প্রাণনাশের আশঙ্কায় রাহুল গান্ধী, আদালতে অভিযোগ
Published: 13th, August 2025 GMT
ভারতীয় কংগ্রেসের সদস্য ও লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন জানিয়ে আদালতে অভিযোগ করেছেন। বিজেপির দুই সংসদ সদস্য তাকে ‘দাদির (ইন্দিরা গান্ধী) মতো পরিণতি’ হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর এনডিটিভির।
বুধবার (১৩ আগস্ট) পুনের একটি আদালতকে রাহুল জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়গুলো উত্থাপন এবং ২০২২ সালের ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালে হিন্দুত্ববাদী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর সম্পর্কে তার মন্তব্যের কারণে এই হুমকি এসেছে।
মহারাষ্ট্রের নাসিকের এক আদালত গত ২৪ জুলাই হিন্দুত্ববাদী এ মতাদর্শীর বিরুদ্ধে মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীকে জামিন দেন।
আরো পড়ুন:
ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, কখনোই ভুলবে না: শাহবাজ শরিফ
কেবিসির মঞ্চে সোফিয়া-ব্যোমিকারা, শুরু বিতর্ক
মামলাটি দায়ের করেছিলেন নাসিকের বাসিন্দা ও এক অলাভজনক সংস্থার পরিচালক দেবেন্দ্র ভূটাডা। তিনি দাবি করেছেন, হিঙ্গোলিতে এক সংবাদ সম্মেলন ও যাত্রার সময় দেওয়া বক্তৃতায় রাহুল গান্ধী সাভারকরের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।
রাহুলের আইনজীবী মিলিন্দ পাওয়ার জানান, কংগ্রেস আদালতে আলাদা একটি আবেদন জমা দিয়েছে যাতে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে বিচার প্রক্রিয়ায় একত্রে দেখা হয়।
তিনি বলেন, গত ১৫ দিন ধরে রাহুল গান্ধী ‘ভোট চুরির’ প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন।সংসদে হিন্দুত্ব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়েছে। এই সময়কালেই দুই বিজেপি সাংসদ রাহুলকে হুমকি দিয়েছেন। তার ভবিষ্যৎ ইন্দিরা গান্ধীর মতো হবে বলার পাশাপাশি রাহুলকে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীর অভিযোগ, যারা এই হুমকি দিয়েছেন তারা সাভারকরের অনুসারী এবং তাদের বংশপরিচয় ও রাজনৈতিক অবস্থান মিলিয়ে দেখলে রাহুল গান্ধীর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিষয়টি আদালতের কার্যবিবরণীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছে এবং পরবর্তী শুনানি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস