মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য, দুপুরে ভাঙচুর
Published: 15th, August 2025 GMT
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের স্মরণে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত মধ্য রাতে প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তবে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে সেই প্রতিকৃতিটি ভেঙে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে কয়েকজন প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন প্রতিকৃতির সামনে পুষ্পমাল্য রেখে যান। তাদের মধ্যে মো.
দুপুরের দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা প্রতিকৃতিটি ভেঙে দেয়। কয়েকজন যুবককে হাতুড়ি দিয়ে প্রতিকৃতি ভাঙতে দেখা যায়। তবে কে বা কারা ভাঙায় অংশ নিয়েছে তার জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
শেখ মুজিব জাতির জনক নন, তবে তার ত্যাগ স্বীকার করি: নাহিদ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বিকেল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা শাখার সাবেক আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইন ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, কলারোয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ভাঙার সময় প্রশাসনের লোকজন বাধা সৃষ্টি করেছেন।
আরাফাত লিখেছেন, ‘‘কলারোয়ায় মুজিবের প্রতিকৃতি ভাঙতে ইউএনওর বাধা। বাহ বাহ ইউএনও বাহ। ডিসি মোস্তাক আহমেদ কি আওয়ামী পুষতেছে?’’ তিনি আরো লেখেন, ‘‘ইউএনও কীভাবে মুজিব রেখে অফিস করত? এই জুলাই বিপ্লবের পরেও তিনি কীভাবে বলেন, ভাঙার দরকার নেই, এখানে আমরা অন্য কিছু বানাব।”’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জহুরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘‘আজ আমি ছুটিতে আছি, কলারোয়ায় নেই। একজন ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ে আমাকে ফোন দিলে আমি তাকে বলেছিলাম স্থাপনাটি ভেঙো না, আমরা ওখানে কলারোয়া উপজেলার ম্যাপ লাগিয়ে দেব। প্রতিকৃতি ভাঙার ব্যাপারে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়নি।’’
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘গভীর রাতে দুইজন ব্যক্তি এসেছিল। একজন ফুল দিয়েছে। আরেকজন মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিল। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম জ ব র রহম ন কল র য় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া