জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার পলাতক আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হতে চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তবে তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আবেদন আজ মঙ্গলবার খারিজ করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.

শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আজকে ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমের শুরুতে কথা বলেন আইনজীবী নাজনীন নাহার। তিনি বলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না আজকে এখানে আসতে পারেননি। তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেতে চান। এ কথা ট্রাইব্যুনালকে জানানোর জন্য তাঁকে (নাজনীন) বলেছেন।

তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘শেখ হাসিনার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা ওভার (শেষ)। উনি সিভি দিলে অন্য মামলায় তাঁকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি দেখবেন। তা ছাড়া কাকে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হবে, সেটা ট্রাইব্যুনালের বিষয়।’

ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, ‘তিনি প্রসিডিওর জানেন। যে মামলায় আসামি উপস্থিত নাই, এমন পার্টিকুলার মামলায় আসবেন কেন? তা ছাড়া এ মামলায় যখন ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছিল, তখন তিনি এসে বলতে পারতেন। তখন বিবেচনা করা যেত কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পর মাস্টারকে বললেন, ট্রেনে উঠিয়ে দেন।’

একপর্যায়ে আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, শেখ হাসিনার পক্ষে যাঁকে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁকে সহযোগিতা করতে চান জেড আই খান পান্না।

এই আবেদনও খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে মো. আমির হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১। এ মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন গ্রেপ্তার আছেন। তিনি ইতিমধ্যে অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হয়েছেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ড আই খ ন প ন ন খ র জ কর আইনজ ব অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত

কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু ও উখিয়া—এই তিন উপজেলার সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চল এবং সন্নিকটে অবস্থিত নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ওই বন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে জড়িত ইজারাগ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি এবং বালু উত্তোলনের ফলে বনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত মাসে রিটটি করে।

নয়টি বালুমহাল হচ্ছে চকরিয়ার খুটাখালী মৌজার খুটাখালী-১; রামুর ধোলিরছড়া মৌজার ধলিরছড়া এবং পানিরছড়া খাল; উখিয়ার উখিয়া ঘাট মৌজার বালুখালী-১, উয়ালাপালং এবং রাজাপালং মৌজার দোছড়ি বালুমহাল, পালংখালী মৌজার পালংখালী; রাজাপালং মৌজার হিজলিয়া, ধোয়াংগারচর ও কুমারিয়ারছড়া।

আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।

বেলা জানায়, জেলা প্রশাসক কক্সবাজার জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ২৭টি বালুমহালের তালিকা প্রস্তুত করে ২০২৫-২৬ (১৪৩২ বঙ্গাব্দ) সালের জন্য ইজারার উদ্দেশ্যে গত ১১ মার্চ দরপত্র আহবান করেন। ২৭টি বালুমহালের মধ্যে ওই ৯টি বালুমহাল সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনের মধ্যে এবং কাছাকাছি। তাই সংশ্লিষ্ট বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ক্ষতি বিবেচনা করে ওই বালুমহালগুলো ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এই অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনটি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। অন্যগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চলমান। এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বন রক্ষায় রিটটি করে।

নয়টি বালুমহাল ইজারার জন্য তালিকাভুক্ত করা সংবিধান ও অন্যান্য আইনের পরিপন্থী বলে কেন তা বেআইনি ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান বেলার অন্যতম আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই বালুমহালগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা এবং ইজারাযোগ্য বালুমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সংরক্ষিত–রক্ষিত বনাঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বালু উত্তোলনের ক্ষতি নিরূপণ করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামিন চেয়ে বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত কক্ষে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি
  • পুলিশের অভ্যন্তরীণ তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহি ভেঙে পড়েছিল: হাইকোর্ট
  • শেরপুর চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন স্থগিত 
  • সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সন্নিকটের নয়টি বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত
  • কুমিল্লায় সাবেক বিএনপি নেতাকে আইনজীবী হত্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
  • নিজেকে ড. ইউনূস ও হাসিনার দ্বন্দ্বের বলির পাঠা বলে দাবি করলেন টিউলিপ
  • এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশের বৈধতা নিয়ে রিট খারিজ
  • আইনজীবী আজাদ হত্যা: সাবেক এমপি বাহারের বিরুদ্ধে চার্জশিট
  • চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপত্তি, শুনানি ২৫ আগস্ট