চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাছবোঝাই একটি ছোট ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দুই তরুণ হলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের আবদুস শুক্কুরের ছেলে মো. রাকিব (২১) ও একই ইউনিয়নের শামসুল আলমের ছেলে মো.

জিহাদ (২০)। এ ঘটনার পর তাঁদের বন্ধুরা ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন। ট্রাকচালকের নাম আমির উদ্দিন (২৪)। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী এলাকার ইস্কান্দার মিয়ার ছেলে। আটক সহকারী সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া এলাকার আবু তাহেরের ছেলে জয়নাল আবেদীন (২০)।

পুলিশ জানায়, রাকিব, জিহাদসহ ছয় বন্ধু তিনটি মোটরসাইকেলে করে কক্সবাজার থেকে রাঙামাটির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল লোহাগাড়া এলাকায় ছোট একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেলটিতে থাকা রাকিব ও জিহাদ নিহত হন। দুর্ঘটনার পর ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চালক। তবে রাকিব ও জিহাদের চার বন্ধু বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর এলাকা থেকে ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারীকে আটক করেন। পরে তাঁদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জানতে চাইল দোহাজারী হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক জুপিটার আলী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত দুই তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ট্রাকচালক ও তাঁর সহকারী থানা হেফাজতে রয়েছেন। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাইরের’ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখলেন স্থানীয় চালকেরা, ধস্তাধস্তির মধ্যেই নবজাতকের মৃত্যু

শরীয়তপুরে একটি রোগী বহন করা অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা যাওয়ার পথে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে। এ কারণে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা এক নবজাতক মারা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া নবজাতক ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদার ও রুমা বেগম দম্পতির সন্তান। গতকাল দুপুরে শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পরই শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

শিশুর স্বজনেরা জানান, গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁরা ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে চৌরঙ্গী মোড়ে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ান তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেন। স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার কারণ দেখিয়ে তিনি চালককে মারধর করেন ও চাবি নিয়ে নেন। আরও কয়েকজন স্থানীয় চালক এ ঘটনায় অংশ নেন। দীর্ঘক্ষণ তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তির মধ্যে চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতক মারা যায়।

শিশুটির নানি সেফালী বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অল্প খরচে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। কিন্তু স্থানীয় আরেক চালক বাধা দেয়। তারা দাবি করে, বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হবে। আমার নাতি চিকিৎসা পায়নি, মারা গেছে। সন্তান জন্মের পর আমার মেয়ে অচেতন হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফিরলে কীভাবে খবরটি দেব?’

ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্সের চালক মোশারফ মিয়া বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে শরীয়তপুরে এসেছিলাম। ফেরার পথে হাসপাতালের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। শিশুর স্বজনেরা আমার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। রওনা হওয়ার পর সবুজ বাধা দেয়, আমাকে মারধর করে চাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়।’

ঘটনার পর সবুজ দেওয়ান ও তাঁর সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শরীয়তপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক ও চালক সমিতির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘চৌরঙ্গীতে অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেওয়ার কথা শুনে তাদের বলেছিলাম রোগীসহ ছেড়ে দিতে। কিন্তু তারা শোনেনি। এই কাজটি সঠিক হয়নি।’

শিশু বিশেষজ্ঞ খাজা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিকেলে যখন নবজাতককে দেখেছিলাম, তখনই বেশ কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপরাধ।’

জানতে চাইলে সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ