকে বলছি, শেখ হাসিনা খালাস পেলে খুশি হব: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
  • জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
  • দুই আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ
  • এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে রুল
  • এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত
  • মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
  • ‎আইনজীবী মাসুদ মিয়ারমৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম