রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ীর আড়তে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে, যা খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি ৭৫ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। 

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি ও মজুত সংকটের কারণে সরবরাহ সীমিত হওয়ায় দাম বাড়ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী সজিব হোসেন বলেন, “আমাদের এখানে গত সপ্তাহে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ছিল, এখন তা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ টাকা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

সবজি, পেঁয়াজ, মাছ ও ডিমের দাম বেড়েছে

পাবনায় পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি বেড়েছে ৬০০ টাকা

বৃষ্টির ক্ষতি, সংরক্ষণে ঘাটতি
পাইকারি ব্যবসায়ী সজিব হোসেন বলেন, “পাবনার সাঁথিয়া ও আশপাশের অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে মাঠে রাখা পেঁয়াজের বড় অংশ নষ্ট হয়েছে। সেখানকার আড়তদাররা জানিয়েছেন, গত বছর তুলনায় এই বছর বৃষ্টির কারণে অনেক চাষি যথাযথ সংরক্ষণ করতে পারেননি, ফলে পেঁয়াজের মজুত কমে গেছে।”

যাত্রাবাড়ীতে কথা হয় পাবনার চাষি রতন পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, “আমার চারশ মণ মজুতের প্রায় অর্ধেক পচে গেছে, সরবরাহ কম হওয়ায় দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে।”

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ হলেও মজুত ও স্থানীয় বাজারজাতকরণে ত্রুটির কারণে তা সঠিকভাবে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছায়নি। ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারী উদ্যোগের অভাব প্রকট হচ্ছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সাম্প্রতিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, বাজারে পেঁয়াজের দাম স্বল্পদিনে ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়ায় ভোক্তাদের দৈনন্দিন ব্যয় বাড়ছে। টিসিবি পেঁয়াজ সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা করলেও আমদানির অনুমতি সীমিত থাকায় বিদেশি পেঁয়াজ দ্রুত বাজারে আসছে না।

রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, “দাম লাফিয়ে ওঠায় প্রতিদিনের রান্নাবান্নায় সমস্যায় পড়ছি। রেস্তোরাঁগুলোও খাদ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ায় কাজ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.

ছাইফুল আলম বলেন, “পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এখন আমদানির অনুমোদন দিলে কৃষকেরা আবার লোকসানে পড়বেন কি না, সেটিও পর্যালোচনা করতে হবে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। এ নিয়ে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “দাম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। আমদানির পথে কোনো বাধা থাকবে না, যেখান থেকে সস্তায় পাওয়া যাবে সেখান থেকেই আমদানি করা হবে। কৃষক ও ভোক্তাদের স্বার্থ আমাদের অগ্রাধিকার।”

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানান, স্বল্পমেয়াদে টিসিবির স্টক থেকে সরবরাহ বাড়ানো হবে এবং আমদানির শর্ত শিথিল করার বিষয়ে কাজ চলছে। দীর্ঘমেয়াদে কৃষকদের আধুনিক স্টোরেজ সুবিধা, উন্নত বীজ ও সার সরবরাহ ও ঝুঁকি বিমা নিশ্চিত করতে হবে। বাজার মনিটরিং জোরদার করে সিন্ডিকেট ও মজুতদারি রোধ করা হবে।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আমদ ন র সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

নিউমার্কেট থেকে ১১০০ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৯

রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার কয়েকটি দোকান ও গুদামে শনিবার অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ১০০টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এসব অস্ত্র বিক্রি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্পে শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক বিগ্রেডের ডেয়ারিং টাইগার্সের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি এই আইটেমগুলো (ধারালো অস্ত্র) কোনো একটা জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে হচ্ছে এবং গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে, এমনকি ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু সময় ফ্রি ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে, হোম ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ঢাকার কোনো একটি জায়গা থেকে এই আইটেমগুলো সন্ত্রাসীদের হাতে দেওয়া হয়।’

নাজিম বলেন,‘আমাদের কাছে গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসীরা স্বীকার করেছে, একটা স্থান থেকে তারা এই সামুরাইগুলো সাপ্লাই পাচ্ছে। এরপর আমরা আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করি। গত কয়েক দিন ধরে আমাদের গোয়েন্দারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে খোঁজ নেয় এবং নিশ্চিত হয় যে, কোন কোন স্থানগুলোতে এই ধারালো অস্ত্রগুলো পাওয়া যাবে। এর ভিত্তিতে আমরা আজ (শনিবার) নিউমার্কেটে গিয়ে তিন থেকে চারটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে এই ধারালো অস্ত্রগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’

সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আজ আমরা এই কাজে জড়িত হিসেবে নয়জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। মোট তিনটি দোকান থেকে মূল এই আইটেমগুলো পাওয়া যায়। আমরা গত কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করেছি, সন্ত্রাসীরা এই ধরনের দেশি অস্ত্রই বেশি ব্যবহার করে। গত তিন-চার মাস ধরে এগুলো বিশাল আকারে মজুত করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের হাতে দেখা যাচ্ছে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শোধনাগার ছাড়াই বড় প্রকল্প
  • চীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার গুণ সয়াবিন কেনার আহ্বান ট্রাম্পের
  • পাবনায় গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে ভেজাল দুধ পাওয়ার ঘটনা পরিকল্পিত: প্রাণ– আরএফএল
  • হঠাৎ কেন বাড়ছে পেঁয়াজের দাম
  • নিলামে ৮৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • একই পে স্কেলের দাবিতে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজারের শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ
  • বিশ্ববাজারে চালের দাম আট বছরে সর্বনিম্ন, দেশের বাজারে বাড়তি
  • নিউমার্কেট থেকে ১১০০ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৯