চাঁদে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৪ নভোচারী পাঠাচ্ছে নাসা
Published: 24th, September 2025 GMT
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চাঁদে মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠানোর সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছে। সংস্থাটি আগে বলেছিল, এপ্রিলের শেষ নাগাদ অভিযানটি পরিচালনা করা হবে। তবে এখন তারা অভিযানটি আরও আগেই পরিচালনা করতে চাইছে।
এই অভিযানের নাম আর্টেমিস ২। এটি হবে নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত দ্বিতীয় অভিযান। এ অভিযানের লক্ষ্য হলো, নভোচারীদের চন্দ্রপৃষ্ঠে নামানো এবং ধীরে ধীরে সেখানে দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
কোনো দেশই ৫০ বছর ধরে চাঁদে মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠায়নি। নাসা এবার চাঁদে চার নভোচারী পাঠাবে। গতকাল মঙ্গলবার নাসা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই ১০ দিনের এ অভিযান পরিচালনা করা হতে পারে।
নাসার কার্যনির্বাহী উপসহকারী প্রশাসক লেকিশা হকিন্স বলেন, এটি মানুষের মহাকাশ অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে হকিন্স আরও বলেন, ‘উৎক্ষেপণের সময়সীমা আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে শুরু হতে পারে। তবে আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, নিরাপত্তাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
২০২২ সালের নভেম্বরে চালানো আর্টেমিসের প্রথম অভিযানটি ২৫ দিন স্থায়ী হয়েছিল। এই অভিযানের অংশ হিসেবে একটি মহাকাশযান চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে।আর্টেমিস উৎক্ষেপণ–সংক্রান্ত পরিচালক চার্লি ব্ল্যাকওয়েল–টমসন ব্যাখ্যা করে বলেন, এ অভিযানের জন্য প্রধান উৎক্ষেপণ যান স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস) প্রায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
শুধু নভোচারীদের বহনের জন্য নির্মিত মহাকাশ যান ওরিয়নকে এসএলএসের সঙ্গে সংযুক্ত করা ও এর কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করার কাজ বাকি আছে।
আরও পড়ুন৫০ বছর পর চাঁদে অবতরণ করল মার্কিন মহাকাশযান২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪২০২২ সালের নভেম্বরে চালানো আর্টেমিসের প্রথম অভিযানটি ২৫ দিন স্থায়ী হয়েছিল। এই অভিযানের অংশ হিসেবে একটি মহাকাশযান চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে।
অভিযানটি সামগ্রিকভাবে সফল হয়েছিল। তবে মহাকাশযানটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় হিটশিল্ড (উষ্ণতারোধক ঢাল) নিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। পরে সেগুলো সমাধান করা হয়েছে।
আর্টেমিস ২–এর আওতায় চার নভোচারী ১০ দিনের জন্য চাঁদে অভিযান চালিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। এই চার নভোচারী হলেন নাসার রিড ওয়াইজম্যান, ভিক্টর গ্লোভার, ক্রিস্টিনা কচ ও কানাডীয় মহাকাশ সংস্থার জেরেমি হ্যানসেন। তাঁরা চাঁদে অবতরণ করবেন না, তবে তাঁরা পৃথিবীর নিকটবর্তী কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবেন।আর্টেমিস ২–এর আওতায় চার নভোচারী ১০ দিনের জন্য চাঁদে অভিযান চালিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। এই চার নভোচারী হলেন নাসার রিড ওয়াইজম্যান, ভিক্টর গ্লোভার, ক্রিস্টিনা কচ ও কানাডীয় মহাকাশ সংস্থার জেরেমি হ্যানসেন। তাঁরা চাঁদে অবতরণ করবেন না, তবে তাঁরা পৃথিবীর নিকটবর্তী কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবেন। ১৯৭২ সালের পর এ ধরনের অভিযান এটাই প্রথম।
আরও পড়ুনচাঁদের দুই পৃষ্ঠের চিত্র আলাদা, অভ্যন্তরও সমান নয় ১৬ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র জন য আর ট ম স ণ করব ন পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঘুমে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার, ১৮ মিনিট চক্কর খেল উড়োজাহাজ
ফ্রান্সের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ভূমধ্যসাগরের দ্বীপ করসিকার আকাশে চক্কর খাচ্ছে, অবতরণের জন্য সেটি অনুমতির অপেক্ষায়। বারবার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন পাইলট, কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া নেই। বিমানবন্দরের একমাত্র এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার যে তখন বেঘোরে ঘুমাচ্ছেন! তাঁকে ঘুম থেকে তুলতে অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী ও পুলিশ পর্যন্ত ডাকতে হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে। রাজধানী প্যারিস থেকে উড়াল দেওয়া এয়ার করসিকার ‘এয়ারবাস এ৩২০’ যাচ্ছিল নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরটি করসিকা দ্বীপের রাজধানী আজাক্সিওতে।
রেডিও বার্তা দিয়ে ১৮ মিনিট আকাশে চক্কর খাওয়ার পরও যখন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন পাইলট উড়োজাহাজটি নিয়ে ফরাসি দ্বীপটির আরেক প্রান্তের শহর বাস্তিয়ার দিকে প্রায় রওনা হন।
স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকাকে পাইলট বলেন, অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা টাওয়ার থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে পুলিশ ডাকেন। তিনি বলেন, ‘কয়েক দশকের পেশাজীবনে আমি কখনো এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়িনি। আমাদের যাত্রা খুব সংক্ষিপ্ত ছিল। তাই সেখানে আতঙ্কিত হওয়ার সুযোগ ছিল না। সবাই শান্ত ছিলেন। যাত্রীরা এটিকে মজার ঘটনা হিসেবে নিয়েছিলেন।’
সেই রাতে ফ্লাইটটি আগেই এক ঘণ্টা দেরি করেছিল। পরে অবতরণের জন্য পাইলটরা কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলে বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড স্টাফরা কন্ট্রোল টাওয়ারের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে তাঁদের বেশ দেরি হয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত গ্রাউন্ড স্টাফরা যখন কন্ট্রোল টাওয়ারে পৌঁছান, দেখেন কন্ট্রোলার তাঁর ডেস্কে ঘুমাচ্ছেন। তাঁরা তাঁকে ঘুম থেকে তোলেন। জেগে ওঠা কন্ট্রোলার এরপর বিমানবন্দরে রানওয়ের বাতি জ্বালিয়ে দেন এবং উড়োজাহাজটিকে অবতরণের অনুমতি দেন। ভাগ্য সুপ্রসন্ন, কোনো অসুবিধা ছাড়াই উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করে।
কী কারণে ট্রাফিক কন্ট্রোলার বেঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন, তা খুঁজে বের করতে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এর আগে ফ্রান্সের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা কাজের পরিবেশ ও মজুরি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রচণ্ড চাপে তাঁরা মানসিক অবসাদে ভোগেন ও ভীষণ ক্লান্ত থাকেন।