ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি
Published: 14th, August 2025 GMT
জার্মানি ইসরায়েলের কাছে একটি উন্নতমানের সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে। যদিও জার্মান সরকার মাত্র কয়েকদিন আগেই ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। খবর আনাদোলুর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবমেরিনটির নির্মাতা কোম্পানি থাইসেনক্রুপ গত শুক্রবার বার্ষিক সাধারণ সভায় এই পরিকল্পিত রপ্তানি নিশ্চিত করেছে।
গত ৮ আগস্ট জার্মানি ঘোষণা করেছিল যে, গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানি করা হবে না। তবে সাবমেরিন সরবরাহ অনুমোদন জার্মানির ঐতিহাসিক মিত্রতা এবং সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের দ্বৈত অবস্থান তুলে ধরে।
আরো পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল
নেতানিয়াহু পথ হারিয়ে ফেলেছেন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
বুধবার (১৩ আগস্ট) বার্লিনে সরকারি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড্যানিয়েল গ্রেভ এই নির্দিষ্ট ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করেননি।
ড্যানিয়েল গ্রেভ সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এখানে ভিন্ন ভিন্ন সব ইস্যুতে মন্তব্য করতে পারছি না.
ইসরায়েলের জন্য ষষ্ঠ ডলফিন-ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস ড্রাকন সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে জার্মানি। গত সপ্তাহের শুরুতে সাবমেরিনটি বাল্টিক সাগরের রুগেন দ্বীপে সমুদ্র পরীক্ষায় দেখা গেছে।
সাবমেরিন ক্রয়ের চুক্তি ২০১২ সালে স্বাক্ষরিত হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ফেডারেল সিকিউরিটি কাউন্সিল সরবরাহের জন্য সবুজ সংকেত দেয়। তবে জার্মান অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফেডারেল অফিস ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট কন্ট্রোল থেকে প্রয়োজনীয় রপ্তানি লাইসেন্স স্থগিত ছিল। সাবমেরিনটির মোট ক্রয়মূল্য প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৫৮৫.৮ মিলিয়ন ডলার), যার মধ্যে জার্মান সরকারের অবদান ছিল ১৩৫ মিলিয়ন ইউরো।
সাবমেরিন চুক্তি ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি বিচার বিভাগীয় তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। একটি তদন্ত কমিশন জার্মান অস্ত্র প্রস্তুতকারক থাইসেনক্রুপ মেরিন সিস্টেমসের সঙ্গে চুক্তিগুলো খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও পুলিশের সামনে সাক্ষ্য দিয়েছেন। জার্মান পাবলিক ব্রডকাস্টার নর্ডডয়েচার রুন্ডফাঙ্ক সম্প্রতি বিস্তৃত তদন্ত প্রকাশ করেছে, যেখানে টিকেএমএসের চুক্তি এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাৎক্ষণিক স্বার্থের দ্বন্দ্ব তুলে ধরা হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ন সরবর হ সরবর হ র স বম র ন ইসর য় ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।