সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানি পেছাল
Published: 17th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের করা আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে।
অবকাশ শেষে আদালত খোলার এক সপ্তাহ পর শুনানির সময় রাখার জন্য আজ রোববার আরজি জানান সাবেক প্রধান বিচারপতির আইনজীবী। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো.
সুপ্রিম কোর্টের বর্ষপঞ্জি অনুসারে, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে অবকাশ শুরু হচ্ছে। অবকাশ শেষে ১৯ অক্টোবর থেকে নিয়মিত আদালত বসবেন।
আরও পড়ুনসাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিন রিমান্ডে৩০ জুলাই ২০২৫এর আগে ৭ আগস্ট ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত ও জামিন চেয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনটি ১১ আগস্ট আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আরজি জানায়। আপত্তি জানান খায়রুল হকের আইনজীবীরা।
এ নিয়ে সেদিন আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে আদালতকক্ষে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। আদালত আবেদন শুনানির জন্য আজ ১৭ আগস্ট দিন রাখেন। আজ আদালতের কার্যতালিকায় আবেদনটি ১৫ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে আজ খায়রুল হকের পক্ষে আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, তাঁরা সময় চাচ্ছেন। ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন (অবকাশের এক সপ্তাহ পর) চাচ্ছেন।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এর আগে সময় চাওয়া নিয়ে আদালতে সিনক্রিয়েট হয়েছে। এখন আবেদনকারীপক্ষ সময় চাইলে আপত্তি থাকবে না। পরে আদালত সময় চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুনজামিন চেয়ে বিচারপতি খায়রুল হকের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালতকক্ষে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি১১ আগস্ট ২০২৫এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল আহম্মেদ ও এমরান খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদ আলম, মোহাম্মদ ছফওয়ান, উজ্জ্বল হোসেন ও জসিম উদ্দিন।
পরে আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনকারীর আইনজীবীদের ব্যক্তিগত অসুবিধা থাকায় সময় চাওয়া হয়েছে।
গত ২৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি মামলায়ও খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী ভূঁইয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আরও পড়ুনসাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক রিমান্ড শেষে কারাগারে০৭ আগস্ট ২০২৫এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেয়। ওই রায়ের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।
আরও পড়ুনহত্যা মামলায় আদালতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক২৪ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র আইনজ ব র ল হক র সময় র আগস ট সময় চ অবক শ
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস