৪০ বছর ধরে পটুয়াখালীর বাড়িটি ‘বকের বাড়ি’
Published: 25th, September 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নুরাইন গ্রামে আছে ‘খানবাড়ি’। বাড়িটি এখন স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘বকের বাড়ি’ নামে। কারণ, টানা ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বাড়ির আঙিনা ও গাছগাছালিতে বাস করছে হাজারো সাদা বক। শুধু বকই নয়, কয়েক বছর ধরে তাদের সঙ্গে এসেছে পানকৌড়িও। এ দুই প্রজাতির পাখি প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে এখানে দল বেঁধে আসে, বাসা বানায়, ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায়—সব মিলিয়ে বাড়িটি এখন তাদের অভয়ারণ্য।
গাছের ডালে শত শত বাসাসম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, খানবাড়ির রেইনট্রি, গাব ও আমগাছের ডালে শত শত বাসা। সাদা বকগুলোকে ছোট ছোট ডাল সংগ্রহ করে বাসা বানাতে দেখা গেল। কোনো কোনো বাসায় ডিমে তা দিচ্ছে মা-পাখি, আবার কোথাও সদ্য ফোটা ছানাকে খাওয়াচ্ছে মা–পাখি। গাছের ডালে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা ধবধবে সাদা বক আর কালো পানকৌড়ির দৃশ্য পথচারীদের চোখে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে।
আরও পড়ুনবিরল প্রজাতির ছোট পাখির সন্ধান২০ অক্টোবর ২০২৪খানবাড়ির বাসিন্দা মাওলানা মো.
আরেক বাসিন্দা রাশেদ আজমি বলেন, তাঁর জন্মেরও আগে থেকে পাখিদের বসবাস চলছে। টিনের ছাউনি নষ্ট হওয়ায় ঘরসংলগ্ন কিছু গাছ কাটতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। ফলে পাখির সংখ্যা কিছুটা কমেছে। তাঁর দাদা আবদুল মজিদ খান তাঁদের পাখির সুরক্ষার বিষয়টি শিখিয়েছিলেন। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, প্রতিবছর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বক ও পানকৌড়ি বাসা বাঁধে। প্রথম দফায় ডিম ফোটার পর ছানারা উড়তে শেখে। পরে শ্রাবণে আবার নতুন বাসা তৈরি হয় এবং দ্বিতীয় দফায় বাচ্চা ফোটে। আশ্বিন-কার্তিক নাগাদ সব পাখি একসঙ্গে চলে যায়। তবে প্রথম দফার বড় হয়ে ওঠা ছানারা তখনো থেকে যায়।
খানবাড়ির রেইনট্রি, গাব ও আমগাছের ডালে শত শত বাসা। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নুরাইন গ্রামেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।
স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেমবর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।
ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণরিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।
মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগবর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।
বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।
আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স