রাশিয়া থেকে শুধু ‘তেল আমদানির’ কারণেই কি ভারতের ওপর ‘রুষ্ট’ ট্রাম্প
Published: 13th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়ার প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান অনেক মানুষকে অবাক করেছিল।
জাতিসংঘে বেশ কয়েকবারই যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সমর্থন করেছে, তা-ও আবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিষয়ে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য হোয়াইট হাউসে গেলে তাঁদের মধ্যে তর্কাতর্কি বেঁধে যায়।
সে সময় ট্রাম্প অভিযোগ তোলেন, জেলেনস্কি শান্তি চান না। এ-ও বলেন, জেলেনস্কি যদি সমঝোতা করতে রাজি না হন, তবে যুক্তরাষ্ট্র আর এ বিষয়ে থাকবে না। পাশাপাশি ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জিততে পারবে না, এমনও দাবি করেছিলেন ট্রাম্প।
এসব বিষয় মাথায় রেখে বিশেষজ্ঞদের মনে হয়েছিল, ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব নিয়ে ট্রাম্পের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু গত পাঁচ মাসে পরিস্থিতি বদলেছে এবং সেটা বেশ দ্রুতই।
জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-রাশিয়ার অংশীদারত্বকে ভালো চোখে দেখছেন না ট্রাম্প। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে ভারতের ওপর ‘রুষ্ট’ও হয়েছেন তিনি। বাণিজ্য শুল্ক দ্বিগুণ করে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।
এ নিয়ে যেমন ভারতীয় গণমাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে, তেমন রুশ গণমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা দেখা গেছে। প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্প কি এভাবে চাপ তৈরি করে রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে রাখতে পারবে?
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘তাস’ ৯ আগস্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সামনে এই একই প্রশ্ন রেখেছিল। সেই সময় রুশ নিরাপত্তা পরিষদের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য অ্যান্ড্রু সুশেন্তসভ জানিয়েছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প চাপ তৈরি করলেও ভারত মার্কিন বিদেশ নীতি অনুসরণ করবে না। তাঁর মতে, ভারতের ক্ষেত্রে এ ধরনের মার্কিন নীতি আগেও ব্যর্থ হয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের এ চাপ বেশি দিন টিকবে না।
কারণ কি শুধুই ‘তেল’প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে পরোক্ষভাবে জিইয়ে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন। এ কারণ দেখিয়েই বাড়তি বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেন তিনি।
সুশেন্তসভ বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ যে (ট্রাম্পের) বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেখা করার আগে তিনি (ট্রাম্প) ভারতের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।’
জনসংখ্যার নিরিখে ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় দেশ। দেশটি দ্রুত উন্নতি করছে। চীনের সঙ্গে সংঘাতের কথা মাথায় রেখে ভারতকে নিজেদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিস্থিতিতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) চায়, ভারত তাদের নেতৃত্ব মেনে নিক ও নিজেদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির তাগিদ থেকে সরে আসুক।‘ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেছে, এটা কিন্তু আসল কারণ নয়। ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এভাবে চাপ দেওয়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে’, বলেন সুশেন্তসভ।
বিষয়টাকে ব্যাখ্যা করেছেন সুশেন্তসভ। তাঁর মতে, ‘জনসংখ্যার নিরিখে ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় দেশ। ভারত দ্রুত উন্নতি করছে। চীনের সঙ্গে সংঘাতের কথা মাথায় রেখে ভারতকে নিজেদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।’
‘এ পরিস্থিতিতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) চায়, ভারত তাদের নেতৃত্ব মেনে নিক ও নিজেদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির তাগিদ থেকে সরে আসুক। কিন্তু যে কৌশলের হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাইছে, তা আদৌ লাভজনক হবে না। তাই ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এ চাপও বেশি দিন থাকবে না’, বলেন সুশেন্তসভ।
বাণিজ্যকে ঢাল করে আগেও যুক্তরাষ্ট্র চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে বলে উল্লেখ করেছেন সুশেন্তসভ। তিনি বলেন, ‘চাপ প্রয়োগ করা মার্কিন কৌশলের একটা অংশ। যখন এ কৌশল ব্যর্থ হয়, তখন প্রেসিডেন্ট নিজেই নিজের জয় ঘোষণা করেন এবং চুপচাপ আগের সিদ্ধান্তগুলো বদলে ফেলেন।’
যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যকে ঢাল করে বিষয়টাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যায়, যা উসকানির সমান। কিন্তু সেখানে সমঝোতার জন্য খুবই কম জায়গা থাকে।
চাপ প্রয়োগ করা মার্কিন কৌশলের একটা অংশ। যখন এ কৌশল ব্যর্থ হয়, তখন প্রেসিডেন্ট নিজেই নিজের জয় ঘোষণা করেন এবং চুপচাপ আগের সিদ্ধান্তগুলো বদলে ফেলেন।-অ্যান্ড্রু সুশেন্তসভ, রুশ নিরাপত্তা পরিষদের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্যউদাহরণস্বরূপ সুশেন্তসভ ব্রাজিলের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলের ক্ষেত্রে ট্রাম্প তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ শুরু করেন। সে দেশের বিরোধীদের সমর্থন করছেন ট্রাম্প। এতে প্রতিরোধ বাড়তে থাকে। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে প্রভাবিত দেশগুলো এক সময় প্রতিক্রিয়ার পথও খুঁজতে শুরু করে।’
মার্কিন চাপের মধ্যেই রাশিয়া সফরে অজিত দোভাল
মার্কিন চাপের মুখে পড়েও এখনো রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে দেখা যায়নি ভারতকে। ৬ আগস্ট ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ৭ আগস্ট ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল রাশিয়া পৌঁছান। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।
আরও পড়ুন‘ট্রাম্প-মোদি ব্রোমান্স’ সত্ত্বেও ভারত–মার্কিন সম্পর্ক তলানিতে কেন, সামনে কী০৭ আগস্ট ২০২৫হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মেলাতে এগিয়ে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র শ ল ক আর প ইউক র ন র পর স থ ত আগস ট ভ রতক
এছাড়াও পড়ুন:
নিভৃতচারী কৃষকের আর্তনাদ কি আমরা শুনছি
কৃষি এবং কৃষকই এ দেশের প্রাণ—এই ধ্রুব সত্যটি নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু বেদনাদায়ক বাস্তবতা হলো, মধ্যস্বত্বভোগী ও কপট ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষকের স্বার্থ বরাবরই উপেক্ষিত। নীতিনির্ধারক ও মূলধারার রাজনীতিবিদদের নীরবতা এবং কৃষকের সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি জনগুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যকে ‘ট্রল’ করার মতো দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা আমাদের জাতীয় সংবেদনশীলতার অভাবকেই প্রকটভাবে তুলে ধরে।
করোনাকালীন ভয়াবহ সংকটে কৃষি যেভাবে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করে অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে, তা আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। অথচ এত কমিশন গঠিত হলেও, কৃষি কমিশন গঠন করা হয়নি। এর মূল কারণ সম্ভবত নিভৃতে কাজ করে যাওয়া কৃষক বা কৃষিশ্রমিকের মূল্য এই সমাজে অনেক সস্তা।
বর্তমানে কৃষি খাত নিয়ে যত আলোচনা—তা সবই যেন নিরাপদ কৃষি, বাণিজ্যিক কৃষি, কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ, ভ্যালু চেইন ও উৎপাদন বৃদ্ধিকেন্দ্রিক। প্রধান স্টেকহোল্ডার কৃষক ও তাঁর জীবন-জীবিকার স্বার্থ প্রায়শই থেকে যাচ্ছে অন্তরালে। অন্যান্য পেশাজীবীর মতো কৃষকের কোনো সক্রিয় সংগঠন নেই। চাষাবাদ ফেলে ঢাকা শহরে দাবি আদায়ের আন্দোলনে নামাও তাঁদের পক্ষে অসম্ভব, কারণ তাতে তাঁদের পেটে ভাত জুটবে না।
অথচ কৃষকেরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয়, শারীরিকভাবেও চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ক্যানসারে আক্রান্ত পুরুষ রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পেশায় কৃষক! মাস্ক, গ্লাভস বা রাবারের জুতা চোখে না দেখা, ছেঁড়া গামছা মুখে পেঁচিয়ে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করা ভূমিহীন মানুষটা আমাদের কাছে হয়তো ‘কৃষিশ্রমিক’, ‘কৃষক’ নন; কিন্তু খাদ্য উৎপাদনচক্রে তাঁর অবদান সবচেয়ে মৌলিক এবং তাঁর স্বাস্থ্যঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি।
সমাজের চোখে ‘কৃষক’ বলতে যখন বিঘার পর বিঘা জমির মালিক, শিক্ষিত বাণিজ্যিক উদ্যোক্তাদের বোঝানো হচ্ছে, তখন প্রান্তিক, নিরক্ষর মানুষগুলোর অস্তিত্ব ও সংগ্রাম প্রায় অস্বীকৃত থেকে যাচ্ছে।
আবার কৃষক ও কৃষির সমস্যা শুধু অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত নয়, এর শিকড় প্রোথিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাতেও। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বাণিজ্যিক কৃষিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আমাদের শিক্ষায় কৃষির নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো প্রায় উপেক্ষিত।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃষির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা বা গবেষণা নেই। কীভাবে নারীর হাত দিয়ে কৃষির সূচনা হয়েছিল—ফসলের বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বপন ও পরিচর্যার প্রথম ধাপগুলোয় নারীর যে ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল, সেই গুরুত্বপূর্ণ নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক দিকগুলো পড়ানো হয় না বললেই চলে।
বাংলার কৃষিকাজে লোকায়ত জ্ঞানের অন্যতম ধারক খনার বচন প্রাসঙ্গিক হলেও আবহাওয়া, ফসল রোপণের সময়, মাটির গুণাগুণ–সম্পর্কিত হাজার বছরের পরীক্ষিত প্রথাগত প্রজ্ঞা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে স্থান পায় না। এর বদলে শুধু স্থান পায় আধুনিক প্রযুক্তি ও বাণিজ্যিকীকরণের তত্ত্ব।
ধান লাগানো থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ, বীজ সংরক্ষণ, ফসল মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের মতো অনেক ধাপে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণ বাংলাদেশের কৃষিতে অপরিহার্য অনুষঙ্গ। বিভিন্ন গবেষণায় এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে। অথচ এই বিশাল শ্রমশক্তি ও তাঁদের সমস্যা নিয়ে মূলধারার একাডেমিক আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যদিও সস্তা শ্রম আর অধিকার বঞ্চনার মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কৃষিতে নারীর উপস্থিতি বাড়ছে।
কৃষকের নিবিড় জীবন ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রায়শই অন্ধকারে থাকছে। গান গাইতে গাইতে ধান কাটা, ধান লাগানো বা নবান্ন উৎসব—এসব প্রথা ও রীতিনীতি কেবল সংস্কৃতি নয়, কৃষকের জীবনের আনন্দ, দুঃখ ও শ্রমের প্রকাশ। পাঠ্যক্রমে এসবের অনুপস্থিতি কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে নাগরিকসচেতনতা বৃদ্ধির পথে এক বড় বাধা।
কৃষির এই বহুমুখী সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু যান্ত্রিকীকরণ আর উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিলেই চলবে না। প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী নীতিগত পরিবর্তন।
যা করা যেতে পারে:
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ: সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসল কেনার সরকারি উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত ও মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য কমাতে শক্তিশালী ‘ভ্যালু চেইন’ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ: প্রান্তিক কৃষক ও কৃষিশ্রমিকদের জন্য বিনা মূল্যে মানসম্পন্ন কীটনাশকপ্রতিরোধী মাস্ক, গ্লাভস এবং সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ করা।
শিক্ষায় কৃষির সাংস্কৃতিক পাঠ অন্তর্ভুক্তিকরণ: উচ্চশিক্ষা ও স্কুল পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে কৃষির উৎপত্তি, নৃতত্ত্ব, নারীর ভূমিকা, লোকায়ত জ্ঞান (যেমন খনার বচন) এবং কৃষকের জীবন ও সংস্কৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কৃষিশ্রমিকের স্বীকৃতি: নারীর কৃষিভিত্তিক শ্রমের স্বীকৃতি প্রদান করা। কৃষিশ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনী ও স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় আলাদা বরাদ্দ রাখা।
সর্বোপরি নীতিগত সদিচ্ছা এবং কৃষকের ন্যায্য অধিকার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিই পারে আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার মূল ভিত্তি—নিভৃতচারী কৃষককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও স্বীকৃতি দিতে। কৃষি ও কৃষক সম্পর্কে প্রত্যেক নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধি এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
মো. জুবায়ের ইবনে কামাল অফিসার, জনতা ব্যাংক পিএলসি। প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়