গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ওয়াশিংটনের প্রতি বাড়তে থাকা ক্ষোভ খোলাখুলি প্রকাশ পেল এ সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে। ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে বড় ধরনের চাপে ফেলল।

দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ দ্রুত বন্ধের উদ্যোগ নেবেন। কিন্তু এখন ফিলিস্তিনের আবদ্ধ ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সেনারা আক্রমণ বাড়াচ্ছে, অথচ তিনি আঞ্চলিক ঘনিষ্ঠতম মিত্রকে রাশ টানতে বলতে চাইছেন না। তাঁকে ক্রমেই একজন নিছক দর্শক বলে মনে হচ্ছে।

এ মাসেই কাতারে হামাস নেতাদের ওপর হানা দিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে চমকে দিয়েছিলেন। হামলাটির কারণে ট্রাম্প প্রশাসনের গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির সর্বশেষ উদ্যোগটি প্রায় ভেস্তে যায়।

এরপর ইসরায়েল গাজা নগরীতে স্থল অভিযান শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র নির্বিবাদে তা মেনে নেয়, যদিও বিশ্ব গাজায় মানবিক সংকটকে ধিক্কার দিচ্ছে।

আর চলতি সপ্তাহে নাটকীয় কূটনৈতিক মোড় ঘুরে জাতিসংঘের অধিবেশনের আগে এবং চলাকালে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের এক দল মিত্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ট্রাম্প অবশ্য এই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে এই স্বীকৃতি আদতে হামাসের জন্য একটি উপহার।

ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ ফেলো ব্রায়ান কাটুলিস বলেন, ‘ট্রাম্প অঞ্চলটিতে (মধ্যপ্রাচ্যে) কোনো বড় অগ্রগতি বা সাফল্য অর্জন করতে পারেননি, বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ক্ষেত্রে। পরিস্থিতি ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ের তুলনায় এখন আরও খারাপ হয়েছে।’

ট্রাম্প অঞ্চলটিতে (মধ্যপ্রাচ্যে) কোনো বড় অগ্রগতি বা সাফল্য অর্জন করতে পারেননি, বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ক্ষেত্রে। পরিস্থিতি ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার সময়ের তুলনায় এখন আরও খারাপ হয়েছে।ব্রায়ান কাটুলিস, জ্যেষ্ঠ ফেলো, ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট

প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই সংঘাত বন্ধ হওয়া এখন অনেক দূরের কথা। আপাতদৃষ্টে ট্রাম্প গৌণ হয়ে গেছেন। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে তাঁর উচ্চারিত একটি দাবি আরও বেশি সন্দেহের মুখে পড়েছে। ট্রাম্প বারবার বলে আসছেন, তাঁর মতো দক্ষ মধ্যস্থতাকারী শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের দাবি রাখে।

গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ট্রাম্প যদি সত্যিই নোবেল শান্তি পুরস্কার জিততে চান, তবে তাঁকে গাজার যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। নিউইয়র্ক থেকে ফ্রান্সের বিএফএম টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ‘ইসরায়েলকে যুদ্ধ শেষ করার জন্য চাপ দেওয়ার ক্ষমতা শুধু ট্রাম্পেরই আছে। তিনি এ কাজটা আমাদের চেয়ে ভালো পারবেন। কারণ, গাজায় যুদ্ধ টিকিয়ে রাখার অস্ত্র আমরা জোগাই না।’

কিছু বিশ্লেষকের মতে, নেতানিয়াহুকে চাপ দিতে ট্রাম্পের অনীহা আছে। কারণ, তিনি বোঝেন যে এ যুদ্ধ অনেক বেশি জটিল ও কঠিন।

আরেক দল বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ অনীহা আসলে পরোক্ষে মেনে নেওয়া যে নেতানিয়াহু নিজের ও ইসরায়েলের স্বার্থের বিবেচনা থেকেই কাজ করবেন। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট সেটা বদলাতে তেমন কিছু করতে পারবেন না।

এমন জল্পনাও আছে যে অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের দিকে সেভাবে মন দিচ্ছেন না। রয়টার্স হোয়াইট হাউসের কাছে মন্তব্য চেয়েছিল। তাৎক্ষণিক সাড়া মেলেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল য ক তর

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ