পাবনার বেড়ায় সেপটিক ট্যাংকের শাটার খোলার সময় আটকা পড়ে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়া দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ‎

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে বেড়া পৌরসভার দক্ষিণপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে বলে জানান বেড়া মডেল থানার ওসি অলিউর রহমান। 

মারা যাওয়া শ্রমিকরা হলেন- পৌর সদরের হাতিগাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে সজিবুল ইসলাম (২৫) এবং আব্দুল গফুরের ছেলে মোস্তাকিন হোসেন (৩০)। অসুস্থ শ্রমিকরা হলেন- বৃশালিখা গ্রামের নূর মোহাম্মদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (২৬) ও হাতিগাড়া মহল্লার আকরাম শেখের ছেলে সম্রাট শেখ (২৫)।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ 

চা শ্রমিকদের ক্লান্তি দূর করে ‘পাতিচখা’

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণপাড়া এলাকার তাহের উদ্দিনের বাড়িতে প্রায় ১০-১২ দিন আগে একটি সেপটিক ট্যাংকের ছাদ ঢালাই হয়। আজ বৃহস্পতিবার সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে ভেতরে নেমে ঢালাইয়ের বাঁশ ও খুঁটি খুলছিলেন শ্রমিকরা। এসময় তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে যান।

তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আটকা পড়াদের  উদ্ধার করে বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অসুস্থ দুইজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

‎বেড়া মডেল থানার ওসি অলিউর রহমান বলেন, ‍“আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ধারণা করছি, দীর্ঘ সময় সেপটিক ট্যাংকের মুখ বন্ধ থাকার কারণে ভেতরে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারেনি। এ কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।”

তিনি আরো বলেন, “মরদেহ দুইটি ফায়ার সার্ভিসের লোকজন পরিবারকে বুঝিয়ে দিয়েছে। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইলিশ চুরি: দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এবং একজন মাছ ব্যবসায়ী জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা পরিবারের সদস্যরা।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চর মহিউদ্দিন এলাকার ওয়াপদা নতুন স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। 

আরো পড়ুন:

মন্দির থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি চুরি, ওসি প্রত্যাহারসহ ৭ পুলিশ বরখাস্ত

বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়ে নিহত

ফেইসবুক থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা যায়, দুই শিশুকে হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের হাতে দুইটি ইলিশ মাছ। 

ভুক্তভোগীদের পরিবার জানায়, গত রবিবার রাতে স্থানীয় জেলে জয়নাল খার নির্দেশে নতুন স্লুইসগেটে নৌকায় করে নদীতে মাছ ধরতে যায় দুই শিশু। স্লুইস ঘাটে তারা নৌকায় রাত্রিযাপন করে। পরদিন সকালে ইমরান ও কাইয়ুম প্যাদা দুই শিশুকে ধরে নতুন স্লুইস বাজারে নিয়ে যান। সেখানে ইমরান বয়াতির গদির ১০ পিস ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগ তুলে দুই শিশুকে লাঠি দিয়ে পেটান ইউপি সদস্য হাসান সরদার। পরে হাত-পা বেঁধে রাস্তায় ফেলে সূর্যের দিকে তাক করিয়ে রাখা হয় তাদের। পরে হাতে ইলিশ মাছ দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিশু বলে, “রাতে আমরা নৌকায় ঘুমায় ছিলাম। সকালে আমাদের নৌকা থেকে ধরে নিয়ে যায় বাজারে। সেখানে হাত-পা বেঁধে আমাকে মারধর করেছে হাসান সরদার। পরে রাস্তায় বসিয়ে হাতে মাছ দিয়ে ছবি তুলছে।”

ভুক্তভোগী শিশুর নানা বলেন, “সোমবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি নাতি ও আরেক শিশুকে হাত-পা বেঁধে রোদে শুইয়ে রেখেছে। তাদের হাতে মাছ দিয়ে ছবি তুলছে। প্রতিবাদ করলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেন ইউপি সদস্য হাসান সরদার। পরে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা দাবি করে। আমি গরিব মানুষ বলে অনুরোধ করলে আমাকে ৫ হাজার টাকা দিতে বলে। আমি দশদিন সময় চাইলে তারা সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে আমাদের ছেড়ে দেয়। বাসায় এসে দেখি নাতির দুই পা ফুলে কালো হয়ে গেছে। এভাবে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “আমার নাতি ছোট থেকে আমার কাছে বড় হয়েছে। তার দুই বছর বয়সের সময় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে অনেক কষ্ট করে তাকে বড় করছি। এ ঘটনার বিচার চাইতে ও সাংবাদিকদের জানানোর কারণে অভিযুক্ত হাসান সরদার ও তার সহযোগীরা আমাদের গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।”

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হাসান সরদার বলেন, “ওদের কাউকে মারধর করা হয়নি। ইমরানের গদির ১০ পিচ ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগে দুইজনকে ধরে আনলে আমিও ছিলাম সেখানে। শিশুর স্বজনদের মাছের টাকা দিয়ে দিতে বলি। তাদের কাছে টাকা ছিলো না তাই সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখা হয়েছে। দুইজনকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করি।” 

মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি বলেন, “রাতে গদি থেকে মাছ চুরি হয়। এজন্য দুইজনকে ধরে আনি। তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে পারে এ কারণে হাত-পা বেঁধে রাখছিলাম। চোর তাই গদির মাছ হাতে দিয়ে ছবি তোলা হয়েছে।” 

তাদের পুলিশে না দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “এরকম চুরি তারা আরো করছে। স্থানীয়ভাবে সালিশ করা হয়েছে সবসময়।” 

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইলিশ চুরি: দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ